কলকাতা: পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজ্যে লাগাতার হিংসার অভিযোগ উঠছে। সেই সব অভিযোগ খতিয়ে দেখতে পঞ্চায়েত ভোটের ফলপ্রকাশ চলাকালীন রাজ্যে এসেছে বিজেপির তথ্যানুসন্ধান দল (ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম)। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদের নেতৃত্বের তিন সদস্যের এই দল যাবে বাংলার বিভিন্ন স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে। হিংসা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট তৈরি করবেন। সেই রিপোর্ট পৌঁছে যাবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে। যে এলাকাগুলি থেকে খুনের অভিযোগ এসেছে বা লাগাতার বোমাবাজি, গুলি চালনার মতো ঘটনা ঘটেছে, সেই সমস্ত এলাকা পরিদর্শন করে, নিগৃহীতদের সঙ্গে কথা বলবেন এই টিমের সদস্যরা।
এ দিন বিজেপি নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদ সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, “আমি তো বিহার থেকে, সত্যপাল তো উত্তর প্রদেশ থেকে। এত হিংসা তো আমাদের আমলে বিহার-উত্তরপ্রদেশে হত, এখন তো হয় না। কেন বাংলাতে এত হিংসা? কেন এত খুনোখুনি? বাংলায় গণতন্ত্র লজ্জিত।” তিনি আরও বলেন, “আমি তো শুনেছি, এখানে জয়ী প্রার্থী বসিয়ে রেখে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়েছে। না হলে বলা হয়েছে সার্টিফিকেট দেওয়া হবে না।” মুখ্য়মন্ত্রীকে কটাক্ষ করেই রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, “আমি তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একজন লড়াকু রাজনৈতিক নেতা হিসাবে সম্মান করি, সে যতই আমাদের মতাদর্শের তফাৎ থাকুক না কেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তো সব প্রশ্নের রেডিমেড উত্তর থাকে। তবে নির্বাচনের পর তাঁকে কেন সামাজিক মাধ্যমে এসে পোস্ট করতে হল? কেন সাংবাদিকদের চোখাচোখি হতে পারলেন না?”
প্রসঙ্গত, গোটা নির্বাচন প্রক্রিয়া ঘিরে এত সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠেছে, তারপরই বিজেপির সর্ব ভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম গঠন করেন। এই টিমে রবিশঙ্কর প্রসাদ ছাড়াও রয়েছেন রেখা বর্মা, রাজদীপ রায় ও সত্যপাল সিং। তাঁরা কলকাতার একটি হোটেলে ওঠেন। সেখান থেকে তাঁরা সল্টলেকে বিজেপির দলীয় কার্যালয়ে যাবেন। তারপর রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে স্পর্শকাতর বুথগুলিতে যাবেন তাঁরা। এখনও পর্যন্ত যা কর্মসূচি নির্ধারিত হয়েছে, তাতে প্রথমেই তাঁরা উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জে যাবেন।
কেবলমাত্র ভোটের দিন নয়, গণনাকে কেন্দ্র করেও যে বেলাগাম হিংসা-হানাহানির অভিযোগ উঠেছে, তা নিয়ে সরব বিরোধীরা। এমনকি জয়ের পরও বিরোধীদের ওপর হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ। রবিশঙ্কর প্রসাদের বক্তব্য, “এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। একটা নির্বাচন ঘিরে এত রক্ত ছড়িয়েছে, এত লোকের মৃত্যু হয়েছে। এত গুলি, এত বোমাবাজি কি গণতন্ত্রে চলে?” বিজেপির ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম উত্তরবঙ্গেও যাবে বলে জানা গিয়েছে।