Recruitment Case: একেই বলে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা! সুপ্রিম রায়ের পর মৃত্যুর খাদে পড়ে গেলেন সোমনাথ-সুশান্তরা

Recruitment Case: শুধু সোমা একা নন, ক্যানসার আক্রান্তদের তালিকায় রয়েছে আরও একাধিক নাম। তবে তাঁদের সকলেরই চাকরি গিয়েছে। তাঁদের গলায় শোনা যাচ্ছে স্পষ্ট আক্ষেপের সুর। কীভাবে চলবে সংসারের ঘানি, কোন রাস্তায় বইবে ভবিষ্যত তা ভেবেই কূল কিনারা পাচ্ছেন না চাকরিহারারা। চিন্তায় অভিভাবকেরাও।

Recruitment Case: একেই বলে মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা! সুপ্রিম রায়ের পর মৃত্যুর খাদে পড়ে গেলেন সোমনাথ-সুশান্তরা
বিষাদের ছায়া পরিবারে Image Credit source: TV 9 Bangla

| Edited By: জয়দীপ দাস

Apr 04, 2025 | 9:26 PM

কলকাতা: কয়েক বছর আগেও অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটারটা যখন এল তখন খুশির হাওয়া বইয়ে গিয়েছিল গোটা বাড়িতে। মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে এখন শুধুই বিষাদের ছায়া। সুপ্রিম কোর্টের এক রায়েই বাতিল হয়ে গিয়েছে ২০১৬ সালের গোটা প্যানেল। তে যোগ্য আর কে অযোগ্য, তা নিয়ে ক্রমেই তীব্র হচ্ছে চাপানউতোর। কোর্টে প্রায় ৬ হাজার চিহ্নিত অযোগ্য নিয়ে কথা হলে ধোঁয়াশা কাটেনি আজও। এদিকে চাকরিহারাদের কেউ আক্রন্ত মারণ রোগে, কারও কাঁধে গোটা সংসারের দায়িত্ব! কোনও সংসারে আবার স্বামী-স্ত্রী দু’জনেরই চাকরি গিয়েছে। এদিকে মাথায় ঝুলছে EMI এর বোঝা! কীভাবে চলবে সংসারের ঘানি, কোন রাস্তায় বইবে ভবিষ্যত তা ভেবেই কূল কিনারা পাচ্ছেন না চাকরিহারারা। চিন্তায় অভিভাবকেরাও।

সোমা শুধু একা নন 

এদিকে ২০১৬ সালের প্যানেলেই ছিলেন বীরভূমের নলহাটির মেয়ে সোমা দাস। ২০১৯ সালে ক্যানসার ধরা পড়ে তাঁর। কলকাতা হাইকোর্ট সকলের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিলেও সোমার চাকরিতে কোপ পড়েনি। বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্টও। যদিও শুধু সোমা একা নন, তালিকায় রয়েছে আরও একাধিক ক্যান্সার আক্রান্তের নাম। তাঁদের গলায় শোনা যাচ্ছে স্পষ্ট আক্ষেপের সুর। ইসলামপুরের দুর্গানগরের বাসিন্দা সুশান্ত দত্ত। চাকরি করছিলেন চোপড়ার মাঝিয়ালি হাইস্কুলে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বাতিল হয়েছে তাঁর চাকরিও। ২০২২ সালে ধরা পড়ে মারণ রোগ ব্লাড-ক্যান্সার। চাকরি বাতিলের খবরে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে তাঁর। একরাশ হতাশা নিয়ে বলছেন, “কে শুনবে আমার কান্না? মে মাসে মুম্বই টাটা মেমোরিয়াল ক্যানসার হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যাওয়ার কথা, আমি কী করবো বুঝে উঠতে পারছি না।”  

নদিয়ার বীরনগর হাইস্কুলের গ্রুপ সি পদে কর্মরত ছিলেন সোমনাথ মালো। ব্ল্যাড ক্যানসারে আক্রান্ত তিনি। ভাল করে হাঁটতেও পারেন না। স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে চাকরির টাকাতেই চলে সংসার। কিন্তু, এখন কী করে চলবে চিকিৎসা, কী করেই বা চলবে সংসার, তা ভেবে কূলকিনারা পাচ্ছেন না তিনি। তিনিও চাইছেন সোমা পালের মতো তাঁর ক্ষেত্রেও চাকরির সুযোগ দেওয়া হোক। একই ছবি শিলিগুড়ির সায়ানগাম ভাওয়ালের ক্ষেত্রেও। তিনিও ক্যানসার আক্রান্ত। ফাঁসিদেওয়ার একটি স্কুলে শিক্ষক হিসাবে কাজ করছিলেন। এখন কাজ হারিয়ে বাকি জীবনের কী হবে তা ভেবেই মাথায় হাত। আক্ষেপের সঙ্গেই বলছেন, “বিচার ব্যবস্থার উপর আস্থা ছিল, তবে এরকম একটা রায় বেরোবে সেটা ভাবতে পারেনি । নিজের যোগ্যতায় চাকরি পেয়েছি, হঠাৎ করে এইভাবে চাকরি চলে গেলে কীভাবে সংসার চালাব ও নিজের চিকিৎসা কীভেবে করাব সেটা বুঝে উঠতে পারছি না।”

ঘরে এল মৃত্যুও 

সুপ্রিম কোর্টের রায়ে একসঙ্গে চাকরি হারিয়েছেন বীরভূমের চাতরা গণেশলাল হাইস্কুলে ভূগোলের শিক্ষক অর্ণব যশ। কাজ হারিয়েছেন তাঁর স্ত্রী চন্দ্রাণী দত্ত-ও। তিনিও ভূগোলের শিক্ষক। কাজ করছিলেন বীরভূমের নওয়াপাড়া হাইস্কুলে। ছেলে-বউয়ের কাজ যেতেই বৃহস্পতিবার থেকেই তীব্র চিন্তায় ছিলেন অর্ণবের মা মঞ্জুলা যশ। এদিন হৃরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। পরিবারের সদস্যদের দাবি, একসঙ্গে ছেলে-বউমার চাকরি যাওয়ার কষ্ট সহ্য করতে পারেননি মঞ্জুলা দেবী। সদ্য চাকরি হারানো চন্দ্রানী দত্তের দিদি ইন্দ্রাণী দত্ত তীব্র হতাশার সঙ্গে বলছেন, “আমার বোন দিন-রাত পড়াশোনা করে চাকরি পেয়েছে। সরকারি চাকরি যে এভাবে চলে যাবে, এটা ভাবা যায় না।”