
কলকাতা: দুর্গাপুরে নির্যাতিতা ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে রাজ্যপাল বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারির ইঙ্গিত দিয়েছেন। নির্বাচনের মুখে দাঁড়িয়ে রাজ্যপালের এহেন আভাস যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ। রাজ্যপালের এই মন্তব্যে রাজনৈতিক মহলেও শুরু হয়েছে জোর জল্পনা। কিন্তু রাষ্ট্রপতি শাসন কীভাবে জারি হয়? তার স্থায়ীত্ব কতদিন? এই নিয়ে কী বললেন কলকাতা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি দেবাশিস কর গুপ্ত।
অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বলেন, “রাষ্ট্রপতি শাসন রাষ্ট্রপতি নিজে জারি করে থাকেন। আর্টিক্যাল ৩৫৬ অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট অন রিসিপ্ট অফ অ্যা রিপোর্ট ফর্ম দি গভর্নর অর আদারওয়াইস, রাষ্ট্রপতি এই শাসন জারি করতে পারেন।”
তিনি জানান, সাধারণত এটা প্রথম ছ’মাসের জন্য জারি হয়। তারপর পার্লামেন্টের অনুমোদন সাপেক্ষ আরও ৬ মাস, অর্থাৎ এক বছর চলতে পারে। তবে তিনি এও বলেন, “একটা প্রভেশন রয়েছে, তিন বছর পর্যন্ত চলতে পারে, যদি রাজ্যের পরিস্থিতি সেরকম হয়। জুডিশিয়াল রিভিউ এই রাষ্ট্রপতি শাসনের হতেই পারে। যদি কেউ এই রাষ্ট্রপতি শাসনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতে যান। আদালত তখন দেখবে, এর যৌক্তিকতা কোথায়?”
রাজ্যে এখন নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকরা রয়েছেন। SIR প্রস্তুতি তুঙ্গে। এই আবহে দাঁড়িয়ে রাজ্যপালের এহেন মন্তব্য যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে অভিজ্ঞ মহল। এর আগেও সন্দেশখালির ঘটনার সময়ে দিল্লি গিয়ে রিপোর্ট জমা দিয়েছেন রাজ্যপাল।
তবে এই প্রথমবার নয়, এর আগেও রাজ্যপাল সিভি আনন্দ হাবভাবে বাংলার রাষ্ট্রপতি শাসনের জারির পক্ষে আভাস দিয়েছিলেন। যেমন ওয়াকফ বিল নিয়ে মুর্শিদাবাদের অশান্তির সময়ে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির সুপারিশ করেছিলেন রাজ্যপাল। রাজ্যপালের রিপোর্টে উল্লেখ ছিল, “মুর্শিদাবাদে অশান্তির ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত, স্থানীয় প্রশাসনের ব্যর্থতা। ধর্মীয় পরিচয়ের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক শোষণ চলছে। প্রশাসনিক ব্যর্থতা এ-ক্ষেত্রে তদন্ত করতে হবে। পাকাপাকিভাবে মুর্শিদাবাদ ও মালদাতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়ন ও নজরদারি বাড়ানো হোক। যদি পরিস্থিতি খারাপের দিকে যায় তাহলে ৩৫৬ লাগুর সুপারিশ।”
আবার সম্প্রতি বিপর্যস্ত নাগরাকাটায় গিয়ে বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুর আক্রান্তের ঘটনাতেও একই প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন তিনি। রাষ্ট্রপতি দৌপদী মুর্মুর কাছে রিপোর্ট পাঠান। উল্লেখ করেন, ‘খুব খারাপ পরিস্থিতি, এভাবে চলতে পারে না।’
‘