নন্দন পাল
নিউটাউন: বিশ্ব বাংলা গেট, সেন্ট্রাল মল, সিটি সেন্টার ২, অ্যাক্সিস মল, টেকনো পলিস এই সবই পঞ্চায়েত এলাকা। শুধু এইগুলোই নয়, এনকেডিএ বা হিডকোর অফিস সবই পঞ্চায়েত। স্মার্ট সিটি নিউটাউন জুড়ে এবার পড়ল ভোট বয়কটের পোস্টা। কারা দিলেন ? জানা যাচ্ছে নিউটাউনের বাসিন্দাদের উদ্যোগেই পড়েছে এই পোস্টার।
এনকেডিএ (NKDA) ও হিডকো পরিচালিত এই অঞ্চলটি প্রায় শহর। যে মানুষগুলো দশ বা তারও উঁচুতলা বাড়িতে থাকেন তাঁদের কাছে লাগছে খটকা। তাঁদের প্রশ্ন ‘আমরা কীভাবে পঞ্চায়েতের ভোটার?’ এখান থেকেই বেশ কয়েকজন নিউটাউনের আবাসিক তাঁরা ডাক দিয়েছেন ভোট বয়কটের। মূলত, জ্যাংড়া হাতিয়াড়া দু’নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে শহর নিউ টাউনের আটটি গ্রাম পঞ্চায়েতের আসন রয়েছে। সেখানকার প্রায় ১২ হাজার বাসিন্দা ডাক দিয়েছেন ভোট বয়কটের।
কী বক্তব্য বাসিন্দাদের?
কেউ বললেন দীর্ঘদিন ধরেই নিউটাউন-কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথারিটির অধীনে সমস্ত রকম সুবিধা পেতেন। বর্তমানে চ্যাংড়া হাতিয়ারা ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে চলে আসে নিউটাউনের বিস্তীর্ণ অঞ্চল।
শুভপ্রিয় ভট্টাচার্য নামে এক আবাসিক বলেন, “আমরা উন্নয়নই চাই। তার জন্য যদি ট্যাক্স দিতে হয় তাও দেব। কিন্তু তা বলে পঞ্চায়েত নয়। মানুষ অগ্রগতির দিকে যায়, নিম্নগতির দিকে নয়।” রবীন সরকার নামে আরও এক অটোচালক বলেন, “এখানে সব এনকেডিএ করে। তাই এখানে পঞ্চায়েতের কোনও প্রয়োজন নেই।”
বাসিন্দারা গণস্বাক্ষর নিয়ে আবেদনও করেছেন পুর নগরোন্নয় এবং গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রীর কাছে। দাবি একটাই নিউটাউন যেন পঞ্চায়েত না হয়।
সমরেশ দাস বললেন, “স্মার্ট সিটি হঠাৎ করে কীভাবে গ্রাম পঞ্চায়েতে চলে এল জানি না। কার মাথায় এসেছে তাও জানি না। আমরা পঞ্চায়েতের ট্যাগ চাইছি না। সেই কারণে আমরা চাইছি না নিউটাউন ভাঙড় হয়ে যাক। এখানে শান্তিপূর্ণ ভাবে বাস করি আমরা।”
এলাকার তৃণমূল নেতা আফতাবউদ্দিন বললেন, যারা বিরোধীতা করছেন,তাঁরা ঠিক করছেন না। এই জ়োনটা একটা সমস্যায় রয়েছেন। এটা যদি পুরসভা-পঞ্চায়েত না হয় তাহলে জনপ্রতিনিধি তৈরি হবে না। এখানে মাত্র তেরো হাজার ভোট। তাই পুরসভার অন্তর্ভূক্তি হবে না। সিপিএম নেতা সপ্তর্ষি দেব বলেছেন, একটি সুপার আরবান সিটিকে পঞ্চায়েতে রাখা মোটেই কাম্য নয়। এটা পার্টির পক্ষ থেকে সমর্থন করিনি। আমরাই প্রথমে বলেছিলাম এই এলাকাকে পুরসভা করার প্রয়োজনীতা রয়েছে। বিজেপি নেতা ভাস্কর রায় বলেন, “এনকেডিএ-র আবাসিকদের অনেক বেশি ট্যাক্স দিতে হয়। নিউটাউন প্ল্যাটিনাম সিটি। গুরুগ্রামও পঞ্চায়েত এলাকার মধ্যেই পড়ে। তার পরিষেবা এখানকার পরিষেবার থেকে আকাশ পাতাল তফাৎ।”