BGBS 2025: ‘কর্মসংস্থান ছাড়া যুব প্রজন্ম টিকতে পারবে না’, বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে বললেন মুখ্যমন্ত্রী
BGBS 2025: বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "বাংলাকে ভুলবেন না। বাংলা আপনাদের ভুলবে না। বাংলা বরাবর আতিথেয়তার জন্য পরিচিত। বাংলা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার গেটওয়ে। আমরা এমএসএমই-তে এক নম্বর। মহিলা ক্ষমতায়নে এক নম্বর।"

কলকাতা: রাজ্যে কর্মসংস্থান নিয়ে শাসকদল তৃণমূলকে বারবার নিশানা করে বিরোধীরা। রাজ্যে কর্মসংস্থানের অবস্থা বেহাল বলে তাদের দাবি। বিরোধীদের দাবিকে খারিজ করেছে রাজ্যের শাসকদল। কিন্তু, যুব প্রজন্মের জন্য কর্মসংস্থানের কতটা প্রয়োজন, সেটা বুঝিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চ থেকে তাঁর বক্তব্য, কর্মসংস্থান ছাড়া যুব প্রজন্ম টিকতে পারবে না। রাজ্যে বিনিয়োগের জন্য বিনিয়োগকারীদের আহ্বান জানালেন তিনি। ভবিষ্যতের জন্য বাংলাই যে বিনিয়োগের আদর্শ জায়গা, সেকথা তুলে ধরলেন।
২ দিনের বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন এদিন শুরু হয়েছে। মুকেশ অম্বানী, হর্ষবর্ধন নেওটিয়া, সঞ্জীব গোয়েঙ্কাদের মতো শিল্পপতিরা প্রথম দিনের সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। আর প্রথম দিন বাণিজ্য সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাংলা এখন কোথায় কোথায় এগিয়ে, তা তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা বলেন, “বাংলাকে ভুলবেন না। বাংলা আপনাদের ভুলবে না। বাংলা বরাবর আতিথেয়তার জন্য পরিচিত। বাংলা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার গেটওয়ে। আমরা এমএসএমই-তে এক নম্বর। মহিলা ক্ষমতায়নে এক নম্বর। দক্ষতায় এক নম্বর। আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা ভেবে আরও বেশি করে বিনিয়োগ চাইছি। কর্মসংস্থান ছাড়া যুব প্রজন্ম টিকতে পারবে না।”
এই খবরটিও পড়ুন




বাংলায় স্থায়ী সরকার রয়েছে জানিয়ে মমতা বলেন, “জাতীয় গড়ের থেকে আমাদের জিডিপি বেশি। মহিলা ক্ষমতায়নে দিশা দেখিয়েছে বাংলা। নির্বাচনের ক্ষেত্রে ৩৩ শতাংশ মহিলা রিজার্ভেশনের কথা বলে সবাই। একমাত্র তৃণমূল কংগ্রেস যাদের মহিলা সদস্য সংখ্যা ৩৯ শতাংশ। বাস্তবে আমরাই একমাত্র করেছি।” মুখ্যমন্ত্রী জানান, “৯৪টি জনমুখী কর্মসূচি চালায় আমাদের সরকার। স্বাস্থ্যসাথীতে কোনও বিধিনিষেধ নেই। আমরা সব মানুষকে ভালবাসি। হিন্দু, মুসলিম, শিখ আমরা আলাদা করি না।”
রাজ্যে শিল্প গড়তে জমির কোনও সমস্যা হবে না জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “রাজ্যে ৫০০০ একর জমি রয়েছে শিল্পের জন্য। ফ্রি হোল্ড বেসিসে জমি শিল্পের জন্য দেওয়া হয়। কখনওই শিল্পের কাজে কেউ হস্তক্ষেপ করে না। প্রাইভেট সেক্টর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক তৈরির জন্য একটা পলিসি আমরা নিয়ে এসেছি। এর মাধ্যমে দেড় লক্ষ কর্মসংস্থান হবে। আমরা দেশের এই মুহূর্তে প্রথম সারির লেদার হাব। এমএসএমই ক্ষেত্রে প্রচুর অগ্রগতি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি মহিলা উদ্যোগী এই ক্ষেত্রে যুক্ত আছেন। আমাদের ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে।” বাংলায় ১২ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে বলে জানান মমতা।
দেউচা-পাঁচামির কয়লাখনির কথা উল্লেখ করে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “চাইলে দেউচা পাঁচামিতে আগামিকাল থেকেই উৎপাদন শুরু হবে। ১২৪০ মিলিয়ন টন কয়লা, ২৬০০ মিলিয়ন টন ব্যাসাল্ট তোলা যাবে। আগামিকাল থেকে এর উৎপাদন শুরু হবে। জমি অধিগ্রহণ, স্থানীয় মানুষজনকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া সম্পূর্ণ হয়েছে। সাহায্য়ের জন্য সেখানকার মানুষকে শুভেচ্ছা জানাই। এবার উৎপাদনের পালা। আপনাদের ছেলেমেয়েরাই চাকরি পাবে। এক লক্ষের বেশি মানুষ কাজ পাবে।” মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “আমরা বেঙ্গল সিলিকন ভ্যালি তৈরি করছি। ৫৭ হাজার কোটি বিনিয়োগ হবে।”
মুখ্যমন্ত্রী জানান, টাটা সন্সের চেয়ারম্যান নটরাজন চন্দ্রশেখরনের সঙ্গে কথা হয়েছে তাঁর। টাটা বড় প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছে। আগামিকাল সম্মেলনে চন্দ্রশেখরনের আসার কথা। মুখ্যমন্ত্রী জানান, কলকাতা থেকে সরাসরি ইউরোপের ফ্লাইটের জন্য চন্দ্রশেখরনকে অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। বিষয়টি দেখার কথা জানিয়েছেন টাটা সন্সের চেয়ারম্যান। টাটাও বাংলায় বিনিয়োগে আগ্রহী বলে মুখ্যমন্ত্রী জানান।
রাজ্যে কর্মসংস্থান নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে খোঁচা দিয়ে এদিন এক্স হ্যান্ডলে বিজেপির রাজ্য সভাপতি লেখেন, “শিল্পের ক্রমশ ধ্বংস হচ্ছে। ২০১৫ সালে প্রথম বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট অনুষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে, ২০১৬ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ২১,৫২১টি শিল্প ইউনিট বন্ধ হয়েছে। যা পশ্চিমবঙ্গ পরিবেশ দফতরের রিপোর্ট অনুযায়ী স্পষ্ট। এই বিশাল সংখ্যক কারখানা বন্ধ হওয়ার ফলে লক্ষ লক্ষ শ্রমিক কর্মহীন হয়েছে।”





