Air Pollution: কুয়াশার আড়ালে বায়ুদূষণ, মর্নিং ওয়াকে বেরিয়ে বুকে বিষ ভরছে জনতা

Air pollution: বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কলকাতার মতো শহরে বায়ুদূষণের উত্‍স অনেক। কারখানা দূষণ ছড়াচ্ছে, পরিবহণ থেকে দূষণ ছড়াচ্ছে, সেই দূষণ ঠেকাতে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আদৌ সক্রিয় নয় বলে সারা বছরই অভিযোগ ওঠে। পশ্চিমী ঝঞ্ঝা নিমিত্ত মাত্র।

Air Pollution: কুয়াশার আড়ালে বায়ুদূষণ, মর্নিং ওয়াকে বেরিয়ে বুকে বিষ ভরছে জনতা
কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 06, 2025 | 10:49 PM

দীপাবলিতে বাজি ফাটে, বায়ুদূষণ নিয়ে সশব্দ আলোচনা হয়। কিন্তু বাকি বছর কি দূষণ বাড়ে না? আলবাত বাড়ে। ঠিক যেমন এখন বেড়েছে। চুপিসাড়ে। শীত একটু ফিকে হতেই লাফিয়ে বাড়ছে দূষণমাত্রা। অথচ বিন্দুমাত্র আলোচনা নেই। ভোরে, সকালে রাস্তায় বেরিয়ে বুকে বিষ ভরছে জনতা। প্রশ্ন উঠছে, প্রশাসন-পর্ষদ কি শীতঘুমে?

বাতাসে ঠিক কতটা বিষ?

সপ্তাহের প্রথম দিন কয়েকটি অঞ্চলের বাতাসের মান নিয়ে তথ্য দিলে ছবিটা স্পষ্ট হয়ে যাবে। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ বলছে, বাতাসে পিএম ২.৫ (সূক্ষ ধূলিকণা) প্রতি ঘনমিটারে ৫০-১০০ মাইক্রোগ্রাম পর্যন্ত থাকলে সেটা সয়ে নিতে পারে মানুষ। সোমবার কলকাতার ভিক্টোরিয়ায় পিএম ২.৫-এর সর্বোচ্চ মাত্রা পৌঁছয় ৩৬৫ মাইক্রোগ্রাম প্রতি ঘনমিটারে। বালিগঞ্জে ৩০২ মাইক্রোগ্রাম/ঘনমিটার। হাওড়ার ঘুসুরিতে ৩৩১ মাইক্রোগ্রাম/ঘনমিটার, দাসনগরে ৩১২ মাইক্রোগ্রাম/ঘনমিটার। উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুর, পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুর, পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়া, সর্বত্র ছবিটা কম-বেশি এক। অর্থাত্‍, বাতাসের মান সহনসীমার চেয়ে অনেকটাই খারাপ।

এই খবরটিও পড়ুন

কেন এতটা দূষণ?

প্রথমত, বেশ কয়েকদিন হল বৃষ্টিবাদলা নেই। ফলে ধুলোর দাপট বেড়েছে। দ্বিতীয়ত, পশ্চিম ঝঞ্ঝার প্রভাবে দু’দিন ধরে উত্তুরে হাওয়ার জোর কমেছে। উল্টে জলীয় বাষ্প বেড়েছে। জলীয় বাষ্প বেড়ে যাওয়ার রাত থেকেই ঘন কুয়াশা, যা বেলা পর্যন্ত থাকছে। ধুলো, কুয়াশা মিলেমিশে ধোঁয়াশার জন্ম হচ্ছে। বাতাসের জোর কম থাকায় ধোঁয়াশা গাঁট হয়ে বসে থাকছে, সরে যাচ্ছে না। স্বাস্থ্যই সম্পদ মন্ত্র নিয়ে ভোরে-সকালে হাঁটতে বেরোচ্ছে জনতা। এমনই কপাল, তখনই বাতাসে বিষ থাকছে সবচেয়ে বেশি।

তবে কি শুধু ঝঞ্ঝাই দায়ী? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কলকাতার মতো শহরে বায়ুদূষণের উত্‍স অনেক। কারখানা দূষণ ছড়াচ্ছে, পরিবহণ থেকে দূষণ ছড়াচ্ছে, সেই দূষণ ঠেকাতে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আদৌ সক্রিয় নয় বলে সারা বছরই অভিযোগ ওঠে। পশ্চিমী ঝঞ্ঝা নিমিত্ত মাত্র।

আইআইটি দিল্লির সেন্টার ফর অ্যাটমসফেরিক সায়েন্সেসের অধ্যাপক সাগ্নিক দে বলছেন, ‘‘গাঙ্গেয় সমতলের সর্বত্র বায়ুদূষণ বাড়ছে। শুধু শহর নয়, দূষণ গ্রামেও। উত্‍স আলাদা, এই যা। ফলে অঞ্চল ধরে ধরে সমাধান খুঁজতে হবে। দিল্লি পুরনো গাড়ি বাতিল করেছে, সিএনজিচালিত গাড়ি এনেছে, আরও নানারকম বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। এই পথে সবাইকে হাঁটতে হবে। শীতে আবহাওয়ার জন্য দূষণ বাড়ে বলে চুপ করে বসে থাকলে চলবে না। সচেতনতা আরও বাড়া দরকার।’’

যদিও বায়ুদূষণ বিশেষজ্ঞ, ক্লাইমেট ট্রেন্ডসের রিসার্চ লিড পলক বালিয়ানের মন্তব্য, ‘‘গত কয়েক বছরে দূষণ কমাতে বেশ কিছু সদর্থক পদক্ষেপ নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করছে। তারই ফলস্বরূপ, ২০২৪ সালের প্রথম তিন মাসে দূষণ-রোধে কলকাতাকে তিন নম্বর স্থানে রেখেছিল কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ।’’

জনতার অবশ্য অভিজ্ঞতা, দীপাবলির সময় দূষণে দিল্লিকে জোর টক্কর দিয়েছিল কলকাতা। একটা ঝঞ্ঝা আসতেই, জানুয়ারির শুরুতেও ছবিটা প্রায় এক। আলোচনা একেবারেই নেই, এটাই যা আশ্চর্যের।