
কলকাতা: বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ’র (Soumitra Khan) ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বৃহস্পতিবার সংসদে সরব হন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় (Sougata Roy)। সৌমিত্রর বিবাহবিচ্ছেদকে টেনে এনে কার্যত ‘নজিরবিহীন’ভাবে এদিন আক্রমণ করেন সৌগত। সংসদে এমন ঘটনা এর আগে কবে ঘটেছে, মনে করতে পারছেন না পোড়খাওয়া সংসদ-সদস্যরাও। এমন ‘ব্যক্তি আক্রমণ’-এর জন্য সৌগতকে সতর্কও করেন অধ্যক্ষ ওম বিড়লা। তবে সৌগত রায়ের এই মন্তব্যে কোনও ভুল খুঁজে পাননি সৌমিত্রের প্রাক্তন স্ত্রী সুজাতা মণ্ডল (Sujata Mondal)। টিভি নাইন বাংলা ডিজিটালকে সুজাতার জবাব, “আমাদের সাংসদ সৌগত রায় আজ লোকসভায় যা বলেছেন, তা একেবারেই সত্যি। বিষ্ণুপুরের সাংসদকে আমি একজন খারাপ চরিত্রের সাংসদ বলেই মনে করি। তিনি আমাকে যে পরিমাণ নির্যাতন করেছেন, আমি বাধ্য হয়ে প্রাণ বাঁচাতে রাত সাড়ে ৩টেয় ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসি। ওনার নারী সংসর্গ আমি জানি। আমি থাকতেও যা তা করে বেরিয়েছেন। এখনও করেন। সদ্য আমাদের ডিভোর্সের কাগজে সই হয়েছে। অথচ ২ বছরের বেশি সময় ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘ডাইভোর্সড’ লিখে রেখেছেন। এতেই বোঝা যায় ওনার মানসিকতা।”
বৃহস্পতিবার লোকসভায় বাজেট প্রস্তাবের উপর বক্তব্য রাখছিলেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। সেই সময় পিছন থেকে বিভিন্ন প্রশ্ন তুলতে শোনা যায় সৌমিত্র খাঁকে। এরপরই লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লাকে উদ্দেশ্য করে সৌগত রায় বলেন, ‘স্যর, ইসকা তালাক হো গ্যায়া হ্যায়। ইসকি বিবি ভাগ গই। ইসলিয়ে ইসকা দিমাগ খরাব হো গ্যায়া হ্যায়। ইসকা তার কাট গ্যায়া হ্যায়।’
সংসদে এমন কথাও বলা যায়? প্রশ্ন শুনেই সুজাতা মণ্ডল বলেন, “আমরা লোকসভাকে গণতন্ত্রের সর্বোচ্চ পীঠস্থান মানি। হতে পারে বৃহস্পতিবারের ঘটনা নজিরবিহীন। কিন্তু এমন সাংসদও তো নেই। যতজন সাংসদ আছেন লোকসভায়, যে দলেরই হোন, তাঁরা নিজেরা মাঠে নেমে জিতেছেন। একমাত্র সাংসদ সৌমিত্র খাঁ, যিনি নিজের যোগ্যতায় জেতেননি। এই জয়ে তাঁর কোনও ভূমিকাই নেই। বিষ্ণুপুর লোকসভার ৭টা বিধানসভার মধ্যে একমাত্র খণ্ডঘোষে তিনি ঢুকতে পেরেছিলেন। অথচ ওখানেই তিনি গোহারান হেরেছেন। ৩০ হাজার ৮৯০ ভোটে হেরে জমানত জব্দ হয়। বাকি ৬টা বিধানসভায় উনি একটা দিনও ঢুকতে পারেননি। নির্বাসিত ছিলেন।”
সুজাতার কথায়, সেই সময় তাঁর পুরনো দল বিজেপির কিছু লোকজন নিয়ে তিনি দিনরাত এক করে মাঠে নেমে প্রচার করেছেন। পা রক্তাক্ত হয়েছে, তবু স্ত্রীর কর্তব্যে অবিচল থেকেছেন। সুজাতা বলেন, “নিজের যোগ্যতায় না জেতা সাংসদের অন্যকে বড় বড় কথা বলাটা মানায় না। আমার কাছে ওনার বিরুদ্ধে সব প্রমাণ আছে। উনি দিল্লিতে কী করেন তাও জানি। আমি আমার ডিভোর্সের জন্য এক পয়সা ওনার থেকে নিইনি। তাই সৌগতদা কোনও ভুল বলেননি। উনি এটাই বলতে চেয়েছেন, যিনি বাড়ির বউকে মর্যাদা দিতে পারেন না, তাঁর মুখে কোনও কথাই শোভা পায় না।” যদিও সুজাতার বক্তব্য নিয়ে সৌমিত্র খাঁয়ের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। পেলে তা এই প্রতিবেদনে যুক্ত করা হবে। তবে এর আগেও সুজাতার অভিযোগ প্রসঙ্গে যতবারই বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের সাংসদের কাছে প্রতিক্রিয়া চাওয়া হয়েছে, তিনি কিছু বলতে চাননি।