
ক্যালেন্ডারে জাঁকিয়ে শীত আসতে এখনও দেরি রয়েছে, কিন্তু ঠোঁটের টান টান ভাব, ছাল ওঠা, এমনকি হালকা ব্যথা—সবই যেন আগেভাগেই জানান দিচ্ছে যে মরসুম পাল্টাচ্ছে। ঠোঁটের ত্বক শরীরের অন্য অংশের তুলনায় অনেক বেশি সংবেদনশীল, তাই যত্নে সামান্য গাফিলতি মানেই ফাটল ধরা ঠোঁট। তবে চিন্তা নেই, কিছু সহজ নিয়ম মেনে চললেই এই সমস্যাকে সহজেই এড়ানো যায়। নিম্নে আলোচনা করা হল কোন উপায়ে পাবেন গোলাপি ঠোঁট।
শীতের শুরুতেই বাতাসের আর্দ্রতা কমে যায়। আর ঠোঁটের জলীয় ভাব দ্রুত উবে যায়। তাই দিনে একাধিকবার লিপবাম লাগান। চেষ্টা করুন শিয়া বাটার, কোকো বাটার বা নারকেল তেলযুক্ত লিপবাম ব্যবহার করতে। রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে সামান্য ঘি বা বাদাম তেল ঠোঁটে লাগালে সকালে ঠোঁট থাকবে মোলায়েম।
ঠোঁট ফাটার অন্যতম বড় কারণ শরীরে জলের ঘাটতি। শীতের সময় অনেকেই কম জল খান। কিন্তু ভিতর থেকে আর্দ্রতা না থাকলে বাইরের যত্ন ফল দেয় না। তাই দিনে অন্তত ৭–৮ গ্লাস জল পান করুন।
শুকনো ঠোঁটে মৃত কোষ জমে থাকলে যতই লিপবাম লাগান, কোনও কাজ হবে না। এক চামচ চিনি, আধা চামচ মধু ও কয়েক ফোঁটা অলিভ অয়েল মিশিয়ে ঘরে বানান প্রাকৃতিক লিপ স্ক্রাব। হালকা হাতে ঠোঁটে ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন। এতে ঠোঁটের রক্ত চলাচলও বাড়ে আর আসে প্রাকৃতিক গোলাপি রঙ।
অনেকে ভাবেন শীতে রোদ ক্ষতিকর নয়। কিন্তু সূর্যের UV রশ্মি ঠোঁটের জন্যও সমান বিপজ্জনক। বাইরে বেরনোর আগে SPF যুক্ত লিপবাম ব্যবহার করুন। এতে ঠোঁটের কালচে ভাব ও পিগমেন্টেশন কমবে।
প্রতিদিন রাতে মধু লাগালে ঠোঁটের ফাটা জায়গা দ্রুত সারবে। মধু প্রাকৃতিক হিউমেকট্যান্ট। যা ঠোঁটের ভেতরের আর্দ্রতা ধরে রাখে। চাইলে এতে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে লাগাতে পারেন, এতে ঠোঁটের রঙও হালকা হবে।
অনেকের ঠোঁট ফাটার কারণ ঠোঁট চাটার অভ্যাস। লালা ঠোঁটকে আরও শুকিয়ে দেয়। তাই এই অভ্যাস ছাড়ুন। পাশাপাশি কৃত্রিম সুগন্ধি বা রঙযুক্ত লিপবাম ব্যবহার না করাই ভাল।
ঠোঁটের যত্ন নেওয়া মানে শুধু লিপবাম লাগানো নয়। বরং নিয়মিত আর্দ্রতা, পুষ্টি ও সুরক্ষা বজায় রাখা। শীত আসার আগেই এই ছোট্ট রুটিন শুরু করে দিন। তাহলে ঠান্ডার কনকনে সকালে হাসিটাও থাকবে নরম, উজ্জ্বল আর নিখুঁত। আর এই শীতে ঠোঁট ফাটার সমস্যায় পড়তে হবে না।