Social Media Skin Problem: সোশ্যাল মিডিয়া দেখে ত্বক ‘নিখুঁত’ করছেন, কী বলছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক?

megha |

Aug 04, 2022 | 12:22 PM

Skin Care Tips: ‘সোশ্যাল মিডিয়া স্কিন প্রবলেম’ নিয়ে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ কৌশিক লাহিড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় TV9 বাংলার তরফে। গতকালও যাঁর মতামত শেয়ার করা হয়েছে আপনাদের সঙ্গে। আজ পরবর্তী পর্ব।

Social Media Skin Problem: সোশ্যাল মিডিয়া দেখে ত্বক ‘নিখুঁত’ করছেন, কী বলছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক?

Follow Us

মেঘা মণ্ডল

আজকাল নামী-দামি ব্র্যান্ডগুলো তাদের পণ্য ব্যবহার ও স্কিন কেয়ার নিয়ে রিলস তৈরি করছে সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারদের সাহায্যে। সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সররাও প্রতিনিয়ত ভিডিয়ো, ভ্লগ তৈরি করে যাচ্ছেন স্কিন কেয়ার পণ্যের রিভিউ, ঘরোয়া প্রতিকার ইত্যাদি নিয়ে। কিন্তু আপনার ত্বকের জন্য কোনটা ঠিক, আর কোনটা নয় এটা বুঝবেন কী করে? এই অভিনব সমস্যা, যার নাম ‘সোশ্যাল মিডিয়া স্কিন প্রবলেম’, তা নিয়ে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ কৌশিক লাহিড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় TV9 বাংলার তরফে। গতকালও যাঁর মতামত শেয়ার করা হয়েছে আপনাদের সঙ্গে। আজ পরবর্তী পর্ব।

বেশিরভাগ মানুষ সমস্যাটা টের পান যখন, ততক্ষণে দুর্ভাগ্যবশত বেশ কিছুটা দেরি হয়ে গিয়েছে। বোঝেন যখন ইতিমধ্যে তিনি নিজের ত্বকের ক্ষতি করে ফেলেছেন অনেকটাই। হয়তো তাঁর ওই নির্দিষ্ট প্রসাধনী পণ্য ব্যবহার করার কোনও প্রয়োজন ছিল না—কিন্তু ইনফ্লুয়েন্সারদের ভিডিয়ো দেখে প্রলোভনে পা দেন। তিনি ওই পণ্য ব্যবহার করেন এবং ত্বকের ক্ষতি করেন। ইনফ্লুয়েন্সারদের এই ধরনের ভিডিয়ো আদতে মানুষকে প্রতারিত করে, মত বিশিষ্ট চিকিৎসকদের। তাঁরা নিজেরা উপার্জন করার জন্য, জনপ্রিয় হওয়ার জন্য এটা করেন—অভিযোগ করেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা।

প্রশ্ন: একদিকে ব্র্যান্ডেড নাইটক্রিমও ব্যবহার করছেন আবার উইকএন্ডে হোমমেড ফেসপ্যাক মাখছেন। এতে ত্বকের উপর কী প্রভাব পড়ে?

এই দু’টো জিনিসের মধ্যেই কিছু রাসায়নিক উপাদান রয়েছে যেগুলো আমাদের ত্বকের উপর প্রতিক্রিয়া ফেলে। এমনও হতে পারে কারও ক্ষেত্রে নামী ব্র্যান্ডের প্রসাধনী পণ্য ত্বকের উপর ভাল প্রভাব ফেলছে। আবার অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, অ্যালোভেরা, হলুদের মতো প্রাকৃতিক উপাদানগুলোর কারণেও ত্বকে র‍্যাশ দেখা দিচ্ছে। সুতরাং এটা ভেবে রাখার কোনও কারণ নেই যে, ভেষজ উপাদান মানেই ত্বকের জন্য ভাল। আবার এটাও নয় যে আয়ুর্বেদের কোনও গুণাগুণই নেই। এগুলো ব্যক্তির ত্বকবিশেষে নির্ভরশীল।

প্রশ্ন: অ্যান্টি-এজিং ক্রিম কি সত্যিই ত্বকের বার্ধক্য প্রতিরোধ করতে পারে?

এজিং বিষয়টা অনেক কিছুর উপর নির্ভরশীল। যেমন পরিবারে তাড়াতাড়ি বার্ধক্য এলে ত্বক কুঁচকে যাওয়া, ফাইনলাইন, বলিরেখা দেখা দেয়। আবার নেপালি, ভুটানিদের মধ্যে দ্রুত ত্বকের বার্ধক্য দেখা দেয় আঞ্চলিক কারণে। ভারতীয়দের ত্বকে তুলনামূলকভাবে দ্রুত বার্ধক্য আসে না। দ্রুত ত্বকে বার্ধক্য আসার পিছনে ধূমপান, সূর্যালোক, অনিয়ন্ত্রিত জীবনধারা বিশেষভাবে দায়ী। কিন্তু চিরকাল যৌবন ধরে রাখা যায় না। সুতরাং অ্যান্টি-এজিং ক্রিম কোনওভাবেই আপনার ত্বককে কুঁচকে যাওয়া থেকে আটকাতে পারবে না। বাজারে কিছু-কিছু ওষুধ পাওয়া যায় এবং এমন বেশ কিছু ট্রিটমেন্ট রয়েছে, যা ত্বককে কিছু সময়ের জন্য টানটান রাখতে সাহায্য করে।

প্রশ্ন: নিস্তেজ ত্বককে গ্লো করানোর জন্য সিরামের ব্যবহার, এই ধারণাটা কতটা যুক্তিযুক্ত?

সিরাম ব্যবহারে যদি ত্বকের উপর কোনও কু-প্রভাব না পড়ে তাহলে অবশ্যই ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু কোনও পণ্যই ‘নিখুঁত’ ত্বক প্রদান করবে না। এগুলো সাময়িকভাবে ত্বককে টানটান করে তোলে।

প্রশ্ন: বিজ্ঞাপন দেখে ঘনঘন প্রসাধনী দ্রব্য পরিবর্তন… কতটা ক্ষতি হয় ত্বকের, চুলের?

ঘনঘন প্রসাধনী পণ্য পরিবর্তন করা একদমই উচিত নয়। যদি কম দামের পণ্যই আপনার ত্বকে সয়ে যায়, তাহলে সেটাই ব্যবহার করুন। হতেই পারে আপনার জন্য ৫০টাকার সাধারণ প্রসাধনী পণ্য যে কাজটা করে, সেটা ৫০০ টাকার ব্র্যান্ডেড পণ্য করতে পারল না। সুতরাং ঘনঘন প্রসাধনী পণ্য একদম পরিবর্তন করবেন না। যদি ত্বক বা চুলের সমস্যা দেখা দেয় প্রয়োজনে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞদের কাছে যান, চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। ইনফ্লুয়েন্সারদের ভিডিয়ো দেখে একাধিক প্রসাধনী পণ্য ব্যবহারের কোনও প্রয়োজন নেই।

প্রশ্ন: ব্রণর সমস্যায় নাজেহাল ১৫ থেকে ৩০ অনেকেই। কারও হরমোনজনিত সমস্যা, কারও পিসিওএস-এর সমস্যা, কারও খুশকি, আবার কারও ত্বকের উপর প্রসাধনীর পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া। কিন্তু এখানে সবাই একই পণ্য ব্যবহার করে চলেছে দিনের পর দিন। সমস্যার সমাধান তো হচ্ছেই না, উলটে কতটা প্রভাব পড়ে ত্বকের উপর? 

বয়ঃসন্ধিকালে হওয়া ব্রণ ৯০ ভাগ সময়ের সঙ্গেই নিরাময় হয়ে যায়। ২১-৩০ বা তার বেশি বয়সের ব্যক্তির ক্ষেত্রে যদি ব্রণর সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে সচেতন হওয়া জরুরি। Adult Acne-এর পিছনে নানা কারণ দায়ী। বিশেষত মহিলাদের ক্ষেত্রে পিসিওএস-এর সমস্যা মারাত্মক ভূমিকা পালন করে। এই পিসিওএস-এর সমস্যার প্রধান লক্ষণগুলো প্রাথমিকভাবে ত্বকে প্রকাশ পায়। এই ক্ষেত্রে নানা ধরনের প্রসাধনী পণ্য ব্যবহারের বদলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

আবার অনেকক্ষেত্রে ক্রমাগত প্রসাধনী পণ্য ব্যবহারের কারণেও ব্রণর সমস্যা দেখা দেয়। মুখে উপর ক্রমাগত প্রসাধনী পণ্য ব্যবহার করলে রোমছিদ্রগুলো বন্ধ হয়ে যায়। এই কারণেই ব্রণর সমস্যা দেখা দেয়। তাই-ই ঘনঘন প্রসাধনী পণ্য পরিবর্তন বা একই সঙ্গে নানা ধরনের প্রসাধনী পণ্য ব্যবহার করা উচিত নয়।

প্রশ্ন: ত্বককে ভাল রাখতে গেলে যে ন্যূনতম যত্নগুলো নেওয়া উচিত, সেগুলো কী-কী?

ত্বককে বিরক্ত না করাই ভাল। ত্বক নিজের যত্ন নিজেই করে নেয়। একটা সানস্ক্রিন ও একটা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করাই ত্বকের জন্য যথেষ্ট। আর মুখটা সাধারণ জল দিয়ে ধুয়ে নিন। এমনকী ফেসওয়াশ, ক্লিনজার, স্ক্রাবার-এরও খুব একটা দরকার নেই। বরং আপনি যদি বেশি ত্বকের উপর প্রসাধনী পণ্য ব্যবহার করেন, ত্বক কালো হতে শুরু করবে। ত্বকের উজ্জ্বলতা হারিয়ে যাবে। এমনকী ত্বকের উপর লোফার (সাবান মাখার জালি), বডি স্ক্রাব—এইসব পণ্য ব্যবহার না করাই ভাল।

Next Article