কলকাতা: বিধাননগরে (Bidhannagar) ফ্ল্যাট কিনতে গেলে ভালভাবে খোঁজখবর করে তারপরই কেনার পরামর্শ দিচ্ছে পুরনিগম। কারণ, যে ফ্ল্যাটটি কিনবেন, সেই ফ্ল্যাট যদি ‘ঘষা প্ল্যান’-এ তৈরি হয়, তাহলে বিড়ম্বনায় পড়তে হতে পারে ক্রেতাকে। ব্যাঙ্ক লোন পাওয়া কিংবা ফ্ল্যাটে বিদ্য়ুৎ পরিষেবা পাওয়ার ক্ষেত্রেও সমস্যা হতে পারে। কারণ, পুরনিগম ইতিমধ্যেই এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠিয়েছে স্থানীয় ব্যাঙ্কের শাখা ও বিদ্যুৎ দফতরকে। বিধাননগর পুর এলাকায় ২৪টি ব্যাঙ্কের শাখা এবং ইলেকট্রিক সাপ্লাই কর্পোরেশনকে নোটিস পাঠিয়েছেন পুরনিগমের কমিশনার। যে সকল নির্মাণ ঘষা প্ল্যানে তৈরি, সেগুলির ক্ষেত্রে মিউটিশেন সার্টিফিকেটও পেতে সমস্যা হবে।
২০১৫ সালে রাজারহাট গোপালপুর পুরসভা এবং বিধাননগর পুরসভা মিলে বিধাননগর পুরনিগম হয়। এর আগে থেকে যে সকল বিল্ডিং নকশা, বৈধ প্ল্যান বেরিয়েছিল, সেইসব প্ল্যানের উপর বিল্ডিং তৈরি হচ্ছে। এই প্ল্যানকেই বলা হচ্ছে ঘষা প্ল্যান। বেশ কিছু প্রমোটার এই সকল সুবিধা নিয়ে বিভিন্ন সিল জাল করে তৈরি করছেন বাড়ি বা ফ্ল্যাট। যারা কিনছেন, সেই বাড়ি পাচ্ছে না মিউটেশন সিসি।
বাড়ি কিনলেও পুরনিগম সার্টিফিকেট দিচ্ছে না। ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট, মিউটেশন না থাকলে বাড়ির মালিকানা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। ফলে সেই বাড়ি বিক্রি করতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হয় বাড়ির কর্তাকে। কারণ, এইসব বাড়িগুলির অস্তিত্ব থাকলেও, অস্তিত্বসংক্রান্ত বৈধ নথি নেই পুরনিগমের কাছে। ফলে এগুলির ক্ষেত্রে পুরনিগমে কোনও করও জমা পড়ে না।
এই ‘ঘষা প্ল্যান’-এ রাজারহাট গোপালপুর পুরসভার সে সময়ের চেয়ারম্যান তাপস চট্টোপাধ্যায়ের সই জাল করারও অভিযোগ উঠছে। যদিও এ বিষয়ে প্রাক্তন চেয়ারম্যান তাপস চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমি বিষয়টা খতিয়ে দেখছি। প্রয়োজনীয় তথ্য হাতে পেলেই আইনি পথে হাঁটব।”
এই ধরনের অবৈধ নির্মাণ রুখতে চলতি মাসের ১৩ তারিখ বেশ কিছু ব্যাঙ্ক ও বিদ্যুৎ দফতরকে নোটিস দেয় পুরনিগম। এ প্রসঙ্গে বিধাননগরের মেয়র পারিষদ দেবরাজ চক্রবর্তী বলেন, “পুরনিগমের তরফে সমস্ত নির্মাণের জন্য স্থানীয় ব্যাঙ্কের শাখায় চিঠি দেওয়া হয়েছে। যাতে ঋণের আবেদন মঞ্জুর করার আগে পুরনিগমের থেকে বৈধতার বিষয়টি নিশ্চিত করে নেয়। তারপর যেন ঋণ দেয়। একইসঙ্গে বিদ্যুৎ দফতরকেও বলা হয়েছে। আমরা চাই এটা বন্ধ হোক।”