মনের দ্বিধা-দ্বন্দ্ব এড়িয়ে আজকাল অনেকেই বিকিনিকে আপন করে নিয়েছেন। এককালে সাঁতারের বিশেষ পোশাক হিসেবেই কদরস ছিল বিকিনির। বর্তমানে ফ্যাশান দুনিয়া আপন করে নিয়েছে ‘টু-পিস’-কে। বলিউডের তারকারা যখন প্রথম বিকিনি পরা শুরু করলেন, ফটোশুট করলেন তখন একদল রে-রে করে উঠেছিল। প্রচুর সমালোচনাও হয়েছে। ইদানিং বিকিনি নিয়ে এতই চর্চা চলে যে সব কিছুই মানুষের চোখ-সওয়া হয়ে গিয়েছে। ইতস্ততের ধ্বজা উড়িয়ে বিকিনিতে এখন সমান স্বচ্ছন্দ্য টলি কন্যারাও। তবে সব চেহারায় মানানসই নয় বিকিনি একথা যেমন প্রমাণিত তেমনই বিকিনি-কে গুরুত্ব সহকারে ‘ক্যারি’ করাটাও চ্যালেঞ্জের। অন্যকে দেখে নয়, নিজের মধ্যে আত্মবিশ্বাস থাকলে তবেই বিকিনি পরুন।
ভারতীয় মডেল-ডিজাইনার চাঁদনি সারেন। ফ্যাশান নিয়ে তিনি যে একাধিক এক্সপেরিমেন্ট চালান তা মালুম হয় তাঁর ইন্সটা পেজে গেলেই। বিকিনিকে নিজের মত করে আপন করে নিয়েছেন। সেই সঙ্গে মেকআপ, পোশাক, জুয়েলারি- এই সব কিছু নিয়ে তাঁর ফ্যাশান ফটোশুট দেখবার মত। ইন্সটাগ্রামে ফলোয়ারের সংখ্যা মোটেই তাক লাগানো নয়, তবে যাঁরা ফ্যাশানের কদর বোঝেন তাঁরা কিন্তু এই কন্যের প্রোফাইল দেখলে মোহিত হবেনই। সম্প্রতি ইক্কতের বিকিনিতে দারুণ কিছু ছবি তুলেছেন তিনি। এই প্রথম বোধহয় কোনও মডেলকে দেখা গেল ইক্কতের বিকিনিতে। সিল্ক বা প্রিন্ট হিসেবে ইক্কতের জনপ্রিয়তা কতখানি সে নিয়ে নতুন করে বলবার কিছুই নেই। ইক্কতের ওয়ান পিস, ড্রেস, স্কার্ট, টপ, শার্ট থেকে শুরু করে পর্দা, কুশান কভার, বেডশিট সবই বানানো হয়। তবুও এথনিক এই প্রিন্টের সঙ্গে যে স্যুইম স্যুট বিকিনিকেও জুড়ে দেওয়া যায় এমন ভাবনা আগে আসেনি।
চেনা ইক্কতের এই বিকিনির সঙ্গে চাঁদনির সাজ খুবই সামান্য। বিকিনির সঙ্গে ইক্কতেরই সিগারেট কাট ট্রাউজার্স বেছে নিয়েছেন। কানে মাকড়ি, সামান্য আইমেকআপ আর বেসেই নজর কেড়েছেন তিনি। গনগনে সূর্যের আলোয় সমুদ্রের পাড়ে ম্লান নয়, ইক্কতের বিকিনিতে ‘কুল’ লাগছে এই মডেলকে। নির্মেদ পেট, টোনড হাত আর স্পষ্ট জ লাইনে (Jaw Line) ইক্কত আরও বেশি শোভা পাচ্ছে তাঁর শরীরে।
ইক্কত ভারতের প্রচুর পুরনো একটি প্রিন্ট। মূলত ইক্কত প্যার্টানের জন্যই এর কদর। ভেষজ রঙে সুতো রাঙিয়ে প্রথমে মাটিতে শুকনো হয়। এরপর তা বোনা হয়। ওয়েফ্ট ইক্কত, ওয়ার্প ইক্কত, কম্পাউন্ড ইক্কত এবং ডাবল ইক্কত এই চার ধরনের বুনোট থাকে। এর মধ্যে ডাবল ইক্কতেরই প্রচলন বেশি। তেলেঙ্গনার এক ছোট গ্রামেই প্রথম তাঁতিরা এই ইক্কত বোনেন। ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই গ্রামের তাঁতি পরিবারেই একমাত্র বোনা হত ইক্কতের সুতো। বর্তমানে বিশ্বজুড়েই কদর ইক্কতের। কিছু জায়গায় তা পচমপল্লী নামেও পরিচিত। তেলেঙ্গানার ঐতিহ্যবাহী শাড়ি এই পচমপল্লী। গুজরাট এবং ওড়িশাও প্রাচীন ইক্কতের বয়ন কেন্দ্র হিসেবে সুপরিচিত।