
আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রে সবসময় ঘিয়ের গুরুত্ব বেশি। পেটের সমস্যা দূর করা, রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলা থেকে শুরু করে ত্বকের যত্ন নিতে সাহায্য করে ঘি। এমনকী চুলের হাজারো সমস্যার সমাধান লুকিয়ে রয়েছে ঘিয়ের মধ্যে। ঘি যেমন ত্বককে আর্দ্রতা ও পুষ্টি জোগায়, একইভাবে, চুলের ক্ষয়কেও প্রতিরোধ করে। আয়ুর্বেদের মতে, ঘি ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের সমৃদ্ধ উৎস। এই কারণেই ঘিকে তেল হিসেবে ব্যবহার করা হয়। আপনি চুলের সমস্যাতেও ঘি ব্যবহার করতে পারেন।
চুলের দেখভালে ঘিয়ের গুরুত্ব-
আর্দ্রতা জোগায়: ঘিয়ের মধ্যে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন এ, ডি, ই এবং কে২ রয়েছে। এটি চুলের প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে। চুলকে আর্দ্রতা জোগাতে সাহায্য করে ঘি। অনেকেই স্প্লিট-এন্ডের সমস্যায় ভোগেন। শুষ্ক ও অস্বাস্থ্যকর চুলে এমন সমস্যা বেশি দেখা যায়। কিন্তু ঘি ব্যবহার করলে আপনি এই ধরনের সমস্যা থেকে সহজেই মুক্তি পাবেন।
খুশকি দূর করে: খুশকির সঙ্গে লড়াই করতেও সাহায্য করে ঘি। স্ক্যাল্পে ফাঙ্গাস সংক্রমণের কারণে খুশকির সমস্যা দেখা দেয়। আপনি যদি গরুর দুধে তৈরি দেশি ঘি ব্যবহার করেন, এতে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টি-অ্যালার্জিক উপাদান। তাই ঘি স্ক্যাল্পকে যে কোনও ধরনের সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে। পাশাপাশি খুশকির সমস্যা দূর করে।
চুলের বৃদ্ধি ঘটায়: চুল পড়াকে রোধ করে ঘি। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের পাশাপাশি ঘিয়ের মধ্যে ক্যারোটেনয়েড, লিনোলিক ফ্যাটি অ্যাসিড ও ভিটামিন এ, ই রয়েছে। এগুলো চুলের বৃদ্ধি ঘটাতে সাহায্য করে। এসব উপাদান চুলের ফলিকলকে মজবুত করে তোলে। এছাড়া ঘি স্ক্যাল্পে রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে এবং এতে কমে চুল পড়ার সমস্যা। পাশাপাশি নতুন চুল গজাতেও সাহায্য করে।
চুলের যত্নে যে উপায়ে ঘি ব্যবহার করবেন-
১) স্প্লিট-এন্ডের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ১ চামচ ঘিয়ের সঙ্গে ১ চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিয়ে চুলে মাখুন। এতে আপনি ভিটামিন ই-এর উপকারিতাগুলো পাবেন।
২) চুলের বৃদ্ধি ঘটাতে ঘিয়ের ওভারনাইট মাস্ক ব্যবহার করুন। পেঁয়াজের রস কিংবা তিলের তেলের সঙ্গে ঘি মিশিয়ে নিন। রাতে এটি চুলে লাগিয়ে ঘুমিয়ে পড়ুন। পরদিন সকালে শ্যাম্পু করে নিন।
৩) খুশকির সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সমপরিমাণ ঘি ও আমন্ড অয়েল একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। এবার এই তেলটি স্ক্যাল্পে ভাল করে মালিশ করুন।
৪) ঘিকে আপনি লিভ-ইন কন্ডিশনার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। অল্প ঘি নিয়ে চুলে লাগিয়ে নিলেই কাজ শেষ। এটি চুলকে আর্দ্রতা জোগাতে এবং ফ্রিজিনেস দূর করতে সাহায্য করবে।