
নেল পলিশ কেবল প্রসাধনী নয়, বরং ফ্যাশন স্টেটমেন্ট। ঝকঝকে, উজ্জ্বল নখ বাড়িয়ে দিতে পারে আপনার আত্মবিশ্বাসকেও। তবে কি কখনও ভেবেছেন, যদি নখে একটার পর একটা নেল পলিশের আস্তরণ দিয়ে যান এবং নখকে একটু বিশ্রাম না দেন, তাহলে কী হতে পারে? প্রতিদিন নেল পলিশ ব্যবহার করলে তা দেখতে যতই সুন্দর লাগুক না কেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি আপনার নখ এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে।
নেল পলিশে এমন কিছু রাসায়নিক উপাদান থাকে যা দীর্ঘমেয়াদে নখকে দুর্বল, নির্জীব এমনকি সংক্রমিতও করতে পারে। সম্প্রতি ইউরোপে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ট্রাইমিথাইলবেনজয়েল ডাইফেনাইলফসফিন অক্সাইড (TPO)–এর ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এটি বহু জেল নেল পলিশ ব্র্যান্ডে ব্যবহৃত হত। এই রাসায়নিকটি বিষাক্ত এবং প্রজনন স্বাস্থ্য ও উর্বরতার সমস্যার সঙ্গে যুক্ত। ২০২৫ সালের ১লা সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হওয়া এই নিষেধাজ্ঞার ফলে, ইউরোপে আর কোনও ব্র্যান্ড TPO-যুক্ত নেল পলিশ বিক্রি বা আমদানি করতে পারবে না।
TPO-র সঙ্গে ত্বকের অ্যালার্জি ও সংবেদনশীলতা যুক্ত রয়েছে এবং এটি কার্সিনোজেনিক (ক্যানসারজনিত), মিউটাজেনিক (জিনগত পরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম), কিংবা প্রজননের জন্য ক্ষতিকর হিসেবে চিহ্নিত। ফলে ইইউ-তে এখন আর কোনও TPO-যুক্ত পণ্য বিক্রি বা প্রচার করা যাবে না এবং নেল স্যালুনগুলোকেও তাদের পুরনো মজুত ফেলে দিয়ে TPO-মুক্ত বিকল্প ব্যবহার করতে হবে।
নেল পলিশে আর কী কী বিষাক্ত উপাদান লুকিয়ে থাকতে পারে?
১। ফরমালডিহাইড – এটি ত্বকে জ্বালা ও অ্যালার্জি সৃষ্টি করে।
২। টলুইন – মাথা ঘোরা ও মাথাব্যথার কারণ হতে পারে।
৩। ডাইবিউটাইল ফথ্যালেট (DBP) – প্রজনন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
এই ধরনের রাসায়নিকের সঙ্গে প্রতিদিনের সংস্পর্শ আপনার স্বাস্থ্য ও নখের জন্য ক্ষতিকর। নিয়মিত নেল পলিশ লাগানোর সময় এর বাষ্প শ্বাসের সঙ্গে শরীরে প্রবেশ করলে শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যাও তৈরি হতে পারে।
কী করবেন?
১। নেল পলিশ ব্যবহার কমান। প্রতিদিন ব্যবহার করবেন না। মাসে কয়েকদিন নখকে বিশ্রাম দিন।
২। রাসায়নিকমুক্ত নেল পলিশ বেছে নিন। ‘৩-ফ্রি’ বা ‘৫-ফ্রি’ লেবেলযুক্ত পণ্য বেছে নিন।
৩। কিউটিকল এবং নখকে আর্দ্র রাখুন। কিউটিকল লোশন, নারকেল তেল বা বাদাম তেল ব্যবহার করুন।
৪। অ্যাসিটোনবিহীন রিমুভার ব্যবহার করুন। এগুলো তুলনামূলক কোমল।
৫। দাগ এড়াতে সবসময় নেল পলিশ দেওয়ার আগে সুরক্ষামূলক বেস কোট ব্যবহার করুন।