
বহু বছরের পরিকল্পনা, বাস্তবায়িত হতেই সময় লেগে গেল ১০০ বছরের বেশি। ২২ অগস্ট প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কলকাতা মেট্রোর ইস্ট ওয়েস্ট করিডোরের শেষ অংশের উদ্বোধন করবেন। ফলে হাওড়া ময়দান থেকে শিয়ালদহ হয়ে সল্টলেক সেক্টর ফাইভ পৌঁছে যাওয়া যাবে কিছুক্ষণেই। উল্লেখ্য, কলকাতা মেট্রোর এই ইস্ট ওয়েস্ট করিডরের পরিকল্পনা করা হয়েছিল আজ থেকে ১০০ বছরেরও বেশি আগে, ১৯২১ সালে। সে সময় লন্ডনে টেমস নদীর নীচের সুড়ঙ্গ দিয়ে ট্রেন চলাচল করত। জানা যায়, মাটি পরীক্ষা করে গঙ্গার নীচে দিয়ে সুড়ঙ্গ তৈরির পরিকল্পনা বাতিল করে দেয় ব্রিটিশ সরকার। কারণ এই প্রকল্পের আনুমানিক খরচ লন্ডনের খরচের তুলনায় প্রায় ৬ গুণ বেশি ছিল।
কিন্তু এই ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রো করিডোরের সঙ্গে কলকাতা মেট্রোর বাকি লাইনগুলো আলাদা কোথায়? এই মেট্রো করিডোর ছাড়া বাকি সব মেট্রো লাইনই চলাচল করে উত্তর থেকে দক্ষিণে। সেই কারণেই এই মেট্রো করিডোরকে বলা হয় ইস্ট ওয়েস্ট করিডোর। এ ছাড়াও এই করিডোরের দায়িত্বে রয়েছে কলকাতা মেটো রেল কর্পোরেশন লিমিটেড বা কেএমআরসিএল। যা রেল মন্ত্রকের অধীনস্থ একটি সংস্থা। অন্যদিকে, কলকাতার বাকি মেট্রো লাইন পরিচালনা করে মেট্রো রেলওয়ে, কলকাতা। ২০১০ সালের ২৯ ডিসেম্বর ভারতীয় রেলের ১৭তম জোন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে মেট্রো রেলওয়ে। তার আগে পর্যন্ত কলকাতা মেট্রো ছিল ইস্টার্ন রেলে অধীনে একটি ডিভিশন হিসাবে।
এ তো গেল পরিচালনার ভিতরের খবর। এ ছাড়া সবচেয়ে বড় পার্থক্য ইস্ট ওয়েস্ট করিডোরে যে BEML রেক চলে তা স্ট্যান্ডার্ড গেজ। অন্য দিকে কলকাতার বাকি সব মেট্রোই চলে ব্রড গেজে। কলকাতায় প্রথম CBTC বা কমিউনিকেশন বেসড ট্রেন কন্ট্রোল সিস্টেম চালু হয় ইস্ট ওয়েস্ট করিডোরে। আর এই কারণেই মাত্র ৯০ সেকেন্ড ছাড়া ট্রেন চালানো যাবে এই লাইনে। যা আগামীতে লক্ষাধিক যাত্রী সামাল দেওয়ার ক্ষেত্রে সুবিধা দেবে কলকাতা মেট্রোকে। বর্তমানে জোকা-এসপ্ল্যানেড ও কবি সুভাষ-বিমান বন্দর রুটেও (যতটা লাইন চালু হয়েছে ও যতটা উদ্বোধন করা হবে) এই সিস্টেম ইনস্টল করা হয়েছে।
এ ছাড়াও ইস্ট ওয়েস্ট করিডোরে ৬ কামরার রেক ব্যবহার করা হলেও অন্য সব মেট্রো লাইনে ৮ কামরার রেক চলে। তবে, পার্থক্য যাই থাক না কেন, ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রো কলকাতার মানুষের কাছে এক আশীর্বাদ স্বরূপ। কারণ হাওড়া থেকে শিয়ালদহ হয়ে সেক্টর ফাইভ আসতে বাসেই লেগে যায় ১ ঘণ্টার বেশি। আর সেই রাস্তা এবার মেট্রো নিয়ে আসব মাত্র ৩০ মিনিটে।