কলকাতা: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পেন সফরে গিয়েছেন। সঙ্গে গিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীও। আর মুখ্যমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে কাজকর্ম সামলানোর দায়িত্ব রয়েছে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব বিপি গোপালিকার হাতে। এমন অবস্থায় রাজ্যের ডেঙ্গি পরিস্থিতি ও রাস্তাঘাটের বেহাল দশা নিয়ে স্বরাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে আলোচনা করতে চেয়েছিলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিরোধী দলনেতার অফিস থেকে চিঠিও পাঠানো হয়েছিল নবান্নে। কিন্তু স্বরাষ্ট্রসচিবের দেখা পেলেন না শুভেন্দু। আর তা নিয়েই ক্ষোভ উগরে দিলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা।
শুভেন্দু বললেন, ‘আমার অফিস থেকে বার বার স্বরাষ্ট্রসচিবের অফিসে ফোন করা হয়েছে।’ বিরোধী দলনেতার সন্দেহ, সেই বিষয়টি নিয়ে মুখ্যসচিব ও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল নবান্ন থেকে। এরপর সেখান থেকেই গোপালিকাকে বলা হয়েছে, তাড়াতাড়ি নবান্ন ছেড়ে ‘পালানোর’ জন্য, এমনই সন্দেহ শুভেন্দুর। বিরোধী দলনেতার বক্তব্য, এরপরই স্বরাষ্ট্রসচিবের অফিস থেকে তাঁর অফিসে ফোন করে জানানো হয়েছে, আজ দেখা করার সময় হবে না।
বিরোধী দলনেতা বললেন, ‘আমি ডেঙ্গি নিয়ে আমার উদ্বেগের কথা বলতে চেয়েছিলাম। এর সঙ্গে নবান্ন ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও বা মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ার দখল করে নাও… এসব কোনও কর্মসূচি ছিল না।’ বিরোধী দলনেতার বক্তব্য, জনস্বার্থ সম্পর্কিত এই বিষয়গুলি পাঁচ-সাত মিনিটের মধ্যে বলা হয়ে যেত। স্বরাষ্ট্রসচিব বি পি গোলাপিকার সাক্ষাৎ না পেয়ে শুভেন্দু বললেন, ‘উনি আমার কথা আমাকে দাঁড় করিয়ে শুনতে পারতেন, বসিয়ে শুনতে পারতেন। চা খাইয়ে বা না খাইয়েও শুনতে পারতেন। যদি তাঁর কোনও আশঙ্কা থাকত, আমি মুখ্যমন্ত্রীর চেম্বারে ঢুকে যাব, তাহলে লিফ্টের সামনে দাঁড়িয়েও শুনতে পারতেন।’
শুভেন্দুর বক্তব্য, তিনিও ২ কোটি ২৮ লাখ মানুষের প্রতিনিধি। সেখানে আমলাদের এমন ব্যবহারে কিছুটা অসন্তুষ্ট তিনি। বলছেন, ‘এই রাজ্যের ব্যুরোক্র্যাট কোন পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন বিরোধীরা সহযোগিতা করে না। আর বিরোধীদের জনস্বার্থ সংক্রান্ত প্রস্তাব শোনার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আমলারা রাজি নন। বিরোধী দলনেতার অবস্থা যদি এই জায়গায় হয়, তাহলে অন্যান্য সাংসদ, বিধায়কদের অবস্থা কী, তা সহজেই অনুমেয়।’
যদিও স্বরাষ্ট্রসচিব বি পি গোপালিকার অফিস থেকে বিরোধী দলনেতার অফিসে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে, আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর (শনিবার) বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টার মধ্যে যে কোনও সময়ে শুভেন্দু নবান্নে যেতে পারেন দেখা করতে।
এদিকে এই চিঠির বিষয়ে পরবর্তীতে শুভেন্দু অধিকারীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি এই চিঠিকে কোনও গুরুত্ব দিতে চাননি। বললেন, ‘ইগনোর করছি।’ একইসঙ্গে এই চিঠি পাঠিয়ে ২৩ তারিখ নবান্নে আসতে বলা নিয়ে স্বরাষ্ট্রসচিবের উদ্দেশে বললেন, ‘উনি কোন হরিদাস পাল। মুখ্যমন্ত্রী ফিরে এলে উনি কে? এগুলো সব গোছানো থাকছে।’