Tapas Mondal: ‘আমি কাউকে আড়াল করছি না’, গ্রেফতার হওয়ার পর বললেন মানিকঘনিষ্ঠ তাপস

Tapas Mondal: ডিএলএড কলেজগুলির সংগঠনের সভাপতি ছিলেন এই তাপস মণ্ডল। কুন্তল গ্রেফতার হওয়ার পর তাপস মণ্ডল দাবি করেছিলেন, চাকরি দেওয়ার নামে ১৯ কোটি টাকা নেন কুন্তল।

Tapas Mondal: 'আমি কাউকে আড়াল করছি না', গ্রেফতার হওয়ার পর বললেন মানিকঘনিষ্ঠ তাপস
তাপস মণ্ডল। (ফাইল ছবি)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 19, 2023 | 6:29 PM

কলকাতা: ‘আমি কাউকে আড়াল করছি না’, সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর প্রথম প্রতিক্রিয়া তাপস মণ্ডলের। রবিবার প্রাথমিক টেট দুর্নীতি মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করে সিবিআই। গ্রেফতার করা হয় নীলাদ্রি ঘোষকেও। তাপস মণ্ডল, নীলাদ্রি ঘোষের কথা প্রথম থেকেই বলে এসেছেন কুন্তল ঘোষ। কুন্তল প্রশ্নও তুলেছিলেন, তিনি যদি এই ঘটনায় অপরাধী হন, তাহলে তাপস-নীলাদ্রিরা কেন ছাড় পাচ্ছেন? সূত্রের খবর, তাপসের ভূমিকা নিয়ে ইডির পাশাপাশি সিবিআইয়েরও প্রথম থেকে প্রশ্ন ছিল। তাদের মনে হয়েছে, তাপস তদন্তকারীদের কাছে একাংশের নাম বললেও, একাংশকে আড়াল করছেন। শুক্রবার চন্দন মণ্ডল ওরফে সৎ রঞ্জন-সহ ৫ এজেন্ট গ্রেফতার হওয়ার পর এ তথ্য তদন্তকারীদের কাছে আরও জোরাল হয় বলেই সূত্রের খবর। যদিও এদিন মানিক ভট্টাচার্য ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডল বলেন, “তদন্তে সহযোগিতা করছি, সবসময় করব। আমি এখনও মনে করি আমি নির্দোষ, তদন্তে সহযোগিতা করছি। আগামিদিনেও করব।”

হুগলির তৃণমূল যুবনেতা কুন্তল ঘোষকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। কিন্তু তাঁকে হেফাজতে চেয়ে ইতিমধ্যেই আদালতের কাছে গিয়েছে সিবিআই। আলিপুর বিশেষ সিবিআই আদালতে প্রোডাকশন ওয়ারেন্টও জারি করা হয়েছে সিবিআইয়ের তরফে। আগামিকাল অর্থাৎ সোমবার কুন্তলকে আদালতে তোলা হবে। ঠিক তার একদিন আগে কুন্তলের গ্রেফতারি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

এ বিষয়ে তাপস মণ্ডলের পরামর্শদাতা নীলকমল চক্রবর্তী বলেন, “কেন গ্রেফতার জানি না। তবে মনে হয় তদন্ত দ্রুত শেষ করতে চাইছে সিবিআই। তার জন্য সবাইকে একসঙ্গে বসিয়ে মুখোমুখি জেরা করতে চান হয়ত।” ডিএলএড কলেজগুলির সংগঠনের সভাপতি ছিলেন এই তাপস মণ্ডল। কুন্তল গ্রেফতার হওয়ার পর তাপস মণ্ডল দাবি করেছিলেন, চাকরি দেওয়ার নামে ১৯ কোটি টাকা নেন কুন্তল।

দফায় দফায় এই টাকা নেন তিনি। ২০১৬ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছর ধরে টাকা নেওয়া হয়েছে বলেও দাবি ছিল তাপসের। যদিও কুন্তলের পাল্টা দাবি ছিল, বেআইনিভাবে অফলাইনে ভর্তি করাতেন তাপস। তা নিয়ে কুন্তল মুখ খুলবেন বলায় তাপস তাঁর ছেলেকে কিডন্যাপ করার হুঁশিয়ারি দেন।

অন্যদিকে নীলাদ্রি ঘোষ সম্পর্কে তাপস মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ বলেই জানা যায়। নীলাদ্রি কুন্তলের কাছ থেকে ৬ থেকে ৮ লক্ষ টাকা আদায় করেন বলেও দাবি সূত্রের। তবে সেই টাকা নীলাদ্রি নিজের পকেটেই ভরেন বলে মানিক ভট্টাচার্য ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা যায়। অর্থাৎ তাপস-নীলাদ্রি গ্রেফতারি যে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ তা বলাই যায়।

এই গ্রেফতারি নিয়ে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “কে তাপস, কে নীলাদ্রি, কে কুন্তল দুনিয়ার ফেরেপবাজরা তৃণমূলের নেতা হয়েছে। টাকা লুঠ করেছে। জেলে থাকার কথা, এক বছর ধরে সিবিআই সময় নষ্ট করছে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পর তলায় নামছে। আরে উপরে উঠুক। মাথাটা ধরবে তো। কানের উপর তো আর উঠছে না। আসল টাকাগুলো কোথায় গিয়েছে দেখুক। এই যে সৎ রঞ্জন কলকাতায় টাকা পাঠাতো, কোন ঠিকানায়, সেটা সামনে আসবে না?” তবে শুক্রবার চন্দন ও আরও ৫জনকে গ্রেফতার হওয়ার পর এজেন্টদের যে একটা বিশাল চক্র রাজ্যজুড়ে ছড়িয়ে, তার একটা নতুন দিক খুলে যায় বলেই তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে জানা যায়।

বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “হাত, পা, কান পর্যন্ত পৌঁছনো গিয়েছে। তবে কান থেকে মাথায় উঠতে অনেক দেরী হচ্ছে। মানুষ ক্লান্ত। একটা দুর্নীতি পাহাড় থেকে সাগর পর্যন্ত মানুষের জীবন জীবিকাকে গ্রাস করেছে। এত মেধার প্রতারণা হয়েছে।” প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর কথায়, “বাংলা এখন চোরের ফ্যাক্টরি। কত চোর ঢুকবে তার হিসাব আছে? আমরা কিন্তু এতে খুশি নই। আমরা চাই বোয়াল, ইলিশ, রুই, কাতলা ধরা পড়ুক।’