Cracked Heels Care: ফাটা গোড়ালির ব্যথায় কাবু? বিদায় জানান যন্ত্রণাকে, কাজে লাগান এই ঘরোয়া টোটকা
সারা বছর ধরে পায়ের যত্ন নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। শীতে সেই প্রয়োজন আরও বেশি হয়ে পড়ে। আমাদের শরীরের সমস্ত ভার বহন করে পা, কিন্তু প্রায়শই তা অবহেলিত থেকে যায়। যার ফলস্বরূপ দেখা দেয় ফাটা গোড়ালির সমস্যা।
সারা বছর ধরে পায়ের যত্ন নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। শীতে সেই প্রয়োজন আরও বেশি হয়ে পড়ে। আমাদের শরীরের সমস্ত ভার বহন করে পা, কিন্তু প্রায়শই তা অবহেলিত থেকে যায়। যার ফলস্বরূপ দেখা দেয় ফাটা গোড়ালির (Cracked Heels) সমস্যা। এটি কেবল দেখতেই খারাপ লাগে না, অনেক সময় এই ফাটল গভীর হয়ে ব্যথা ও রক্তপাতের কারণ হতে পারে। শুষ্ক আবহাওয়া, দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা, ভুল জুতো পরা অথবা শরীরে ভিটামিন ও মিনারেলের অভাব এর প্রধান কারণ। বাজারজাত রাসায়নিকযুক্ত ক্রিম ব্যবহার করার আগে, কেন না একবার ভরসা করা যাক আমাদের রান্নাঘরের সহজলভ্য উপাদানগুলোর উপর? ফাটা গোড়ালি সারিয়ে মসৃণ ও সুন্দর পা পেতে নিম্নলিখিত ঘরোয়া উপায়গুলি অবলম্বন করতে পারেন।
১. উষ্ণ জল ও সাবানের ফুট-সোক
উপকরণ: উষ্ণ জল, সামান্য শ্যাম্পু বা তরল সাবান, ১ চামচ নুন (ইচ্ছে হলে)।
পদ্ধতি: একটি পাত্রে উষ্ণ জল নিয়ে তাতে সাবান মিশিয়ে নিন। এই জলে আপনার পা ১৫-২০ মিনিট ডুবিয়ে রাখুন। জল গোড়ালির চামড়াকে নরম করে দেবে। এরপর একটি পিউমিস স্টোন বা ফুট স্ক্রাবার ব্যবহার করে গোড়ালির শক্ত ও মৃত ত্বক আলতো করে ঘষে তুলে ফেলুন। এরপর পা শুকিয়ে ময়েশ্চারাইজার লাগান।
২. মধু ও গোলাপ জলের ম্যাজিক
উপকরণ: ২ চামচ মধু, ১ চামচ গোলাপ জল।
পদ্ধতি: মধুর মধ্যে প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক ও ময়েশ্চারাইজিং গুণ রয়েছে। মধু ও গোলাপ জল একসঙ্গে মিশিয়ে ফাটলগুলিতে লাগান। ২০ মিনিট রেখে উষ্ণ জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বককে নরম ও আর্দ্রতাযুক্ত রাখে। রাতে ঘুমনোর আগে ব্যবহার করলে দ্রুত উপকার পাবেন।
৩. ভেসলিন ও লেবুর রসের ব্যবহার
উপকরণ: ১ চামচ ভেসলিন (পেট্রোলিয়াম জেলি), ২-৩ ফোঁটা লেবুর রস।
পদ্ধতি: ভেসলিন ও লেবুর রস মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। রাতে ঘুমানোর আগে পা পরিষ্কার করে এই মিশ্রণটি ফাটলগুলোর উপর পুরু করে লাগিয়ে দিন। এরপর একটি মোজা পরে ঘুমান। লেবুর অ্যাসিডিক প্রকৃতি মৃত ত্বক দূর করতে সাহায্য করে এবং ভেসলিন আর্দ্রতা ধরে রাখে।
৪. নারকেল তেলের গুণ
উপকরণ: বিশুদ্ধ নারকেল তেল
পদ্ধতি: নারকেল তেল ত্বকের শুষ্কতা কমাতে এবং আর্দ্রতা বজায় রাখতে খুবই কার্যকর। এতে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণও থাকে। প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে ভাল করে পা ধুয়ে শুকিয়ে নিন। এরপর গোড়ালি ও পায়ের অন্যান্য অংশে নারকেল তেল ম্যাসাজ করুন। নিয়মিত ব্যবহারে ফাটা কমতে শুরু করবে।
৫. চালের গুঁড়ো ও আপেল সিডার ভিনিগারের স্ক্রাব
উপকরণ: ২ চামচ চালের গুঁড়ো, ১ চামচ মধু, ১ চামচ আপেল সাইডার ভিনিগার (বা অলিভ অয়েল)।
পদ্ধতি: এই তিনটি উপাদান মিশিয়ে একটি ঘন পেস্ট তৈরি করুন। ফুট-সোক করার পর এই মিশ্রণটি গোড়ালিতে আলতো করে ম্যাসাজ করুন ৫ মিনিট ধরে। চালের গুঁড়ো শক্তিশালী স্ক্রাবার হিসেবে কাজ করে এবং মৃত কোষ দূর করতে সাহায্য করে। মধু ও ভিনিগার ত্বককে পুষ্টি দেয়।
ফাটা গোড়ালির সমস্যা রাতারাতি দূর হয় না, এর জন্য প্রয়োজন নিয়মিত যত্ন ও ধৈর্য। উপরে উল্লিখিত যেকোনও একটি প্রতিকার নিয়মিত অবলম্বন করুন। মনে রাখবেন, শুধু বাইরের যত্নই যথেষ্ট নয়, পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করা এবং সুষম খাদ্য গ্রহণ করাও জরুরি। এই ঘরোয়া টোটকাগুলির মাধ্যমে আপনার গোড়ালি হবে নরম, মসৃণ ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল। আর দেরি কেন? আজ থেকেই শুরু হোক আপনার পায়ের যত্ন।
