
রাজারহাট: ভেতর থেকে দরজা বন্ধ। ডাকাডাকি করেও সাড়া পাওয়া যায়নি। শেষমেশ পুলিশ এসে বন্ধ ঘর থেকে উদ্ধার করল এক মহিলা ও তাঁর মায়ের মৃতদেহ। আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে মহিলার স্বামীকেও। তাঁকে আরজি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে রাজারহাটের নারায়ণপুর দেবীপার্ক এলাকায়।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম মহুয়া দে(৪২) ও শিপ্রা রক্ষিত(৭০)। হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন মহুয়ার স্বামী সঞ্জয় দে। আর্থিক অনটনের কারণে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল ওই পরিবার। আত্মহত্যার জন্য তিনজনেই ঘুমের ওষুধ খেয়েছিলেন বলে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান। ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছে সুইসাইড নোট।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, একসময় বিপুল সম্পতির মালিক ছিলেন বছর পঞ্চান্নর সঞ্জয় দে। বাড়ি-গাড়ি সব ছিল। কোনও কাজ করতেন না তিনি। ধীরে ধীরে সব সম্পতি বিক্রি করতে হয়। ভাড়া বাড়িতে স্ত্রী ও শাশুড়িকে নিয়ে উঠে আসেন তিনি। বিপুল টাকা ঋণও হয়ে যায়। পাশাপাশি নিঃসন্তান ছিলেন মহুয়া ও সঞ্জয় দে। এই নিয়ে মানসিক অবসাদেও ভুগতেন তাঁরা।
পুলিশ জানিয়েছে, গতকাল সন্ধের পর কয়েকজন পাওনাদার সঞ্জয়ের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। গিয়ে দেখেন, বাড়ির দরজা বন্ধ। তাঁরা ডাকাডাকি করেন। কিন্তু, কোনও সাড়াশব্দ পাননি। তখন প্রতিবেশীরা আসেন। তাঁরাও ডাকাডাকি করেন। কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে থানায় খবর দেন। নারায়ণপুর থানার পুলিশ এসে দরজা ভেঙে মহুয়া ও শিপ্রার দেহ উদ্ধার করে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় সঞ্জয়কে উদ্ধার করে আরজি কর হাসপাতালে পাঠায়।
মহুয়া ও তাঁর মায়ের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য আরজি কর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ময়নাতদন্তের পরই মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। আর্থিক অনটনের কারণেই আত্মহত্যা, নাকি এর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।