ভবানীপুরে কেন শ্রীজীবে ‘বিশ্বাসী’ সিপিএম? নেপথ্যে কারণ কী?

TV9 Bangla Digital | Edited By: সৈকত দাস

Sep 08, 2021 | 11:35 PM

CPIM: রাজনৈতিক মহলের একাংশের যুক্তি মমতা যে অপরাজেয় নন, সেটা নন্দীগ্রামে প্রমাণ করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। যতই তাঁর নিজের কেন্দ্র হোক আর যত স্বল্প ব্যবধানেই তিনি তৃণমূল সুপ্রিমোকে পরাজিত করুন না কেন, যিনি ২৯৪ কেন্দ্রে একাই প্রার্থী বলে ঘোষণা করে এসেছে তৃণমূল, তাঁকেও যে হারানো যায় সেটা প্রমাণ করেছেন তাঁর একসময়ের সতীর্থ।

ভবানীপুরে কেন শ্রীজীবে বিশ্বাসী সিপিএম? নেপথ্যে কারণ কী?
ভবানীপুরে বামেদের পক্ষ থেকে প্রার্থী হচ্ছেন পেশায় আইনজীবী শ্রীজীব বিশ্বাস

Follow Us

কলকাতা: ভবানীপুর উপনির্বাচন (Bhawanipur Bypolls) হচ্ছেই তৃণমূল সুপ্রিমোকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) কে জয়ী করানোর লক্ষ্য নিয়ে। তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে প্রার্থী এখনও স্থির করতে পারেনি বিজেপি (BJP)। অন্যদিকে কংগ্রেস ওয়াকওভার দেওয়ার পর মমতার বিরুদ্ধে প্রার্থী দিচ্ছে সিপিএম (CPIM)।  সিপিএমের প্রার্থী হওয়ার জন্য আপাতত ৬ জনের নাম এগিয়ে ছিল। তবে ভবানীপুরে প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে শ্রীজীব বিশ্বাস। কিন্তু কে এই শ্রীজীব? হাইপ্রোফাইল কেন্দ্রে কেন তাঁকেই এগিয়ে দিচ্ছে সিপিএম? নেপথ্যের কারণ কী?

বামপন্থী আইনজীবী বাকিদের পিছনে ফেলে দিয়ে কেন সামনে এলেন? একসময় বামপন্থী যুব আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন শ্রীজীব। তবে বর্তমানে পেশাগতভাবে তিনি আইনজীবী এবং পরিচয় শুধু বামপন্থী হিসাবেই। সিপিএমের একটা সূত্রে খবর, শ্রীজীবকে মমতার সামনে এগিয়ে দেওয়ার একটি কারণ তাঁর স্বচ্ছমূর্তি এবং তাঁর ভাবমূর্তি। সিপিএম চেয়েছিল ভবানীপুরে এমন একজনকে প্রার্থী করা হোক যিনি সিপিএমের সদস্য নন অথচ বামপন্থী মনোভাবাপন্ন। সেক্ষেত্রে সামনে এসেছে দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা শ্রীজীবের নাম।

কিন্তু শ্রীজীবের মতো ভোটের ময়দানে আনকোরা এবং অনভিজ্ঞ একজনকে প্রার্থী করার পিছনে অন্যতম কারণ হল নিশ্চিত পরাজয় জেনে বামেরা কোনও পরিচিত মুখকে আর এগিয়ে দিতে চাইছে না। গত বিধানসভা ভোটে সংযুক্তা মোর্চা থেকে প্রার্থী দিয়েছিল কংগ্রেস। সেই কংগ্রেস নেতৃত্ব নাকি শ্রীজীবের নামই শোনেননি। এ হেন শ্রীজীবকে এগিয়ে দেওয়ার কারণ হিসাবে উঠে আসছে যে কারণ, তা হল তাঁর আনকোরা মুখ। বামেদের একাংশের দাবি, কংগ্রেস প্রার্থীর তুলনায় তবুও বেশি ভোট পাবে বলে আশাবাদী তারা। অর্থাৎ, এ যেন পরাজয় নিশ্চিত জেনেও যুদ্ধে যেতে হবে, এটা ভেবেই একজনকে এগিয়ে দেওয়া।

আর এই পদক্ষেপের মাধ্যমে বাম শরিকদের মতামতই বেশি গুরুত্ব পেল বলছে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। যদিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিপরীতে শ্রীজীবের নামের ওজন খুব বেশি না হলেও সিপিএমের বক্তব্য, স্বচ্ছ ভাবমূর্তির তরুণ নেতাকেই তারা অগ্রাধিকার দিয়েছে। জেলা কমিটির বৈঠকে আলোচনায় শ্রীজীব ছাড়াও উঠে এসেছিলেন কলতান দাশগুপ্ত, সত্যব্রত ঘোষ, রীতা সেন ও রাজেন্দ্র প্রসাদের নাম। এঁদের মধ্যে কলতানের নাম আলোচনায় উঠে এলেও তাঁকে ভোটের ময়দানে নামাতে নারাজ এক পক্ষ। অন্যদিকে রীতা সেনের বয়স হয়েছে। অন্যান্যদের মধ্যে তাই আইনজীবী শ্রীজীবকেই এগিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

তবে রাজনৈতিক মহলের একাংশের যুক্তি মমতা যে অপরাজেয় নন, সেটা নন্দীগ্রামে প্রমাণ করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। যতই তাঁর নিজের কেন্দ্র হোক আর যত স্বল্প ব্যবধানেই তিনি তৃণমূল সুপ্রিমোকে পরাজিত করুন না কেন, যিনি ২৯৪ কেন্দ্রে একাই প্রার্থী বলে ঘোষণা করে এসেছে তৃণমূল, তাঁকেও যে হারানো যায় সেটা প্রমাণ করেছেন তাঁর একসময়ের সতীর্থ। অবশ্য এই ভোটের ফলাফল নিয়ে মামলা হয়েছে। কিন্তু আসল কথা হল সিপিএম যেন আগেই তাদের পরাজয় মেনে নিয়ে আনকোরা যোদ্ধাকে এগিয়ে দিলেন ভোটযুদ্ধের ময়দানে। গতবারের কংগ্রেস প্রার্থীর থেকে ভোট সংখ্যা বাড়লেই তাঁরা খুশি!

আরও পড়ুন: ভবানীপুরে উপনির্বাচন চেয়ে মুখ্যসচিব চিঠি দেন কী ভাবে? জনস্বার্থ মামলা দায়ের হাইকোর্টে 

Next Article