নয়া দিল্লি: চাকরি নিয়োগ থেকে শুরু করে টেন্ডার পাস, বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগে বর্তমানে সরগরম গোটা দেশ। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তৎপরতা নিয়ে সরবও হয়েছেন বিরোধীরা। এবার এই ঘটনায় তোপ দাগলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শনিবার এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে গিয়ে বিরোধীদের উদ্দেশে কটাক্ষের সুরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আগে দুর্নীতিগুলি খবরের শিরোনাম হত। কিন্তু এখন দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দুর্নীতিবাজদের হাত মেলানো খবরের শিরোনাম হচ্ছে।” তবে এই সময়টিকে ‘শুভ সময়’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “দুর্নীতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার ঘটনায় তাঁর সরকার কালো টিকা দেওয়ার কাজ হাতে নিয়েছে।”
দুর্নীতির অবসান করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করাই তাঁর সরকারের লক্ষ্য বলেও ‘ইন্ডিয়া টুডে কনক্লেভ ২০২৩’-এ বক্তৃতায় জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, “আমাদের গণতন্ত্রের সাফল্য, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলি কিছু লোককে আঘাত করছে। সেজন্য তারা তাদের উপর হামলা করছে।” এপ্রসঙ্গেই প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই শুভ সময়ে তাঁরা ‘কালো টিকা’ দেওয়ার কাজ হাতে নিয়েছে।
দেশে গণতন্ত্র সুদৃঢ় করার পাশাপাশি গোটা বিশ্বে ভারত বিশেষ ভূমিকা পালন করতে শুরু করেছে বলে দাবি জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর দাবি, “বিভিন্ন ক্ষেত্রে গ্লোবাল চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও ভারত এগিয়ে চলেছে। ভারত যে বিশ্বে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে শুরু করেছে, সেটা বর্তমানে বিশ্বের অর্থনীতিবিদ, বিশ্লেষক, চিন্তাবিদ থেকে সকলেই মেনে নিয়েছেন।”
২০২৩ সালের প্রথম ৭৫ দিনে তাঁর সরকারের সাফল্যগুলিও এদিনের বক্তব্যে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাঁর সরকারের কাজের খতিয়ান তুলে ধরে তিনি বলেন, “২০২৩ সালের প্রথম ৭৫ দিনের মধ্যে ভারতের সবুজ বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে, কর্ণাটকের শিবমোগা বিমানবন্দর উদ্বোধন করা হয়েছে, আইআইটি ধারওয়াদ ক্যাম্পাস উদ্বোধন করা হয়েছে।” এছাড়া দরিদ্র মহিলাদের ক্ষমতায়নের ব্যাপারেও ভারত এগিয়ে চলেছে বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন। এছাড়া রেকর্ড গতিতে ১১ কোটিরও বেশি টয়লেট তৈরি করা হয়েছে। ৪৮ কোটি মানুষকে ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত করেছেন বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। আবার তাঁর সরকার কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি আড়াই লক্ষ কোটি টাকা স্থানান্তর করেছে এবং এর ফলে ক্ষুদ্র কৃষকদের বিশেষ উপকৃত হয়েছে বলেও জানান তিনি। বর্তমানে ভারত গণতন্ত্রের অন্যতম নজির হয়ে উঠেছে এবং বিশ্বকে সেটা দেখিয়েছে বলেও দাবি জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
প্রসঙ্গত, দেশের বিভিন্ন রাজ্যেই বর্তমানে শাসকদলের বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। শাসকদলের অনেকে গ্রেফতারও হচ্ছেন। এই ঘটনা কেন্দ্রের চক্রান্ত এবং কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। এদিন ইন্ডিয়া টুডে কনক্লেভ ২০২৩-এ বক্তৃত্বা দিতে গিয়ে এপ্রসঙ্গেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নাম না করে বিরোধীদের একহাত নেন বলে দাবি রাজনৈতিক মহলের।