SSKM: ৩০০ বছরের পথ চলা, কলকাতা ছাড়িয়ে গ্রাম-গঞ্জের ‘দুয়ারে’ SSKM
Kolkata: সোমবার SSKM হাসপাতালের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই অনুষ্ঠান থেকেই প্রত্যন্ত এলাকায় চিকিৎসা পরিষেবার উন্নতি ঘটাতে জুনিয়র চিকিৎসকদের বিশেষ তৎপর হওয়ার বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী।
কলকাতা: তিনশো বছরের বেশি সময় ধরে কলকাতার ঐতিহ্যের সঙ্গে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িয়ে রয়েছে এসএসকেএম (SSKM) হাসপাতালের নাম। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আমলে শহরের বুকে তৈরি হয়েছিল এই স্বাস্থ্যকেন্দ্র। প্রেসিডেন্সি জেলের কাছে এই হাসপাতাল ছিল, তাই নাম দেওয়া হয়েছিল প্রেসিডেন্সি জেনারেল হাসপাতাল। মুখে মুখে সেই হাসপাতাল হয়ে যায় পিজি। এরপর স্বাধীন হল ভারতবর্ষ। ১৭০৭ সালে তৈরি পিজি ১৯৫৪ সালে হল শেঠ সুখলাল কারনানি মেমোরিয়াল হাসপাতাল বা এসএসকেএম। সেই থেকে সমান্তরালভাবে এই হাসপাতাল কারও কাছে পিজি, কারও কাছে এসএসকেএম। তবে নাম যাই হোক, শহরের বুকে এই স্বাস্থ্যপ্রতিষ্ঠান রাজ্যের গর্বের স্মারক। এখন তা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল। সেই এসএসকেএমের প্রতিষ্ঠা দিবস পালিত হল সোমবার। অনুষ্ঠানে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
- ফোর্ট উইলিয়ামের কাউন্সিল এই হাসপাতাল নির্মাণ করে। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এই (কলকাতা কাউন্সিল) জমি কিনেছিল। তাতেই তৈরি হয় প্রেসিডেন্সি হাসপাতাল। পরে তার নাম হয় প্রেসিডেন্সি জেনারেল হাসপাতাল। সংক্ষিপ্ত নাম পিজি। প্রথমদিকে এই হাসপাতালে সাহেবদের চিকিৎসা হলেও পরবর্তীকালে সাধারণ মানুষের চিকিৎসাও শুরু হয় এখানে।
- প্রেসিডেন্সি জেনারেল হাসপাতালে ম্যালেরিয়া নিয়ে গবেষণা করতেন স্যর রোনাল্ড রস। বর্তমানে তাঁর নামে আলাদা একটি ভবন রয়েছে এই হাসপাতালে। ১৯৫৪ সালে শেঠ সুখলাল কারনানির নামে এই হাসপাতালের নামকরণ করা হয়।
- সাধারণের জন্য এই হাসপাতালের নাম ধীরে ধীরে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। শুধু চিকিৎসাই নয়, চিকিৎসাবিদ্যার পড়াশোনা, গবেষণা, জটিল অস্ত্রোপচার, আধুনিক চিকিৎসার মাপকাঠিতে শীর্ষে কলকাতার এই হাসপাতাল।
- এসএসকেএমে সেই বিশেষ ওয়ার্ড রয়েছে যার নাম উডবার্ন ওয়ার্ড। ১৯০২ সাল থেকে ১৯০৮ সালের মধ্যে এই ওয়ার্ড তৈরি হয়েছিল। যার নামকরণ হয়েছিল স্যার জন উডবার্নের নামে। এই ওয়ার্ডে মূলত বিশিষ্টজনদের চিকিৎসা হয়। এখানে রয়েছে বিশেষ কেবিনের ব্যবস্থা। ইদানিং খুব বেশি করেই এই ওয়ার্ডের নাম শোনা যায়।
- ৩৫টির উপরে বিভাগ রয়েছে এই এসএসকেএম হাসপাতালে। প্রতিটি বিভাগে আউটডোর চিকিৎসা এবং ইনডোর পরিষেবার ব্যবস্থা রয়েছে। অ্যানেক্স বিভাগও রয়েছে এখানে।
- প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ আসেন এই হাসপাতালে পরিষেবা নিতে। বহু বিরল রোগও সারিয়ে ফেরেন রোগীরা।
- সোমবার এই হাসপাতালের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন চিকিৎসা পরিষেবাকে আরও মসৃণ করতে এগিয়ে আসতে হবে জুনিয়র ডাক্তারদের। সপ্তাহে তিন চারদিন গ্রামে গিয়ে পরিষেবা দিন তাঁরা, বলেন মুখ্যমন্ত্রী। যাঁরা গ্রামে গিয়ে পরিষেবা দেবেন, সেই জুনিয়র ডাক্তাররা আলাদা সুবিধা পাবেন বলেও জানান তিনি।