বলিউডে বাঙালির ঘনঘটা বেশ ভালই। গানের জগত থেকে অভিনয়, সর্বত্র বাঙালি প্রতিভাধরদের চলাচল। বলিউডে বং সৌন্দর্যের (Beauty) কদরও রয়েছে। গ্ল্যামার দুনিয়ায় বিপাসা বসুর (Bipasa Basu) নাম অন্যতম। বলিউডে অন্যতম হট গার্ল হিসেবে পরিচিত এই তিলোত্তমার সৌন্দর্যের প্রেমে পড়েছেন প্রথম সারির অভিনেতারাও। মা হওয়ার পরেও বিউটি আইকনের সৌন্দর্যে কোনও রকম ত্রুটি দেখা যায়নি। উজ্জ্বল, মসৃণ আর সুন্দর ত্বকের (Bright Skin) জন্য বিপাসা কীভাবে রুপচর্চা করেন, সে প্রশ্ন অনেকেরই মনে। তবে বলিউডের সুন্দরীরা নিজেদের ত্বকের জন্য কীভাবে যত্ন নেন, কী কী প্রোডাক্ট ব্যবহার করেন তা জানার কৌতূহল প্রায় সকলেরই। ইন্সটাগ্রাম, ফ্যাশন ম্যাগাজিনের পাতায় অভিনেত্রীরা নিজেদের সৌন্দর্যের সিক্রেট (Beauty Secret) প্রকাশ্যে আনেন। অনেকেরই ধারণা সেলিব্রিটি মানেই ব্যয়বহুল চিকিত্সার মাধ্যমে নিজেদের রূপ ধরে রাখেন। কিন্তু সেলিব্রিটিরা বলছেন অন্য কথা। ঘরের তৈরি ফেসপ্যাক, সহজ ও কার্যকর কিছু টোটকাতেই ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে পছন্দ করেন তারা। বেশিরভাগ সেলিব্রিটিই ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে বেসনকেই হাতিয়ার করেছেন। সে কথা সোশ্যাল মাধ্যমেও অকপট স্বীকার করেছেন। বিপাসা বসুও ব্যতিক্রম নন। প্রাকৃতিকভাবে ত্বকের যত্ন নিতে বেসনের ফেসপ্যাক ব্যবহার করেন এই বং নায়িকাও।
রূপচর্চায় বেসন
ঐতিহ্যগতভাবে, বেসন সাধারণত ভারতীয় রান্নায় ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়। হালুয়া, লাড্ডু, পকোড়া ইত্যাদি তৈরিতে বেসন ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সাধারণত ছোলাকে মিহি করে পেস্ট করলে বেসন তৈরি করা হয়। ভারতীয়, পাকিস্তানি ও বাংলাদেশি খাবারে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। বেসনে রয়েছে অনেক স্বাস্থ্যকর উপকারিতা। এতে রয়েছে উচ্চ প্রোটিন সামগ্রী, অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড যেমন লিনোলিক এবং ওলিক অ্যাসিড এবং ভিটামিন যেমন রিবোফ্লাভিন, নিয়াসিন, ফোলেট এবং বিটা-ক্যারোটিন।
সব ধরনের ত্বকে কাজ করার ক্ষমতা থাকায় বেসন হল সর্বোত্তম ক্লিনজার। নিখুঁত সৌন্দর্য ফর্মুলা তৈরি করতে শুধুমাত্র বেসন দিয়ে বা বেসনের সঙ্গে আরও কিছু ভেষজ উপাদান ব্যবহার করে রূপচর্চায় কাজে লাগানো যেতে পারে। এখানে তিনটি উপায়ে ত্বকে বেসন ব্যবহার করতে পারেন।
ত্বকের যত্নে বেসন ব্যবহারের ৩টি ঘরোয়া উপায়
ব্রণর দাগ থেকে মুক্তি পেতে বেসনের ফেসপ্যাক কীভাবে বানাবেন?
– একটি পাত্রে ১ টেবিলস্পুন বেসন, ১ টেবিলস্পুন হলুদ, ১-২ টেবিলস্পুন তাজা দই নিয়ে ভাল ভাবে মিশিয়ে নিন।
-ভাল করে পেস্ট বানিয়ে যেখানে যেখানে ব্রণর দাগ রয়েছে, সেখানে সেখানে এই পেস্ট প্রয়োগ করুন।
– সম্পূর্ণ শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
– সপ্তাহে যদি প্রতিদিনই ব্যবহার করেন, তাহলে কয়েকদিনের মধ্যেই দাগ মিলিয়ে যেতে পারে। বেসনে রয়েছে জিঙ্ক, তাই ব্রণর পর যে সাদা বা কালো দাগ থাকে, তা উধাও হতে পারে।
মসৃণ ত্বকের জন্য
– ২ টেবিলস্পুন বেসনের সঙ্গে ১ টেবিলস্পুন দই বা ২টেবিলস্পুন দুধ মেশান।
– সব উপকরণগুলি একসঙ্গে মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। একপর গোটা মুখের ত্বকে লাগিয়ে নিন।
– ২০ মিনিট পর ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
– কখনও স্ক্রাবারের মত এই পেস্ট ব্যবহার করবেন না। ত্বক শুকিয়ে গেলে জল দিয়ে ধুয়ে নিন।
– বেসনের ফেস প্যাকগুলি ত্বকের সিবামের মাত্রার ভারসাম্য বজায় রাখতে দারুণ কাজে দেয়। ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা বজায় রেখে অতিরিক্ত তেল অপসারণ করতে সাহায্য করে। এর ফলে ত্বককে নরম ও মসৃণ করতেও সাহায্য করে।
সতেজ ও সুন্দর ত্বকের জন্য
– সুন্দর ও সতেজ ত্বকের জন্য একটি পাত্রে মধ্যে ২টেবিলস্পুন বেসনের সঙ্গে ২ টেবিলস্পুন শসার রস নিন। এবার তাতে ৫ ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে নিন।
– ফেসপ্যাক তৈরি হলে মুখ ও ঘাড়ে সমানভাবে পেস্ট প্রয়োগ করে নিতে পারেন।
– ৩০ মিনিট পর শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
– প্রাকৃতিক এক্সফোলিয়েটর হিসাবে, বেসন মৃত ত্বকের কোষগুলিকে সরিয়ে দেয়। ত্বকের নীচে থাকা একটি উজ্জ্বল, স্বাস্থ্যকর স্তরটি সামনে আনতে সাহায্য করে।
তবে প্রতিদিন বেসনের ফেসপ্যাক ব্যবহার করা উচিত নয়। কারণ রোজ বেসনের ফেসপ্যাক ব্যবহার করলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। যদি শুষ্ক ত্বক হয় তবে এটি সপ্তাহে ২-৩ বার ব্যবহার করতে পারেন। আর যদি তৈলাক্ত ত্বক হয় তবে আপনি এটি সপ্তাহে ৩-৪ বার ব্যবহার করতে পারেন।
(Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।)