কলকাতা: নজরুল মঞ্চের অনুষ্ঠান থেকে বিরোধীদের তোপ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বিরোধীরা কুৎসা করে বাংলাকে সবসময় বদনাম করার চেষ্টা করছে বলে এদিন সুর চড়ান তিনি। অন্যরা কুৎসা করুক, তৃণমূলের কাজ উন্নয়ন করা, বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। একইসঙ্গে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জাগো বাংলা সরকারি বিজ্ঞাপন নেয় না। গণশক্তির পাতায় পাতায় সরকারি বিজ্ঞাপন থাকত। তৃণমূলের মুখপত্র জাগো বাংলার পুজো সংখ্যার উদ্বোধন ছিল রবিবার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, “জাগো বাংলা একমাত্র কাগজ, যারা সরকার থেকে এক পয়সার বিজ্ঞাপন নেয় না। আমাদের ১১ বছর সরকারে হয়ে গেল। সিপিএমের প্রতিটি পেজে, গণশক্তিতে থাকত। সরকারের বিজ্ঞাপন থেকে শুরু করে, চিট ফান্ড থেকে শুরু করে সব কিছুর। অনেক কাগজেই থাকে। কিন্তু আমরা নিইনি।”
এদিন বিরোধীদের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, তৃণমূল দেখলেই তখন সব খারাপ হয়ে যায়। মমতার তোপ, বাংলাকে খারাপ প্রমাণের চেষ্টা সবসময় বিরোধীদের। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এক সময় তো আমি দিল্লি গিয়ে লজ্জা বোধ করতাম। বাংলার নামে শুধু বদনাম করা একদল লোকের কাজ।” মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, “আপনারা আমাকে গাল দিন তাতে আমার কিছু যায় আসে না। যারা এগুলো করছেন আরও বেশি করে করুন। আমরা প্রতিহিংসাপরায়ণ নই। তাই বদলা নয়, বদল চাই বলেই কাউকে অ্যারেস্ট করিনি ৩৪ বছরের। অনেক কর্মকাণ্ড থাকা সত্ত্বেও। ধোয়া তুলসিপাতা কেউ নয়। আর যারা দিল্লিতেও বসে আছে, ওটা দিল্লিকা লাড্ডু। যো খায়া ওভি পস্তায়া, যো নেহি খায়া ওভি পস্তায়া। মনে রাখবেন তাদের মাথার উপরে চন্দ্র সূর্য গ্রহ তারার মতো নানা রকম এজেন্সি বসে আছে। চোখে দেখেও দেখতে পায় না।”
এ প্রসঙ্গে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “গণশক্তি আর পাঁচটা ট্র্যাডিশনাল সংবাদপত্র। এটা ট্রাস্টের পত্রিকা। তার চেয়েও বড় কথা অন্যান্য সংবাদপত্রের সঙ্গে সমানভাবেই গণশক্তিকে বিজ্ঞাপন দেওয়া হতো। এটা তো স্বাভাবিক। দেওয়ারই তো কথা। সেটা বরং উনি এসে বন্ধ করে দিয়েছেন। সবাইকে দেন। এখানে আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও বন্ধ করে দিয়েছেন। এটা প্রতিহিংসার অংশ।”
ইউনেস্কো দুর্গাপুজোকে ইনটানজিবল হেরিটেজের তকমা দিয়েছে। এই তকমা নিয়েও রাজ্য-কেন্দ্রের তরজা চলছে। পুজোর মুখে সে তরজা আরও জোরাল হয়েছে। শনিবারই ভারতীয় জাদুঘরে কেন্দ্রীয় সরকার এক অনুষ্ঠান করে দুর্গাপুজোর সঙ্গে যুক্ত শিল্পীদের সম্মানিত করেছে। সংস্কৃতিমন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী মীনাক্ষী লেখি, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার উপস্থিত ছিলেন সেখানে। তাঁদের বক্তব্য ছিল, ইউনেস্কোর সম্মানের কৃতিত্বের দাবিদার কেন্দ্র সরকার। তাদের উদ্যোগেই বিষয়টি এগোয়।
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে শোনা যায়, “বাংলা এবার ইউনেস্কোর ইনটাজিবল হেরিটেজ পেয়েছে। টুরিজম ডিপার্টমেন্ট থেকে ওয়ার্ল্ড বেস্ট ডেস্টিনেশন হয়েছে বাংলা। মার্চে জার্মানে প্রাইজ দেবে। সুতরাং বাংলা এগিয়ে চলেছে। আর যাদের কাজ নেই কর্ম নেই, সকাল থেকে যা করে বেড়াচ্ছেন তরজা, তারা প্লিজ দয়া করে তরজা করে বেড়ান। আপনারা তরজা না করলে এ উন্নতিটা হবে না। আপনারা বেশি করে তরজা করুন, আমরা উন্নয়নটা করে যাই।”