
ভারতের সবচেয়ে পুরনো মেট্রো সিস্টেম কলকাতা। যদিও প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে দেখলে কলকাতার অনেক পরে তৈরি দিল্লি মেট্রো সে দিকে কয়েক যোজন এগিয়ে। কলকাতা মেট্রোয় প্ল্যাটফর্ম স্ক্রিন ডোর, উন্নত সিগন্যাল সিস্টেম বা অটোম্যাটিক ট্রেন কন্ট্রোলের মতো উন্নত ফিচার নেই। আর তার ফলে দৈনন্দিন পরিষেবায় প্রায়শই বিঘ্ন ঘটে।
এই সব সমস্যার মধ্যে অন্যতম সমস্যা হল অনেক সময় অনেক মানুষ মেট্রোর লাইনে ঝাঁপ দিয়ে দেন। এই সমস্যা একমাত্র রয়েছে কলকাতার নর্থ-সাউথ করিডোরে। এ ছাড়া ইস্ট-ওয়েস্ট করিডোর বা সদ্য চালু হওয়া নোয়াপাড়া-বিমানবন্দর বা নিউগড়িয়া-বেলেঘাটা অংশে কোনও সমস্যা শোনা যায়না। আর এর একটা সবচেয়ে বড় কারণ হল এই সব অংশে লাগানো রয়েছে প্ল্যাটফর্ম স্ক্রিন ডোর। অর্থাৎ, ট্রেন এসে দাঁড়ালে তবেই প্ল্যাটফর্মের দরজা খোলে। মানুষ তবেই ট্রেনে উঠতে পারে।
উত্তর-দক্ষিণ অর্থাৎ নিউগড়িয়া-দক্ষিণেশ্বর করিডোরে তাহলে কেন বসছে না প্ল্যাটফর্ম স্ক্রিন ডোর? বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, কলকাতা মেট্রোর এই সেকশনে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় সেই প্রযুক্তিতে প্ল্যাটফর্ম স্ক্রিন ডোর লাগানো সম্ভব নয়। কারণ পুরনো এই প্রযুক্তিতে প্ল্যাটফর্ম স্ক্রিন ডোর সিঙ্ক্রোনাইজ করা সম্ভব হবে না।
তাহলে কলকাতা মেট্রো কর্তৃপক্ষ কেন এখনও সিঙ্ক্রোনাইজেশনের করছে না বা করার চেষ্টাও করছে না? আসলে এই লাইনে নতুন প্রযুক্তি ইনস্টল করতে হলে শুধুমাত্র প্ল্যাটফর্মে এই স্ক্রিন ডোর ইনস্টল করলে হবে না। বরং, একসঙ্গে এই ধরনের যন্ত্র ইনস্টল করতে হবে পুরনো মেট্রো কোচগুলোতেও। আর সেই কারণেই এই প্রযুক্তির ইনস্টল করা শুধুমাত্র খরচসাপেক্ষ, এমন নয়। এই প্রযুক্তি ইনস্টল করা একই সঙ্গে খুবই সময়সাপেক্ষও বটে।
তাহলে কোনও দিনই এই করিডোরে এমন সুরক্ষাপ্রযুক্তি বসবে না? কলকাতা মেট্রোর জেনারেল ম্যানেজার শুভ্রাংশু মিশ্র কিছুদিন আগেই জানিয়েছিলেন, ‘কলকাতা মেট্রোর ব্লু–লাইনে সিবিটিসি অনুমোদন পেয়েছে। তবে এই ব্যবস্থা চালুর আগে ব্লু–লাইনের পরিকাঠামোর ঢালাও উন্নতি প্রয়োজন। আর সেই কাজের জন্যে ৪৬৫ কোটি টাকা বরাদ্দও হয়েছে।’ আর নতুন এই সিবিটিসি বা কমিউনিকেশন বেসড ট্রেন কন্ট্রোল সিগন্যালিং সিস্টেম যদি এই করিডোরে বসে তাহলেই এই লাইনে প্ল্যাটফর্ম স্ক্রিন ডোর বসানো সম্ভব হবে। আর তাহলে সেই সব লক্ষ্যপূরণ করে কলকাতা মেট্রো হয়ে উঠবে অত্যাধুনিক।