বাংলা জুড়ে আজ বাড়িতে বাড়িতে হবে মা লক্ষ্মীর আরাধনা। সৌভাগ্য, সমৃদ্ধি আর ধনসম্পদের দেবী হিসেবে লক্ষ্মীর আরাধনা হয়ে আসছে সেই প্রাচীন কাল থেকে। আশ্বিনের কোজাগরী পূর্ণিমায় লক্ষ্মীপুজোর ঐতিহ্য বাংলার নিজস্ব সম্পদ। ভারতের অন্য প্রান্তে অবশ্য দীপাবলির দিনেই হয় লক্ষ্মীর আরাধনা। বাংলায় এই কোজাগরী পূর্ণিমার সঙ্গে জড়িয়ে আছে ধনসম্পত্তি এবং কৃষিকাজ। ভারতে লক্ষ্মীপুজোর ইতিহাস বহু প্রাচীন। ঋগ্বেদে লক্ষ্মীর কোনও সরাসরি উল্লেখ না থাকলেও শ্রী শব্দের উল্লেখ রয়েছে বেশ কয়েক বার। এখানে শ্রী অর্থে সৌন্দর্যের আধার। যদিও পরবর্তী কালে শ্রীসুক্তে উল্লেখ রয়েছে শ্রী নামে এক দেবীর, যিনি পদ্মের উপর আসীন। যে কারণে লক্ষ্মী পদ্মাসনা। আর তাই তো আমরা বাড়ির মেয়েদের লক্ষ্মীর সঙ্গে তুলনা করি। সুন্দর করে পোশাক পরা, পরিপাটি করে সাজা, সুন্দর রান্না সব কিছুই কিন্তু লক্ষ্মী শ্রী।
পুজো বা আনন্দ উৎসবের দিনে সুন্দর করে সাজতে আমাদের সকলেরই খুব ভাল লাগে। লক্ষ্মী পুজোর অন্য অর্থ হল পরিচ্ছন্নতা। লক্ষ্মীর বাস সেখানেই যেখানে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা রয়েছে। ঘর এলোমেলো, মন অগঠালো অথচ সুন্দর পরিপাটি করে সেজে একরাশ ভোগ সাজিয়ে পুজো করা হচ্ছে তাতে লক্ষ্মী মোটেই প্রসন্ন হন না। কথায় বলে লক্ষ্মী চঞ্চলা। আর তাই পোশাকের পাশাপাশি নিজের মনেও জ্বলুক শ্রী-এর আলো। লক্ষ্মী পুজোয় বাড়ির মেয়েরা সুন্দর করে সাজেন। স্নান করে লাল শাড়ি কিংলা লাল পাড় সাদা শাড়ি, ব্লাউজ, গয়না, ছোট্ট একটা টিপ, ঠোঁটে লাল লিপস্টিক, নাকে নথ দিয়ে সাজলে এদিন দেখতে খুবই ভাল লাগে। ধানেরস ছড়া, প্যাঁচা, লক্ষ্মীর পা, পদ্ম এসবই আমাদের লক্ষ্মী পুজোর বিশেষ প্রতীক। পোশাকের মধ্যে কোনও একটি থাকলেই দেখতে বেশ ভাল লাগে।
সাজ হোক তবে তা হোক আড়ম্বরহীন। ভাবছেন ব্যাপারটা কেমন? অতিরিক্ত মেকআপ মোটেই ভাল লাগে না দেখতে। তাই ঠিক যতখানি প্রয়োজন ততটাই হোক মেকআপ। একগাদা মেকআপ মুখে লাগালে ত্বকের ক্ষতি তো হয়ই আর দেখতেও ভাল লাগে না। তেমনই জরি, চুমকি দেওয়া খুব ঝকমকে পোশাকও দেখতে ভাল লাগে না। এদিন নিজে যেমন সাজবেন তেমনই বাড়িকেও সুন্দর করে সাজিয়ে নিন। বাড়ির প্রতিটি কোণা হোক পরিষ্কার। বাড়ির পর্দা, কুশান কভার, বেডশিট বদলে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখুন। নিজের মনের প্রতিটি কোনাতেও পৌঁছে দিন সেই শ্রী-এর আলো। তবেই কিন্তু শ্রী বৃ্দ্ধি হবে, আশপাশ হবে সুন্দর।