কলকাতা: গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে যে চার্জশিট পেশ করেছে সিবিআই, তা ৯৫ জনের সাক্ষ্যের ওপর ভিত্তি করেই। যাঁর কথায় নাকি বীরভূমে বাঘে-গরুতে এক ঘাটে জল খেত, তাঁর বিরুদ্ধে এতজন সাক্ষ্য দিয়েছেন দেখে চমকে গিয়েছিলেন অনেকে। তবে সবথেকে বড় চমক হল সেই তালিকায় তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়ের নাম। গরু পাচার মামলায় অন্যতম সাক্ষী শতাব্দী। এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই কৌতূহল বাড়ছে, কী বলেছেন শতাব্দী? তাঁর সঙ্গে কেষ্ট মণ্ডলের সম্পর্ক খুব একটা মধুর না হলেও, বীরভূমের জেলা সভাপতিকে দেখতে হাসপাতালে ছুটে গিয়েছিলেন সাংসদ। তাই এই বিষয় নিয়ে এখন জোর চর্চা চলছে রাজনৈতিক মহলে।
মোচ ৯৫ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে ৪৬ নম্বরে রয়েছে শতাব্দীর নাম। গত ২৮ সেপ্টেম্বর তৃণমূল সাংসদের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে বলে চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে।
সিবিআই সূত্রের খবর, শতাব্দীকে প্রশ্ন করা হয়েছিল গরু পাচারের মূল করিডর বীরভূম, সাংসদ হিসেবে আপনি সেই পাচারের বিষয়ে ওয়াকিবহাল ছিলেন? যদি জানতেন, তাহলে পদক্ষেপ করেননি কেন? কেন্দ্র বা রাজ্য প্রশাসনকে এ বিষয়ে কিছু জানিয়েছিলেন?
এই চার্জশিটে অনুব্রত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত বীরভূমের ব্যবসায়ী মলয় পিটের নামও রয়েছে। তিনি শান্তিনিকেতনের বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের মালিক। তাঁর এনজিও রয়েছে বলেও জানা যায়। এ ছাড়া তৃণমূল নেতা ঘনিষ্ঠ আরও এক ব্যবসায়ী রাজীব ভট্টাচার্যের নামও রয়েছে সাক্ষীদের তালিকায়। সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে অনুব্রত ঘনিষ্ঠ মনোজ মহনকের।
তবে শতাব্দীর নাম যে কার্যত একটা চমক, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, চার্জশিটে শতাব্দীর নাম পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বাংলার রাজনীতিতে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। আবার কেউ কেউ বলছেন, চার্জশিটে শতাব্দীর নাম দেখে অনুব্রতর বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস পাবেন বীরভূমের অন্যান্য নেতারাও।
তবে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের দাবি, শতাব্দী রায় নির্দিষ্টভাবে কোনও অভিযোগ করেননি। তাঁর দাবি, অনুব্রতকে ফোন করা হয়েছিল কি না, সেটাই কেবল জানতে চাওয়া হয়েছে শতাব্দীর কাছে।