অভিজিৎ রায়, বহরমপুর
ধর্ম বা ধর্মনিরপেক্ষতা সমাজতন্ত্রের কোনও সমস্যা বা সমাধানের মাপকাঠি হতে পারে না বলেই আমার ব্যক্তিগত মত। একজন মানুষ ভিন ধর্মের প্রতি সহানুভূতিশীল কিনা সেটা প্রত্যক্ষ ভাবে ঠাহর করা মুশকিল। কিন্তু ধর্মীয় বিভাজনের ভিত্তিতে সু্যোগসুবিধার রীতি বজায় থাকলে, ধর্মনিরপেক্ষতা স্রেফ ইতিহাস ও সংবিধানের পাতায় লেখা শব্দ হয়েই থেকে যায়। এর প্রমাণও রয়েছে অহরহ। গুজরাট হিংসা বা বাবরি মসজিদ থেকে শুরু করলে ফর্দের ফিরিস্তি বেশ দীর্ঘ।
সংখ্যালঘুর ওপর সংখ্যাগুরুর অধিকার ফলানো, গোটা পৃথিবীতেই নজির রয়েছে। তাই এর বিরুদ্ধে ‘প্রোপাগান্ডা’ মেপে সংখ্যালঘু তোষণও প্রচার পাওয়ার ভাল হাতিয়ার। তৃণমূলের দেখানো পথেই মাত্র কিছুদিন আগে আব্বাস সিদ্দিকির আইএসএফ-এর আত্মপ্রকাশ এবং তৃণমূল নয় কিন্তু তৃণমূলের মতো, সদ্যোজাত একটি দলের সঙ্গে জোট করে ভোটযুদ্ধে টিকে থাকার যুক্তিটা বামফ্রন্টের কাছে অমূলক ঠেকেনি।
আব্বাস সিদ্দিকির আইএসএফ তথা ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের এর মূল লক্ষ্য ছিল মুসলিম, দলিত, তফসিলি জাতির মিলিত শক্তির মুখ হিসেবে এই দলকে তুলে ধরা এবং সেকুলার ভারতে সেকুলার দলের প্রসার ঘটানো। কিন্তু তিনিই ‘সমতাকে’ গাছে বেঁধে পেটানোর হুমকি দিলেন, ফ্রান্সের ‘প্রসারের’ কল্লা কাটা দেখে আবেগে ভাসলেন। তাই তাঁর দল আর যাই হোক, ‘সেকুলার’ ফ্রন্ট নয়।
আর সেকুলার ফ্রন্টের সঙ্গে জোট করলে বামেদের ধর্মনিরপেক্ষতা নষ্ট হবে না কারণ ১৯৮৯ এবং ২০০৮ সালে লাল-গেরুয়া মিশে গিয়েছিল। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীকে হঠাতে কিংবা ইন্দো-যুক্তরাষ্ট্র নিউক্লিয়ার চুক্তির রদের বিরুদ্ধে একজোট হতে দেখা গিয়েছে তাদের। তাই বামফ্রন্ট আদপে ধর্মনিরপেক্ষ দল, এ কথা মিথ্যে। বামেদের স্লোগান ধার করে বলি, লড়াইটা জাতের নয় ভাতের হোক, ধর্মস্থান নয়, কর্ম সংস্থানের হোক।
আমি ব্যক্তিগত ভাবে বাম ঘেঁষা লোক। ধর্ম বা ধর্মনিরপেক্ষতা পেরিয়ে যদি উন্নয়ন অবদি চোখ পৌঁছায়, বুকে হাত দিয়ে বুঝুন কাকে সঙ্গ দিতে চান। আর আইএসএফ ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ পেরিয়ে যদি ‘মৌলবাদ’ ছোঁয়, বামেরা সঙ্গ ত্যাগ করবে, একজন ছদ্ম বাম-সমর্থক হিসেবে আশা রাখলাম।
(পাঠকের মতামত সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত)
কেন পাঠক বলছি?
জনতাই সব জানে। আপনিই আসলে বোঝেন কোনটা ঠিক, কোনটা বেঠিক। কার কী স্বার্থ? তাই ব্রান্ডেড বিশ্লেষক নয়, আপনার মতামতই তুলে ধরতে চায় TV9 বাংলা। এবার ভোটে আপনিই বিশ্লেষক।
লেখা পাঠানোর নিয়ম:
** ন্যূনতম ২৫০ শব্দের লেখা হতে হবে। সর্বোচ্চ ৫০০ শব্দের বেশিও না হয়।
** Unicode- ফরম্যাটে পাঠাতে হবে লেখা। স্টোরি সংক্রান্ত একটি বা একাধিক ছবি পাঠাতে হবে।
** আপনার ছবি, ঠিকানা এবং ফোন নম্বর অব্যশই পাঠাবেন।
লেখার বিষয় প্রতি সপ্তাহে জানিয়ে দেওয়া হবে।