কলকাতা: রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে (President Draupadi Murmu) নিয়ে অখিল গিরির মন্তব্যকে হাতিয়ার করে এবার বিধানসভাতেও (West Bengal Assembly) প্রতিবাদে সামিল হওয়ার সিদ্ধান্ত নিল বিজেপি পরিষদীয় দল। অখিল গিরির উপস্থিতিতেই প্রতিবাদ-বিক্ষোভ করতে চায় তারা। সূত্রের খবর, মন্ত্রী ও বিধায়ক পদ থেকে সরানোর পাশাপাশি অখিলকে গ্রেফতারের দাবিতেও কক্ষের অন্দরে সরব হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারীরা।
সোমবার দুপুর ৩টেয় বিধানসভায় বিজেপি পরিষদীয় দলের জরুরি বৈঠক হবে। সেখানেই অখিল গিরির বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা। একইসঙ্গে আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনে বিধানসভার কৌশল নিয়ে রূপরেখা স্থির হবে বলেও সূত্রের খবর। সোমবার বেলা ৩টে নাগাদ এই বৈঠক হতে চলেছে।
নন্দীগ্রামে দলীয় এক বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে শুক্রবার রাজ্যের মন্ত্রী তথা রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরিকে বলতে শোনা গিয়েছে, “বলে দেখতে ভাল নয়। কী রূপসী! কী দেখতে ভাল! আমরা রূপের বিচার করি না। তোমার রাষ্ট্রপতির চেয়ারকে আমরা সম্মান করি। কিন্তু তোমার রাষ্ট্রপতি কেমন দেখতে বাবা?” একজন মন্ত্রীর এমন মন্তব্যে তীব্র নিন্দার ঝড় ওঠে। বিজেপি রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করে। অখিল গিরিকে পদ থেকে সরানোর দাবি তুলে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী চিঠিও লেখেন রাজ্যপাল লা গণেশনকে।
এ নিয়ে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও সরব। কেন্দ্রীয় রেল ও বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী দর্শনা জারদোস হাওড়ায় এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি বলেন, “মহিলাদের সম্মান করা উচিত। প্রধানমন্ত্রী মহিলাদের ক্ষমতায়নের জন্য কাজ করছেন এবং মহিলাদের জন্য একাধিক প্রকল্প শুরু করেছেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় অনেক মহিলাদের জায়গা দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতির মতো একজন আদিবাসী মহিলাকে সম্মান জানানো আমাদের কর্তব্য।”
যদিও এদিন তৃণমূলের তরফে সাংবাদিক সম্মেলন করেন কুণাল ঘোষ, জয়প্রকাশ মজুমদার। কুণাল ঘোষ বলেন, এ রাজ্যের সরকার সবসময় নারীকে সম্মান জানায়। তৃণমূল দেশের একমাত্র রাজনৈতিক দল যাদের সংগঠনে সর্বস্তরে মহিলাদের এগিয়ে রাখা হয়।
কুণাল বলেন, “দেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি সম্পর্কে অখিল গিরি যে মন্তব্য করেছেন তা তৃণমূল অনুমোদন করে না, নিন্দা করে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল দলের সর্বস্তরে মহিলাদের অধিকার, মহিলাদের সম্মান এবং মহিলা শক্তির ক্ষমতায়নে বিশ্বাসী। তাই তৃণমূলের বিভিন্ন স্তরে বিভিন্ন পদে আসীন সবথেকে বেশি মহিলা। দেশে এটা নজির।” তবে বিজেপি যে অখিল গিরির এই বক্তব্যকে সামনে রেখে বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে উষ্ণতা ছড়াবে তা নিশ্চিত বলে মনে করছেন রাজনীতির কারবারিরা। আগামী ১৮ নভেম্বর থেকে শুরু হতে চলেছে বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশন।