কলকাতা: ইন্ডিয়া জোটে তৃণমূলের সঙ্গে হাত ধরে চলা নিয়ে তীব্র আপত্তি রয়েছে তাঁর। দলের অন্দরে কার্যত বিদ্রোহও ঘোষণা করেছেন। তাঁর আচরণে রেগে আগুন প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। সম্প্রতি তাঁকে আবার কংগ্রেসের মুখপাত্রের তালিকা থেকেও বাদ দেওয়া হয়েছে। দলের অন্দরে কেউ কেউ বলতে শুরু করেছিলেন, তিনি শীঘ্রই যোগ দিতে পারেন বিজেপিতে। তাই এসব করছেন। এরইমধ্যে সেই কৌস্তভ বাগচিকে এদিন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে একই মিছিলে হাঁটতে দেখা গেল। চাকরির দাবিতে এদিন ক্যামাক স্ট্রিটে মিছিল করছিলেন গ্রুপ-ডি এর চাকরিপ্রার্থীরা। এদিন সেই মিছিলেই হাঁটতে দেখা গেল কৌস্তভ-শুভেন্দুকে। তারপর থেকেই কৌস্তভের বিজেপিতে যোগদানের জল্পনা আরও তীব্র হয়েছে। সত্যিই কী যোগ দিচ্ছেন তিনি পদ্ম শিবিরে? কেনই বা হাঁটলেন বিরোধী দলনেতার সঙ্গে?
এ প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “এই আন্দোলন অরাজনৈতিক আন্দোলন। আমি বিরোধী দলনেতা হিসাবে এসেছি। আন্দোলনকারীরা কাকে রাখবেন সেটা তাঁদের ব্যাপার।” এরপরই কার্যত কৌস্তভের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে তিনি বলেন, “আমার রাজৈনিক মতাদর্শের বাইরে যে কয়েকটা লোক এই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজত্বের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন তার মধ্যে কৌস্তভ অন্যতম। এরা হাইকোর্টে যে লড়াই করে অনুমতি এনেছেন তাতে হাইকোর্টের একজন সফল আইনজীবী হিসাবে কৌস্তভেরও অবদান আছে। স্বাভাবিকভাবে যার আন্দোলনের দাবির প্রতি মমত্ববোধ থাকবে সেই এই মিছিলে আসতে পারে।”
মিছিলে হাঁটা নিয়ে শুভেন্দুর সঙ্গে খানিক একই মত কৌস্তভের। বলেন, “এটা কোনও রাজনৈতিক দলের মিছিল নয়। বিজেপির মিছিল নয়। বিজেপির মিছিল হলে আমিও হাঁটতাম না, আর কংগ্রেসের মিছিল হলে শুভেন্দু অধিকারীও হাঁটতেন না। এখানে আমি আমার রাজনৈতিক সত্তার বাইরে আইনজীবী হিসাবে এসেছি। তাই বলছি অহেতুক জল্পনা করার কোনও মানে হয় না।”
যদিও বিষয়টিকে খুব একটা পাত্তা দিতে নারাজ কংগ্রেসের জোট সঙ্গী সিপিএম। বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলছেন, “কে মিছিলে গেল সেটা বড় কথা নয়।” খোঁচা দিতে ছাড়েনি ঘাসফুল শিবির। তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, এটা দীর্ঘ দিন ধরেই আমরা বলছি। বৃহত্তর স্বার্থে ইন্ডিয়া হয়েছে, আর অধীর এ রাজ্যে বিজেপির বি টিম এর ভূমিকা পালন করছেন। এটা ইন্ডিয়ার লাইনের সঙ্গে সঙ্গতি পূর্ণ নয়।
বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলছেন, ওনারা ওখানে কোন পরিচয়ে গিয়েছিলেন তা সংবাদমাধ্যমের সামনে বলেছেন। কংগ্রেসের সঙ্গে বিজেপি একই মঞ্চ থেকে আন্দোলন করবে এটা কোনওদিন সম্ভব নয়। এটা অবাস্তব বিষয়। আমরা বলছি, এ রাজ্য়ে যাঁরা তৃণমূলকে সরাতে চান তাঁদের বিজেপিতে আসতে হবে। কিন্তু, বিজেপি কাকে নেবে কাকে নেবে না, সেটা দলের বিষয়।