
কলকাতা: কবি শঙ্খ ঘোষ লিখেছিলেন, ‘মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে’। কিন্তু, এখানে দেখা গেল এলগিন রোডে বাঙালির আবেগ নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর বাড়ির সামনের বেশ কিছু অংশ হোর্ডিং বোর্ড এবং বিজ্ঞাপনের বোর্ডে ঢেকে গিয়েছে। তা নিয়ে চাপানউতোর শুরু হতেই রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায় কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে। দ্রুত ওই সব হোর্ডিং সরিয়ে ফেলতে বললেন। ক্ষোভের সঙ্গেই বললেন, কলকাতায় ঐতিহ্যশালী বাড়িগুলিকে হোর্ডিং বোর্ড দিয়ে ঢেকে ফেলা যেন একটা সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর বাড়ির সামনে যেভাবে বিজ্ঞাপনী বোর্ড লাগানো হয়েছে, তা অন্যায়।
এ বিষয়ে বিভাগীয় কর্তাদেরও সুষ্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন ফিরহাদ। দ্রুত ওই বিজ্ঞাপনে বোর্ডের মালিক এবং বিজ্ঞাপন সংস্থার আধিকারিকদের চিঠি ধরানোর কথা বলছেন। শুধু ওই এলাকা নয়, কলকাতার মনীষীদের বাড়ি কোথায় কোথায় হোর্ডিং বোর্ড দিয়ে ঢাকা রয়েছে তা দেখে দ্রুত সরানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে এলগিন রোডে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর বাড়ির সামনে গিয়ে দেখা গেল, অস্থায়ী হোর্ডিং থাকলেও, বেশি রয়েছে কলকাতা পুরসভার অনুমোদিত স্থায়ী হোর্ডিং বোর্ড এবং এলইডি বোর্ড। ফিরহাদ টক টু মেয়রে বিষয়টি নিয়ে সরব হতেই কলকাতা পুরসভার কর্মীরা নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর বাড়ির সামনে পৌঁছে যান। কিন্তু, কলকাতা পুরসভা যেখানে টেন্ডার নিয়ে এই হোর্ডিং বোর্ড বসানোর অনুমতি দিয়েছে, সেখানে কিভাবে ওই হোর্ডিং গুলোকে সরাবে? চাপানউতোর শুরু হতেই রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়েছেন কলকাতা পুরসভার বিজ্ঞাপন বিভাগের আধিকারিকরাই। শহর কলকাতায় বেআইনি হোর্ডিং বোর্ড নিয়ে দীর্ঘদিন থেকেই সরব হয়েছেন বিরোধীরা।
ইতিমধ্যে কলকাতা পুরসভার তরফে হোর্ডিং বোর্ড সংক্রান্ত নীতিও তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু খোদ নেতাজির বাড়ি সম্পূর্ণ ঢেকে যাবে এবং তা পুরসভার নজরদারির অভাবে, এটা মেনে নিতে পারছেন না কলকাতার মেয়র। যে কারণে শুক্রবার টক টু মেয়র এই ঐতিহ্যশালী বাড়ি এবং হোর্ডিং বোর্ড নিয়ে বলতে গিয়ে রীতিমতো ফুঁসে উঠলেন। তবে কতদিনে এই স্থায়ী পরিকাঠামো গুলিকে এলগিন রোডে নেতাজির বাড়ির সামনে থেকে সরানো যাবে, সেটা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে পুরসভার অন্দরমহলে। এখন দেখার জল শেষ পর্যন্ত কোনদিকে গড়ায়।