
মানুষ মন্দিরে যায় ভগবানকে স্মরণ করতে। তাঁর উপাসনা করতে। নিজের সমস্যার সমাধান খুঁজতে। মনে শান্তি পেতে। সব দুষ্ট শক্তি যেখানে এসে শেষ হয়ে যায় সেই স্থান মন্দির। অথচ এক বার ভাবুন তো এমনও এক মন্দির আছে যেখানে গেলে মৃত্যু নিশ্চিত। ভাবতে পারছেন? নরকের দরজা শুরু হয় এই মন্দির থেকেই।
তুরস্কের প্রাচীন শহর হিরাপোলিস। সেখানেই রয়েছে এই মন্দির। যেখানে গেলে নাকি মৃত্যু নিশ্চিত। এই কারণেই ওই মন্দিরটিকে নরকের দরজাও বলা হয়। বিশ্বাস দেবতার ক্রোধের কারণে নাকি ঘটে এমনটা।
তুরস্কের প্রাচীন শহর হিরাপোলিস ভারত সহ অনান্য গোটা বিদেশের পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু ছিল। বিশেষ করে প্রত্নতত্ত্ব নিয়ে আগ্রহীদের মধ্যে এই স্থানের বিশেষ কদর ছিল। অথচ এই মন্দিরে যাওয়ার পরে নাকি ফিরে আসেননি অনেকেই। এমনকি তাঁদের কোনও চিহ্নও পাওয়া যায়নি। কথিত, এখানে জীবিত কেউ গেলে তাঁর মৃত্যু অনিবার্য। কেবল মানুষই নয়, এমনকি মন্দিরের কাছে যাওয়া পশু-পাখিও মারা যায়। এই কারণেই ধীরে ধীরে রহস্যের কেন্দ্র বিন্দু হয়ে ওঠে এই মন্দির।
এই ঘটনার পর, মন্দিরটি প্লুটোর মন্দির নামে পরিচিতি লাভ করে। স্থানীয়রা একে মৃত্যুর দেবতার মন্দির বলতে শুরু করে। এই কারণে ওই মন্দিরে এখন কারও যাওয়া নিষিদ্ধ। সাধারণ মানুষ থেকে পর্যটক সকলের জন্য বন্ধ মন্দিরের দরজা। প্রচলিত, ওই মন্দির সত্যিই মৃত্যুর দেবতার মন্দির কিনা তা জানার জন্য বেশ কয়েকবার খাঁচায় করে মন্দিরের দরজার সামনে পাখি রেখে আসা হয়। কিন্তু সব পাখিকেই নাকি মৃত হিসাবে পাওয়া যায়।
রোমান পুরাণ অনুসারে প্লুটো পাতালপুরির দেবতা। কেউ কেউ এটাকে কুসংস্কার বলেও মনে করেন। আবার কেউ কেউ এই মন্দিরকে নরকের প্রবেশদ্বার বলে।
২০১৮ সালে গ্রীক ভূগোলবিদ স্ট্রাবোও এক গবেষণায় এই মন্দিরের রহস্য উন্মোচন করেন। স্ট্রাবো জানান, মন্দিরে গুহায় উপস্থিত কার্বন ডাই অক্সাইড এই সমস্যার মূল কারণ। ওই স্থানে নাকি কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা ৯১ শতাংশ।
স্থানীয়দের বিশ্বাস, এই স্থানে বলিদান করা হত। সেই কারণেই আশেপাশে খননের সময় পশু-পাখির কঙ্কাল পাওয়া গেছে। কারণ যাই হোক না কেন, এটা সত্য যে যারা এখানে গিয়েছিল তারা আজ পর্যন্ত ফিরে আসেনি।