কোভিড পরবর্তী সময়ে ফ্যাশানে এসেছে পরিবর্তন। পরিবর্তন এসেছে রূপচর্চাতেও। সামগ্রিক ভাবে পরিবর্তন এসেছে অর্থনীতিতে। মানুষের হাতে টাকা কমেছে। রোজকার খাওয়া-পরা আর মাথার উপর ছাদ তৈরি করতেই ব্যতিব্যস্ত মানুষ। জামাকাপড় কেনা বা প্রসাধনী সামগ্রী কেনায় অনেকেই অতিরিক্ত আর অপচয় করতে চাইছে না। বরং মানুষ অনেক বেশি মিনিম্যালিজ়মে বিশ্বাসী হয়েছে। সেই সঙ্গে জোরদার হয়েছে পরিবেশ রক্ষাও। ফলে ভেগান প্রোডাক্ট, আয়ুর্বেদ এই সবের চলও বেড়েছে। মানুষ এখন অনেক বেশি জোর দিচ্ছেন ভাল থাকায়।
সিন্থেটিক ফর্মুলা নয়, বর্তমানে এই সচেতন ক্রেতারাই ঝুঁকছেন ট্রান্সপারেন্ট, ক্লিন বিউটি ব্লেন্ডসের দিকে। যেহেতু এখন কোভিড-যুগে হ্যান্ড হাইজিনের উপর আমরা সকলেই জোর দিচ্ছি, সেখানেও ন্যাচরাল ক্লেনজ়ার ও হ্যান্ড ক্রিমেরই পাল্লা ভারী। শুধুমাত্র কোন কোন প্রডাক্ট ট্রেন্ডে আছে, সেই হিসেবে কিনলে চলবে না। বরং, স্লো বিউটির মূল কথাই হল পরিবেশ-সহায়ক সাসটেনেবল প্রডাক্ট বেছে নেওয়া। স্কিন কেয়ারের জন্য ন্যাচরাল অয়েল বা প্ল্যান্ট এক্সট্র্যাক্ট-যুক্ত প্রডাক্ট, রিসাইকলড প্যাকেজিং, প্রডাক্ট আপসাইক্লিংও এই স্লো বিউটি কনসেপ্টের অন্তর্গত।
কোনও কিছু ট্রেন্ডে আছে বলেই যে তা কিনে নিচ্ছেন এমন টা একেবারেই নয়। বরং দাম দেখে তবেই কিনতে আগ্রহী। দু-দিনেই কাজ হয়ে যাবে এরকম কোনও কিছুও মানুষ চাইছেন না। চটজলদি যে কোনও ফল পাওয়া যায় না একথা মানুষ এখন বিশ্বাস করতে শিখেছেন। স্কিন সেল রিনিউয়ালে অন্তত ২৮ দিন মতো সময় লাগে। তাই, ঘনঘন প্রডাক্ট বদলালে ফল পাওয়া যায় না।
একগাদা ক্রিম লোশন মেখে কোনও লাভ হয় না। বরং যত বেশি ঘরোয়া প্রোডাক্ট ব্যবহার করা যায় ততই ভাল। আয়ুর্বেদ, ঘরোয়া টোটকার তাই এখন এত বেশি রমরমা। আগেকার সেই চিরাচরিত কাঁচা দুধ, কাঁচা হলুদ, বেসন, মধুই ফিরে এসেছে এখনের রূপচর্চায়। এতে কাজ দেরীতে হলেও কোনও রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে না। মানুষ এখন নিজেকে ভালবাসতে শিখেছে। পরিবেশকে ভালবাসতে শিখেছে। আসলে কোভিড আমাদের অনেক কিছুই শিখিয়ে দিয়েছে। তাই ক্লাসিক এবং অরগ্যানিকই এখন প্রথম পছন্দ। একগাদা লোশন বা ক্রিম নয়, ‘লেস ইজ় মোর’, এই মন্ত্রে বিশ্বাসী হতে চাইছেন মানুষ।