AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

‘বাম-কংগ্রেস শূন্যতা গণতন্ত্রের জন্য অশুভ’, তৃণমূলের অবস্থানে জন্ম নিচ্ছে নতুন সমীকরণ!

West Bengal Legislative Council: রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, বিধানসভায় বাম এবং কংগ্রেসের অনুপস্থিতিই পরোক্ষে তৃণমূলের বিধান পরিষদ গঠনের তাগিদ বাড়িয়েছে।

'বাম-কংগ্রেস শূন্যতা গণতন্ত্রের জন্য অশুভ', তৃণমূলের অবস্থানে জন্ম নিচ্ছে নতুন সমীকরণ!
বাম-কংগ্রেস না থাকা গণতন্ত্রের জন্য শুভ নয়, বলছেন তৃণমূল নেতারা
| Edited By: | Updated on: Jul 07, 2021 | 1:06 AM
Share

কলকাতা: ভোটের আগেই রাজ্যে বিধান পরিষদ গঠনের কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মতো মঙ্গলবার বিধানসভায় বিধান পরিষদ গঠনের প্রস্তাব পাশ হয়ে যায় বিপুল ভোটের ফারাকে। কিন্তু নির্বাচনের আগে বিধান পরিষদ গঠনের যতটা সক্রিয়তা শাসকদলের পক্ষ থেকে দেখানো হচ্ছিল, ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর তা কিঞ্চিৎ বৃদ্ধি পেয়েছে। কী কারণে? রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, বিধানসভায় বাম এবং কংগ্রেসের অনুপস্থিতিই পরোক্ষে তৃণমূলের বিধান পরিষদ গঠনের তাগিদ বাড়িয়েছে।

বামেরা যদিও বিধান পরিষদ গঠনের সমর্থনে নেই। সংযুক্ত মোর্চার একমাত্র প্রতিনিধি নওশাদ সিদ্দিকিও এ দিন এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন। কিন্তু বাম-কংগ্রেস শূন্য বিধান ভবন যে ‘গণতন্ত্রের জন্য মঙ্গলদায়ক নয়’, তা এ দিন বারবার করে মনে করিয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের প্রথম সারির নেতারা।

তাৎপর্যপূর্ণভাবে, এ দিন বিধানসভায় অধিবেশন চলাকালীন বিজেপিকে উদ্দেশ্য করে তৃণমূলের পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “কংগ্রেস-সিপিএম শূন্য হওয়াতে আমরা উল্লসিত হতে পারি না। এটা গণতন্ত্রের পক্ষে শুভ নয়। আপনারা বাংলার কথা ভাবুন। সুসংহত ভাবে আলোচনা করুন।” একই সুর বিধানসভায় তৃণমূলের ডেপুটি চিফ হুইপ তাপস রায়ের কণ্ঠেও। তাঁকেও বলতে শোনা যায়, “বিধানসভায় বাম ও কংগ্রেস শূন্য। গণতন্ত্রের পক্ষে তা ভাল নয়। এক ব্যক্তি, এক নেতা পদ্ধতি সমর্থনযোগ্য নয়। বিধান পরিষদের গুরুত্ব কী, তা অনেকেই বোঝেন না।”

ঠিক এখানেই ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের জিজ্ঞাস্য, তবে কি বিধানসভায় বাম-কংগ্রেসের উপস্থিতি নিশ্চিত করতেই বিধান পরিষদ গঠনে সক্রিয় হয়েছে শাসকদল? সিপিআইএম রাজ্য কমিটির সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র এই নিয়ে একটি লিখিত বিবৃতি জানিয়েছেন, “আঞ্চলিক প্রতিনিধিত্ব সুনিশ্চিত করতে জাতীয় স্তরে আইনসভার উচ্চকক্ষ বা রাজ্যসভা থাকার দরকার আছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে রাজ্যস্তরে আইনসভার উচ্চকক্ষের কোনও প্রয়োজনীয়তা নেই।”

আরও পড়ুন: বিশ্লেষণ: ইতিহাস ফেরাচ্ছেন মমতা, সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে কতটা যুক্তিযুক্ত বিধান পরিষদ?

এই বক্তব্যের নেপথ্যে সূর্যকান্ত মিশ্রের যুক্তি, অতীতে পশ্চিমবঙ্গের আইনসভার কার্যপ্রণালীতে বিধান পরিষদের কোনও কার্যকরী ভূমিকা ছিল না। “১৯৫২ থেকে পরবর্তী ১৭ বছরে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় ৪৩৬টি বিল পাস হয়েছিল, তার মধ্যে মাত্র দুটি বিল সংশোধিত হয় বিধান পরিষদে,” একটি বিবৃতি দিয়ে লেখেন সূর্যবাবু। এর পাশাপাশি বর্তমান অতিমারি পরিস্থিতিতে বিধান পরিষদ গঠনে অতিরিক্ত খরচের বোঝা কীভাবে রাজ্য টানবে, সেই প্রশ্নও তিনি তুলে দিয়েছেন। ঠিক যে যুক্তি দেখিয়ে মঙ্গলবার এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন শুভেন্দু।

মঙ্গলবার যদিও বিধানসভায় এই প্রস্তাব পাস হওয়ার সময় সেখানে হাজির ছিলেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সবমিলিয়ে ২৬৫ জন বিধায় হাজির ছিলেন। ভোটাভুটি চলাকালীন ১৯৬ টি ভোট প্রস্তাবের সমর্থনে পড়ে। ৬৯ টি ভোট পড়ে বিরোধিতায়। একটি আইএসএফ, অপর ৬৮ টি বিজেপি। কিন্তু এই প্রস্তাব পাশ করাতে গিয়েও বিজেপি বিধায়কদের সঙ্গে তৃণমূলের বাক-বিতণ্ডা ওঠে তুঙ্গে। বিধানসভায় বিজেপি যে পুরোপুরি একরোখা বিরোধিতার পথে হাঁটবে তা অবশ্য অধিবেশন শুরুর দিনই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। তাই বাম-কংগ্রেসকে বিধান পরিষদে জায়গা দিয়ে কি বিরোধী সুরের বিকেন্দ্রীকরণ করতে চাইছে তৃণমূল? এমন প্রশ্নও উঠতে শুরু দিয়েছে রাজনৈতিক মহলে।

আরও পড়ুন: ‘তৃণমূলে তো এক পিসই হিরো আছে’, মদনকে দেখে বলেই দিলেন উচ্ছ্বসিত দিলীপ