চুলের যত্নের ক্ষেত্রে সেই প্রাচীন কাল থেকে ঘরোয়া প্রতিকারের ব্যবহার চলে আসছে। মা, ঠাকুমারাও চুলের যত্নে এই সব ঘরোয়া টোটকাকেই বেশি প্রাধান্য দিয়েছেন। উপকারও পেয়েছেন। আপনি যদি বাজারের উপলব্ধ প্রসাধনী পণ্য ব্যবহার করতে না চান তাহলে, ট্রাই করতে দেখতে পারেন ঘরোয়া প্রতিকারগুলি।
আমরা যাকে ডিআইওয়াই (DIY) মাস্ক বলি, সেগুলি সহজেই আপনি বাড়িতে তৈরি করতে পারবেন। যেহেতু এগুলি ভেষজ উপাদান দিয়ে তৈরি তাই কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও পড়বে না। উপরন্ত আপনার চুল হয়ে ওঠে মজবুত ও সুন্দর। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই হেয়ার মাস্ক গুলো সম্পর্কে…
লম্বা ও ঘন চুলের জন্য ব্যবহার করুন দই, আমলকী ও জবা ফুলের তৈরি হেয়ার মাস্ক
দই, আমলকী ও জবা ফুলের গুঁড়ো সম পরিমাণে নিয়ে একটি পেস্ট বানিয়ে নিন। এবার মিশ্রণটি আপনার সমগ্র স্ক্যাল্পের ওপর প্রয়োগ করুন। ৩০ মিনিটের জন্য এটি মাথায় রেখে দিন এবং তারপর শ্যাম্পু করে নিন। জবা ফুলের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে অ্যামিনো অ্যাসিড রয়েছে, যা একটি বিশেষ ধরনের কেরাটিন প্রোটিন তৈরি করে। এটি চুলের বৃদ্ধিতে সহায়ক। অন্যদিকে, আমলকীর মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন এবং মিনারেক রয়েছে, যা স্ক্যাল্পে রক্ত চলাচলকে স্বাভাবিক ও সচল রাখে। তার সঙ্গে এটি চুলের ক্ষয়কে কমায়। দইয়ের এমন কিছু ভাল ব্যাকটেরিয়া রয়েছে যা স্ক্যাল্পের সংক্রমণ প্রতিরোধ করে এবং চুলের কন্ডিশনার হিসাবে কাজ করে।
মসৃণ ও মজবুত চুলের জন্য মেথি ও দই ব্যবহার করুন
আগের দিন রাতে ৩-৪ চামচ মেথি জলে ভিজিয়ে রাখুন। পরের দিন সকালে ওই মেথির সঙ্গে ৫ চামচ দই মিশিয়ে মিক্সিতে এক সঙ্গে বেটে নিন। এবার এই মিশ্রণটি চুলের গোড়া থেকে ডগা অবধি লাগান এবং স্ক্যাল্পে ম্যাসাজ করুন। এটি এক ঘণ্টার জন্য রেখে দিন। এবং তারপর ঈষদুষ্ণ জলে শ্যাম্পু করে নিন। মেথি দানার মধ্যে প্রোটিন, আয়রন, ফ্ল্যাভোনয়েড এবং স্যাপোনিনের ভাল উৎস রয়েছে যা প্রদাহ-বিরোধী প্রভাব ফেলে এবং চুলকে গোড়া থেকে মজবুত করে তোলে। অন্যদিকে, দই চুলকে কোমল, মসৃণ ও উজ্জ্বল করে তোলে।
চুল পড়া প্রতিরোধ করার জন্য নারকেল তেল দিয়ে কারি পাতা ও জবা ফুলের তৈরি হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করুন
একটি গরম প্যানে দু চামচ নারকেল তেল এবং ১০-১২ টা কারি পাতা ও পরিমাণ মত জবা ফুলের গুঁড়ো যোগ করুন। মিশ্রণটি ফুটে গেলে গ্যাস বন্ধ করে কিছুক্ষণ ঠাণ্ডা করে নিন। এবার এই মিশ্রণটি চুলের স্ক্যাল্পে প্রয়োগ করুন এবং ম্যাসেজ করতে থাকুন। এবার এটি ৪৫ মিনিটের জন্য রেখে দিন এবং একটা হালকা শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। কারি পাতার মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, প্রোটিন, বিটা-ক্যারোটিন এবং আয়রন রয়েছে যা চুলের বৃদ্ধি সহায়ক। নারকেল তেলের মধ্যে ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ভিটামিন রয়েছে যা চুলের টেক্সচার বৃদ্ধি করে এবং চুলকে গোড়া থেকে মজবুত করে তোলে।
আরও পড়ুন: ত্বকে এই উপাদানগুলি ব্যবহার করার আগে জেনে নিন কী ক্ষতি হতে পারে আপনার