কলকাতা: দেওচা-পাচামির (Deucha Pachami) কয়লা খনির(Coal Mine) প্রকল্প নিয়ে গত বছর থেকে উত্তাল বাংলার রাজ্য-রাজনীতি। ওই এলাকার আদিবাসীদের ক্ষোভ, খনি এলাকায় কয়লা উত্তোলনের কাজ শুরু হলে তাঁদের যে জমি ও বাড়ি তা সরকারের অধীনে চলে যাবে। এমনকী দ্রুত ওই এলাকা আসানসোল-রানিগঞ্জের মতো এক বিরাট শিল্পতালুকে। ফলে, গোটা ভৌগোলিক ও সামাজিক পরিবেশটাই বদলে যেতে পারে। এমনকী সরকারের তরফে যে পুনর্বাসন প্যাকেজ দেওয়ার ঘোষণা করা হয়েছে তা নিয়েও ক্ষোভ রয়েছে ওই এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে। লাগাতার আন্দোলনে নামে সেখানকার আদিবাসীরা। যার রেশ রয়েছে এখনও। যার জেরে চাপ বাড়ে সরকারের। এমতাবস্থায় এবার দেওচা-পাচামির কয়লা খনির জমি নেওয়া নিয়ে নিজেদের অবস্থান জানাতে সময় চাইল রাজ্য। যা নিয়েই বর্তমানে জোরদার চর্চা চলছে রাজ্যের প্রশাসনিক মহলে।
প্রসঙ্গত, রাজ্যের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় ২০১৩ সালের জমি অধিগ্রহণ আইনের শর্ত না মেনে ওই প্রকল্পে জমি নেওয়ার অভিযোগে মামলা হয়। অভিযোগ, এই প্রকল্পের জন্য পরিবেশের কোনও ছাড়পত্র নেওয়া হয়নি। আদিবাসীদের জমি ও ফরেস্ট ল্যান্ড নেওয়া হচ্ছে বিধি না মেনেই। সম্প্রতি এ মামলা নিয়েই জোরাদার চাপান-উতর চলেছে গোটা রাজ্যজুড়েই। এমতাবস্থায় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের আবেদন মেনে দু সপ্তাহের মধ্যে সরকার ও রাজ্য বিদ্যুৎ নিগমকে এই অধিগ্রহণ নিয়ে তাদের অবস্থান জানানোর নির্দেশ দিয়েছে।
এ মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে ১৮ জুলাই। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চেই হবে শুনানি। এদিকে প্রায় ১২ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে অবস্থিত দেউচা পাচামি কোল ব্লক এলাকা। সেখানেই হওয়ার কথা রয়েছে মূল প্রকল্পের কাজ। প্রাথমিক সমীক্ষা অনুযায়ী প্রায় ৩০১০টি পরিবার এই খনি অঞ্চলে বসবাস করেন। এদের মধ্যে ১০১৩টি আদিবাসী পরিবার রয়েছে। মূল বিরোধিতার রাস্তায় নেমেছে তাঁরাই। অন্যদিকে এখানেই ৩০৭ একর জমি বনভূমি রয়েছে এখানে। তা নিয়েও রয়েছে সমস্যা। এখন দেখার পরবর্তীতে শুনানিতে সওয়াল জবাবের পর আদালতের তরফে কী রায় দেওয়া হয়।