কলকাতা: ফের আদালতে প্রশ্নের মুখে প্রাথমিকের নিয়োগ। ২০১৬ সালের পর ২০২০-র নিয়োগ নিয়েও কড়া হাইকোর্ট। প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ২০২০ সালে পর্ষদের আজব মূল্যায়নের তত্ত্ব সামনে উঠে এলো। মেধাতালিকায় নম্বর বণ্টনে ‘আজব’ মূল্যায়নে কথা উঠে এল শুনানিপর্বে। ২০১৪ সালে যে টেট হয়, ২০২০ সালে তার নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হয়। সে বছরের টেটের উত্তরপত্র মূল্যায়নের জন্য আলাদা করে বেসরকারি সংস্থাকে বরাত দেওয়া হয়েছিল বলে তদন্তে উঠে এসেছে তথ্য। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, যেখানে পর্ষদ সরকারি বোর্ড। সেখানে আলাদা করে বেসরকারি সংস্থার হস্তক্ষেপের কেন প্রয়োজন পড়ল? সূত্রের খবর, এর আগে কখনও এরকম বেসরকারি সংস্থা উত্তরপত্রের মূল্যায়ন করেনি।
বেশ কিছু মামলাকারীর অভিযোগ, ২০১৬ সালের টেট নিয়ে প্রশ্ন ওঠে, সেই সময় ২০১৪ সালের তালিকাও প্রকাশ করতে বলা হয় কোর্টের তরফে। সেই তালিকা প্রকাশের পর বেশ কিছু পরীক্ষার্থী এসে অভিযোগ করে, যে ধরনের নম্বর দেওয়া উচিত, তাতে গোলমাল রয়েছে। যেমন ইন্টারভিউয়ের ফুল মার্কস যদি ৫ হয়, কেউ সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছেন কেউ ৮, কেউ ১০। এই অতিরিক্ত নম্বর প্রাপ্তির কারণ জানতে চাওয়া হয়। বৃহস্পতিবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসেই এই মামলায় শুনানি হয়।
অতিরিক্ত নম্বর যাঁরা পেয়েছেন, দেখা যাচ্ছে, এক্সর্টা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিতে কোনও নম্বর নেই। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় কার্যত মজার সুরেই এদিন এজলাসে বলেন, এই কলামটাই বা ফাঁকা কেন, এটাও তো পূরণ করে দিলেই হতো। একইসঙ্গে পর্ষদকে বিচারপতি এদিন প্রশ্ন করেন, ‘এরা কি বোমা বাঁধতে জানে না’।
প্রসঙ্গত, যে সময়ের টেট নিয়ে এই মামলা, সেই সময় পর্ষদ সভাপতি ছিলেন মানিক ভট্টাচার্য। অ্যাডহক কমিটি তৈরি হয় সে সময়, যার প্রেসিডেন্ট ছিলেন মানিকই। কীভাবে গোটা ঘটনা তা এদিন জানতে চায় আদালত। সিবিআইয়ের এসআইটি (CBI-SIT) এই তদন্ত করবে। একইসঙ্গে ইডিকেও তদন্তভার দেওয়া হয়েছে। সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যারা এর সঙ্গে যুক্ত, তাদের প্রত্যেককে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করতে হবে। ২০ এপ্রিলের মধ্যে এই সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দিতে হবে আদালতে।