কলকাতা: গত কয়েকদিনে ‘গাঁজা কেসে’ ফাঁসানোর একাধিক অভিযোগ সামনে এসেছে। বর্ধমানের আউশগ্রাম থেকে বীরভূমের নানুর, বিভিন্ন সময় ভুয়ো গাঁজা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ এসেছে। এবার এরকমই এক ভুয়ো মামলার প্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হল জনস্বার্থ মামলা। ওই ব্যক্তির অভিযোগ, তাঁর বিরুদ্ধে ১৭টি গাঁজা কেস দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় রাজ্যের কাছ থেকে মুখবন্ধ খামে জবাব তলব করল প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ।
নার্কোটিক ড্রাগস অ্যান্ড সাইকোট্রপিক সাবস্ট্যান্সেস অ্যাক্ট বা এনডিপিএস (NDPS)-এ যে মামলাগুলি হয়, তাতে প্রায়শই অভিযোগ ওঠে, মিথ্যা ফাঁসানোর। মূলত প্রতিহিংসার কারণে এই ধরনের মামলা দেওয়ার অভিযোগ তোলেন অভিযুক্তরা। মামলাকারীর বক্তব্য, তিনি নিজে তথ্য জানার আইনকে সামনে রেখে বিভিন্ন বিষয় জানতে চান। সে কারণে তাঁকে ১৭ বার গাঁজা কেস দেওয়া হয়েছে। তাঁর আবেদনের প্রেক্ষিতে এবার রাজ্যের বক্তব্য জানতে চাওয়া হল। এদিন রাজ্যের তরফে বলা হয়, ‘আমরা দেখাতে পারি এত কেজি গাঁজা উদ্ধার হয়েছে, সেখানে এই ধরনের কেসগুলো দেওয়া হয়’।
যদিও আদালত এই যুক্তিকে খুব একটা গ্রহণযোগ্য মনে করছে না। বরং তারা জানতে চায় এ সংক্রান্ত বিস্তারিত কী তথ্য রয়েছে। ডিভিশন বেঞ্চ জানতে চায়, ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত গোটা হাওড়া জেলাজুড়ে কতজনকে গাঁজা মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের থেকে কত গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে এবং কত গাঁজা থানার মালখানায় মজুত রয়েছে। রাজ্যকে এই সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য জানাতে হবে আদালতকে।
সৌরভ মণ্ডল নামে এক ব্যক্তি এই জনস্বার্থ মামলাটি দায়ের করেন। ১৭টি মিথ্যা গাঁজা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার অভিযোগে তিনি জনস্বার্থ মামলা করেন হাইকোর্টে। এদিন সেই মামলায় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যকে এই নির্দেশ দেয়। ২৮ নভেম্বরের মধ্যে মুখবন্ধ খামে এই রিপোর্ট জমা দিতে হবে আদালতে। মামলাকারীর আইনজীবীর দাবি, তাঁর মক্কেল আরটিআই অ্যাক্টিভিস্ট। তিনি গাঁজা নিয়ে তথ্য জানতে চেয়ে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজখবর করছিলেন। তাই তাঁকে মিথ্যা মামলায় একের পর এক ফাঁসানো হয়েছে।