কলকাতা : প্রয়াত রাজ্যের মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে। বয়স হয়েছিল ৭১ বছর বয়স। মুম্বইয়ের হাসপাতালে এদিন মৃত্যু হয় তৃণমূল বিধায়কের। দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন এই তৃণমূল নেতা। অসুস্থতার কারণে দীর্ঘ সময় হাসপাতালেও কাটাতে হয়েছে তাঁকে। ফুসফুসের সংক্রমণ নিয়ে সঙ্কটজনক অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সম্প্রতি গত ৪ দিন ধরে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। গত বছর ফুসফুসে সংক্রমণ নিয়ে মানিকতলার একটি বেসরকারি হাসপাতালেও ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। গতকাল তাঁর মেয়ের একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট ঘিরে তাঁর শারীরিক অবস্থা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছিল। দীর্ঘ এক বছরের লড়াই থেমে গেল। মুম্বইয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন রাজ্যের মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে। আজ বিকেলেই তাঁর মৃতদেহ কলকাতায় আনা হবে বলে জানা গিয়েছে। রবিবার তাঁর মৃতদেহ রাখা থাকবে পিস ওয়ার্ল্ডে। তবে আগমীকাল তাঁর শেষকৃত্য কখন হবে তা নিয়ে এখনও কিছু জানা যায়নি।
এদিন সকালেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় টুইটে শোকবার্তা জ্ঞাপন করেছেন। তিনি টুইট বার্তায় লিখেছেন, “আমাদের বর্ষীয়ান সহকর্মী, দলের নেতা এবং ক্যাবিনেট মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে আজ সকালে মুম্বইয়ে মারা গিয়েছেন। ওঁর সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক আমার। এই হারে গভীর ব্যথিত। তাঁর পরিবার, বন্ধুবান্ধব, অনুগামীদের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা।” রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রীর মৃত্যুতে কলকাতা শহরের সমস্ত সরকারি অফিসের জাতীয় পতাকা আজ অর্ধনমিত থাকবে বলে রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছে।
Our senior colleague, party leader and Cabinet Minister Sadhan Pande has passed away today morning at Mumbai. Had a wonderful relation for long. Deeply pained at this loss. My heartfelt condolences to his family, friends, followers.
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) February 20, 2022
তাঁর রাজনৈতিক কর্মজীবন কংগ্রেসের হাত দিয়ে শুরু হলেও পরবর্তীকালে ঘাসফুল শিবিরে যোগদান করেছিলেন তিনি। ১৯৯৮ সালে তিনি কংগ্রেসের প্রার্থী হিসেবে কলকাতা উত্তর-পূর্ব লোকসভা কেন্দ্র থেকে নির্বাচনে লড়েছিলেন। কিন্তু সেই নির্বাচনে হেরে যান সাধন পাণ্ডে। তিনি কংগ্রেসের দলের বিশ্বস্ত নেতা ছিলেন। কিন্তু ১৯৯৮ সালে লোকসভা নির্বাচনে হারের পর কংগ্রেস ছেড়ে দেন তিনি। এর পরপরই তিনি যোগ দেন তৃণমূল কংগ্রেসে। তিনি তাঁর রাজনৈতিক জীবনে ৯ বার বিধায়ক হয়েছেন। ৪ বার কংগ্রেসের টিকিটে তিনি বিধানসভায় পৌঁছন। ২০০১ থেকে ২০১১ সাল অবধি লাগাতার পাঁচবার তিনি ঘাসফুল শিবিরের হয়ে বিধায়ক নির্বাচিত হন। প্রথম থেকেই তৃণমূল কংগ্রেসের জয়ের মুখ ছিলেন সাধন পাণ্ডে। ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনের পর তিনি ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রীর দায়িত্ব পান। তিনি ২০১১ সাল ক্রেতা সুরক্ষা দপ্তর সামলে এসেছেন। কিন্তু ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি সেই দায়িত্ব পূরণ করতে পারেননি। বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই রাজনীতির ময়দানে সেইভাবে দেখা যায়নি তাকে। অসুস্থতার কারণে রাজনীতির ময়দান থেকে অনেকদিন আগে থেকেই বিচ্ছিন্ন ছিলেন তৃণমূল বিধায়ক সাধন পাণ্ডে।
আরও পড়ুন : Student Death: আনিস মৃত্যুতে ফুঁসছে আমতা, পুলিশকে রুখতে একাট্টা হাজার-হাজার এলাকাবাসী