বিশ্বের অ্যালকোহলযুক্ত পানীয়গুলির মধ্যে বিয়ার অন্যতম। জল ও চায়ের পরেই সামগ্রিকভাবে তৃতীয় সর্বাধিক জনপ্রিয় পানীয় এটি। পরিমিত পরিমাণে খাওয়া হলে বিয়ার স্বাস্থ্যের জন্য উপকারীও বটে। এর মানে হল, মহিলাদের জম্য একটি ১২ আউন্সের বিয়ার ও পুরুষদের জন্য দুটি। তবে এটি শুধু পানীয় হিসেবে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী তাই নয়, চুল ও ত্বকের জন্যও অত্যন্ত উপকারী।
অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও অ্যামিনো অ্যাসিড সমৃদ্ধ হওয়ায় বিয়ার ত্বক ও চুলকে উজ্জ্বল ও ঝলমলে করতে সাহায্য করে। বিয়ারের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন বি, প্রোটিন, সেলেনিয়াম, পটাসিয়াম, আয়রন, জিঙ্ক ও ম্যাগনেসিয়াম। যা ত্বকের জন্য বিভিন্ন দিক থেকে উপকারী।
স্বাস্থ্যকর ও ঝলমলে চুলের জন্য
দুর্বল চুল খুব তাড়াতাড়ি ভেঙে ঝরে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়া নিস্তেজ ও অপুষ্টিতে ভরা চুলকে সুস্থ ও মজবুত করতে বিয়ার খুব কার্যকরী। এটি দারুণ হেয়ার টনিক হিসেবে কাজ করে। বিয়ারে থাকা প্রোটিন ক্ষতিগ্রস্ত চুলের কিউটিকল মেরামত করতে দারুণ উপকারী। এছাড়া চুলের ফলিকলকে পুষ্টি জোগাতেও সহায়ক। চুলকে গোড়া থেকে মজবুত করতে ও অতিরিক্ত চুল পড়া রোধ করে। বিয়ার চুলের আগায় ফেটে যাওয়ার সমস্যা ও নিয়ন্ত্রণ করতেও সাহায্য করে।
– চুলে শ্যাম্পু করার পর গোড়া থেকে শেষ পর্যন্ত ফ্ল্যাট বিয়ার লাগান।
– ৫ মিনিটের জন্য বৃত্তাকার গতিতে ব্যবহার করে আপনার মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করুন।
– এটি আরও ৫ মিনিটের জন্য অপেক্ষা করুন। তারপর সাধারণ জল দিয়ে আপনার চুল ভালভাবে ধুয়ে ফেলুন।
– নরম ও ঝলমলে চুল পেতে সপ্তাহে এক বা দুবার এটি করুন।
ফ্ল্যাট বিয়ার পেতে একটি বিয়ারের ক্যান বা বোতল প্রায় ১০ ঘণ্টা খোলা রেখে দিন বা মাইক্রোওয়েভে বিয়ার গরম করুন। তবে মাইক্রোওয়েভে গরম করার জন্য একটি কাপে বা পাত্রের মধ্যে ঢেলে তবেই আভেনের ভিতর গরম করুন। ভুলেও যেন মাইক্রোআভেনে ক্যান রাখবেন না।
চুলের কন্ডিশনার হিসেবে বিয়ার কেমন
সিল্কি চুলের জন্য ভাল কন্ডিশনার প্রয়োজন। বাড়িতে বিয়ারের বোতল থাকলে আর দামি কন্ডিশনার কেনার দরকার নেই। বিয়ার প্রাকৃতিকভাবে হেয়ার কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে। প্রচুর পরিমাণে রয়েছে ভিটামিন বি, ইস্ট, যা চুলকরে নরম ও চকচকে করে তুলতে সাহায্য করে।
– যথারীতি আপনার চুল শ্যাম্পু করুন, তারপর আপনার চুলে অল্প পরিমাণ ফ্ল্যাট বিয়ার স্প্রে করুন। আপনার চুল নিজে থেকেই শুকাতে দিন। শুকিয়ে গেলে আপনার চুল মসৃণ ও চকচকে দেখাবে।
– বিকল্পভাবে, আপনি ব্লো-ড্রাইং বা স্টাইল করার আগে আপনার চুলে অল্প পরিমাণ বিয়ার স্প্রে করতে পারেন।
– চুল ধোয়ার জন্য, ১ কাপ ফ্ল্যাট বিয়ার এবং জল মেশান। ২ টেবিল চামচ আপেল সিডার ভিনেগার তাতে যোগ করুন। শ্যাম্পু করার পরে ফের ভাল করে চুল ধোওয়ার জন্য় বিয়ার ব্যবহার করুন। একটু বিয়ার স্প্রে করার পরে আপনার চুল ধোয়ার দরকার নেই, কারণ আপনার চুল শুকিয়ে গেলে বিয়ারের গন্ধ চলে যাবে।
সতেজ ও উজ্জ্বল ত্বকের জন্য
বিয়ারের অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি ফ্রি র্যাডিক্যালের নেগেটিভ প্রভাবগুলির বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং ত্বকের অকাল বার্ধক্য প্রতিরোধ করে। এছাড়াও, এতে থাকা বেশ কয়েকটি ভিটামিন এবং খনিজ ত্বককে টান টান করতে ,বলিরেখা এবং বার্ধক্যের অন্যান্য লক্ষণ কমাতে সহায়তা করে।
– ১ টেবিল চামচ বিয়ার, ১ ডিমের সাদা অংশ এবং ৩ বা ৪ ফোঁটা বাদাম তেল একসঙ্গে মেশান।
– আপনার মুখ এবং ঘাড়ে সমানভাবে ফেস মাস্ক লাগান।
– শুকাতে দিন, তারপর গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
– ত্বক শুষ্ক হলে আপনার নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার লাগান।
– সপ্তাহে একবার এই ফেস মাস্ক ব্যবহার করুন।
আরও পড়ুন: Premature Hair Greying: অকালে চুল পেকে যাওয়া থেকে মুক্তি পেতে মেনে চলুন এই ৬ ঘরোয়া উপায়