
আমাদের আশেপাশে খুঁজলে ঘোষ পদবীর বহু পরিচিত-অপরিচিত ব্যক্তি ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে দেখতে পাব। মূলত বাঙালিদের মধ্যেই এই পদবী দেখতে পাওয়া যায়। ঘোষ পদবী কী ভাবে উৎপত্তি হল তার ইতিহাসের মধ্যে আজ ঢোকাই ভাল। সে এক অন্য বৃত্তান্ত। তা নিয়ে রয়েছে বিভিন্ন মতও। তবে বাঙালিদের মোটামুটি যে সব ঘোষ পদবীর ব্যক্তিরা আছেন তাঁদের ৩ ভাগে ভাগ করা যায়।
কুলীন বা কায়স্থ ঘোষ। গোয়ালা বা যাদব ঘোষ। এবং সদগোপ বর্ণের ঘোষ। পদবীর গুরুত্ব কেবল আপনার পরিচয় দেওয়ার জন্য নয়। এই পদবী থেকেই একজন ব্যক্তি এবং তাঁর পূর্ব পুরুষদের সম্পর্কে অনেক কিছু বলা সম্ভব। যেমন ধরুন তাঁদের পূর্ব পুরুষরা কারা? কোথা থেকে এসেছেন এই সব। তেমনই প্রাচীন প্রথা অনুসারে ঘোষরা কাঁদের বিয়ে করতে পারেন, সেই নিয়েও কিন্তু রয়েছে নিয়ম। জানেন ঘোষেরা কাঁদের বিয়ে করতে পারেন?
যেমন বাংলার কুলীন বা কায়স্থদের বেশিরভাগকেই মনে করা হয় মকরন্দ ঘোষের বংশধর। এই মকরন্দ ঘোষ আবার সহ পাঁচ কায়স্থ একটা সময়ে কনৌজ থেকে এসেছিলেন বাংলায়। রাজা বল্লাল সেনের সময়ে ঘোষ, বসু ও মিত্ররা কৌলিন্য উপাধী পান।
প্রাচীন কালে যারা কৌলিন্য উপাধী পেয়েছিলেন সেই সব উপাধীর ব্যক্তিদের কেবল কুলীনদের বিয়ে করার অধিকার ছিল। সেই অনুসারে কুলীন ঘোষদের কেবল মিত্র এবং বসুদের মধ্যেই বিয়ে করার নিয়ম প্রচলিত ছিল। অন্যথায় কুল ভঙ্গ হত।
তবে উত্তর রাঢ়ী কায়স্থদের মধ্যে শান্ডিল্য ও বাৎস্য গোত্রীয় ঘোষ পাওয়া যায়, কিন্তু তাঁরা কুলীন নয়। তাই তাঁরা কায়স্থদের মধ্যে বিয়ে করতে পারতেন।
একই ভাবে গয়লা বা সদগোপ ঘোষেদের নিজেদের জাতির মধ্যেই বিয়ে করার চল ছিল। যদিও এখন আর সেই সব নিয়ম খুব একটা প্রাসঙ্গিক নয়। প্রাচীনকালে যখন বর্ণভেদ প্রথার প্রচলন ছিল সেই সময়ে এই ধরনের নিয়ম প্রচলিত ছিল।