
কলকাতা: বিধানসভায় পাশ হওয়া বিল ঝুলিয়ে রাখা বৈধ কাজ নয়। তামিলনাড়ুর রাজ্যপালের বিরুদ্ধে সে রাজ্যের সরকারের মামলায় এই রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বিল পাশ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে তামিলনাড়ুর রাজ্যপালকে সময়ও বেঁধে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের রায়কে হাতিয়ার করে বাংলার শাসকদল বলছে, এ রাজ্যের যেসব বিল অনুমোদনের জন্য রাজভবনে পড়ে রয়েছে, সেগুলিতে এবার অনুমোদন দেওয়া দরকার রাজ্যপালের। সত্যিই কি তাই হবে? বাংলার রাজ্যপালকে কি এবার পেন্ডিং বিলগুলি নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে? কী বলছেন কলকাতা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্ত এবং আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য?
গতকাল সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জেবি পরদিওয়ালা ও বিচারপতি আর মহাদেবনের বেঞ্চ তামিলনাড়ুর রাজ্যপালকে বিল পাশ নিয়ে তিন মাস সময় বেঁধে দেওয়ার পর বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “রাজ্যপালের কাছে অনুমোদনের জন্য ২৩টি বিল পড়ে রয়েছে। ২০১৬ সাল থেকে ২০২৫ সালের মার্চের মধ্যে এই বিলগুলি বিধানসভায় পাশের পর রাজভবনে পাঠানো হয়।” রাজ্যপাল এতদিন বিলগুলি আটকে রেখেছেন বলে সরব হন তিনি।
রাজ্যপাল কি বিধানসভায় পাশ হওয়া বিল দীর্ঘদিন আটকে রাখতে পারেন? কলকাতা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্ত বলেন, “সাংবিধানিকভাবে বলা নেই, কতদিনের মধ্যে পাঠাতে হবে। কিন্তু, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তো রাজ্যপালকে সিদ্ধান্ত নিতেই হবে। অনির্দিষ্টকালের জন্য তো বিল ফেলে রাখা যায় না।” সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের পর রাজ্যের সুবিধা হল বলে তিনি মনে করেন।
তামিলনাড়ুর রাজ্যপালকে নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের এই রায়কে কি অন্য রাজ্য হাতিয়ার করতে পারে? অন্য রাজ্য কি আদালতে গেলে সুবিধা পাবে? আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের এই রায় সমস্ত সাংবিধানিক সংস্থার জন্য। এই রায়কে মান্যতা দিতে হবে। অন্য কোনও রাজ্যের এর জন্য সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। যাঁরা রাজ্যপাল হবেন, তাঁদের যদি সামান্যতম বোধবুদ্ধি থাকে, তাঁরা সুপ্রিম কোর্টের এই রায়কে মর্যাদা দেবেন। কেউ যদি সুপ্রিম কোর্টের এই রায়কে মর্যাদা না দেন, তাহলে বুঝতে হবে তাঁরা রাজ্যপাল হওয়ার যোগ্যই নন।”