কলকাতা: চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রায় ১৯ কোটি টাকা হাতানোর অভিযোগে ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন কুন্তল ঘোষ (Kuntal Ghosh)। পরে তদন্তে ইডি জানতে পারে এই টাকার অঙ্কটা ১৯ কোটি নয়, ৩০ কোটি। তদন্ত যত এগোচ্ছে, রোজই নতুন নতুন তথ্য সামনে আসছে হুগলি জেলার এই তৃণমূল যুব নেতা সম্পর্কে। ইডি সূত্রে খবর, এবার তদন্তকারীদের নজরে কুন্তলের ভুয়ো সার্টিফিকেট তৈরির বিষয়টি। নজরে রয়েছে কুন্তলের ডায়েরিও। যেখানে গানের প্যারোডি লেখা। ভুয়ো সার্টিফিকেট তৈরিতে কুন্তলের এক সহযোগীও ছিলেন বলে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছে। তিনি আবার কম্পিউটারে তুখড়। কুন্তলের মিউজিক ভিডিয়ো ও শর্টফিল্মের জন্য তৈরি প্রোডাকশন হাউজেরও তিনি পার্টনার বলেই জানা গিয়েছে। ইডি সূত্রে খবর, ভুয়ো ওয়েবসাইট ও ভুয়ো সার্টিফিকেট দিয়ে প্রচুর টাকা তুলেছেন কুন্তল। এখানেই শেষ নয়। সূত্রের দাবি, ইডি ইতিমধ্যেই জানতে পেরেছে, প্রাথমিকের টেটের চাকরিকে হাতিয়ার করে একের পর এক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা তোলেন যুব নেতা। বিকাশ ভবনে এক আধিকারিকের সঙ্গে সখ্যতার জোরেই ভুয়ো ইন্টারভিউও করার ব্যবস্থা করেছেন বলেও ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে।
তদন্তকারীরা প্রথম থেকেই কার্যত নিশ্চিত, এত টাকা নয়ছয়ের অভিযোগে কোনও একজন জড়িত থাকতে পারেন না। ধাপে ধাপে এগিয়েছে এই ‘দুর্নীতি’র শিকড়। আর তাতে ভূমিকা নিয়েছে একাধিকজন। আরও একটি বিষয় তদন্তকারীদের নজরে, তা হল কুন্তল ঘোষের ডায়েরি। সেখানে একাধিক গানের কলি লেখা। গানের কলি বললে ভুল হবে। গানের প্যারোডি লেখা বলে ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে। এর আগে এই ডায়েরিতেই সাঙ্কেতিক চিহ্ন পাওয়া গিয়েছিল। এবার সাঙ্কেতিক চিহ্ন, টাকা পয়সার হিসাবের পাশাপাশি স্বরচিত গানও রয়েছে ওই ডায়েরিতে।
সূত্রের খবর, এই ঘটনায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা কার্যত তাজ্জব। কুন্তলের কালো-ধূসর সে ডায়েরির পাতায় পাতায় রহস্য মূর্ত। প্রথমে জানা গিয়েছিল, এই ডায়েরিতে চাকরি সংক্রান্ত হিসাবনিকাশ। কখন কার কাছ থেকে কত টাকা আসছে, কোন প্রার্থীর কাছ থেকে কত টাকা নেওয়া হয়েছিল, সেসব ইডি জানতে পারে বলে সূত্রের খবর। পরবর্তীকালে জানা যায়, তাতে কিছু সাঙ্কেতিক অক্ষর রয়েছে। এখন জানা যাচ্ছে, ডায়েরির পাতায় গানের প্যারোডিও লেখা। এই প্যারোডির সঙ্গে নিয়োগ দুর্নীতির কোনও সম্পর্ক রয়েছে কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে এই প্যারোডি যে মোটে তদন্তকারীরা হালকাভাবে নিচ্ছেন না তা বলাই যায়। কারণ, কুন্তল ঘোষ সম্পর্কে যা এখনও অবধি জানা গিয়েছে, তাতে তিনি গানও লিখতেন এবং তা মূলত প্রচারমূলক গান। অনেকের প্যারোডি গান।