কলকাতা: কোভিডের তৃতীয় ঢেউ যে কোনও সময় আছড়ে পড়তে পারে। চিকিৎসকদের একাংশ তো বলছেন, এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। তাই হাসপাতাল পরিকাঠামোয় বিশেষ নজর দেওয়া শুরু। বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে প্রথম ঢেউয়ের মতোই শয্যা তৈরি রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য ভবনের তরফে। একইসঙ্গে বলা হয়েছে, প্রতিদিন কত নমুনা পজিটিভ হচ্ছে তাও জানাতে হবে স্বাস্থ্যভবনকে।
শুক্রবার স্বাস্থ্যভবনের তরফে বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমগুলির সঙ্গে বৈঠক করা হয়। ভার্চুয়াল এই বৈঠকে একাধিক নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য ভবন। সেই বৈঠকে ছিলেন স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম। বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে এদিন বলা হয়, সংক্রমণের প্রথম ঢেউয়ের সময় শয্যা প্রস্তুত রাখতে হবে। একই সঙ্গে বলা হয়েছে বেসরকারি হাসপাতালগুলির যে ল্যাব রয়েছে, সেখানে প্রতিদিন কত নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে, কতগুলি রিপোর্ট পজিটিভ হচ্ছে সেই পরিসংখ্যানও স্বাস্থ্য ভবনকে পাঠাতে হবে।
পাশাপাশি ওষুধের স্টক কী রয়েছে সে বিষয়েও তথ্য দিতে বলা হয়েছে বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে। নজরে রাখতে বলা হয়েছে চিকিৎসার অন্যান্য সামগ্রীর স্টকের দিকেও। অর্থাৎ স্বাস্থ্য ভবন সরকারি হাসপাতালগুলিকে যেমন সদা জাগরূক থাকতে বলেছে, একই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বেসরকারি হাসপাতালগুলিকেও।
যে হারে কোভিডের সংক্রমণ বাড়ছে তাতে তৃতীয় ঢেউ যে অবসম্ভাবী তা মেনে নিচ্ছেন চিকিৎসক, গবেষকদের একটা বড় অংশ। তাই সেদিকে খেয়াল রেখে সবরকম প্রস্তুতি সেরে রাখতে চাইছে স্বাস্থ্য দফতর। যদিও নমুনা পরীক্ষার পরিসংখ্যান জানতে চাওয়া নিয়ে বেসরকারি হাসপাতালগুলির একাংশ ভিন্ন মত পোষণ করেছে।
তাদের কথায়, সংক্রমণের গতিবিধি বোঝার জন্য স্বাস্থ্য ভবন এই পরিসংখ্যান চাইছে বলছে। কিন্তু বেসরকারি হাসপাতালে যদি নমুনা সংগ্রহের পর পজিটিভিটি রেট বেশি হয় তা হলে কোনও রকম নিয়ন্ত্রণ চলে আসবে না তো। কেন এত পজিটিভিটি রেট তা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে না তো? কারণ, বৃহস্পতিবারই বেসরকারি ল্যাবের গ্রাফ দেখে সরকারি ল্যাবগুলিকে আরটিপিসিআর বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। ফলে আশা এবং আশঙ্কা দুই-ই রয়েছে শুক্রবারের স্বাস্থ্য ভবনের বার্তার মধ্যে।
ইতিমধ্যেই রাজ্যে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৬। কলকাতার ১০টি ওয়ার্ড হটস্পট হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে। ওমিক্রনের রাজ্যের তরফে বেশ কয়েকটি বিষয় কড়া ভাবে নজর দিতে বলা হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি বৈঠকে নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্যকর্তা।
বলা হয়েছে, সন্দেহভাজন হোম আইসোলেশন মানছেন কিনা, তা কড়া ভাবে নজর দিতে হবে। প্রয়োজনে জিও ট্যাগিংয়ের সাহায্য নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ওমিক্রন সংস্পর্শে আসা এলাকায় মাইক্রো কনটেইনমেন্ট জোন তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্দেশ মেনে ইতিমধ্যে মাইক্রো কনটেইনমেন্ট জোন কলকাতা পুর এলাকায় ঘোষণা করা হয়েছে। সন্দেহভাজনেরা ফোন না ধরলে প্রয়োজনে বাড়ি যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকদের।
আরও পড়ুন: Doctors Protest: স্ট্রোক আক্রান্ত মাকে নিয়ে হন্যে ছেলে, চিকিৎসা নেই! ‘স্ট্রাইক’ করছেন ডাক্তাররা!