লাল-সাদা বাঙালির চিরন্তন ঐতিহ্য। আজ নয়, বছরের পর বছর ধরে চলে আসছে এই ঐতিহ্য। লাল-পেড়ে সাদা শাড়ি, সোনার গয়না, ছোট্ট লাল টিপের মধ্যে মিশে থাকে বাঙালিয়ানা। পুজোর দিনে কিংবা বাঙালির যে কোনও পার্বণে এই শাড়ি সবচেয়ে বেশি ভাল লাগে দেখতে। গত কয়েক বছর ধরে ট্রেন্ড্রিংয়ে রয়েছে এই শাড়ি। বিয়ের সকালে, পুজোর দিনে অনেকেই এই কম্বিনেশনের শাড়ি পরেন। লাল রঙের একটা অন্যরকম ভাইবস আছে। সদা উজ্জ্বল এই রং। কিছুদিন আগেই শহরে যে পুজোর কার্নিভ্যাল হল তাতেও মুখ্য আকর্ষণ ছিল এই লাল সাদা রং। ইনস্টাগ্রাম জুড়ে পুজোর অধিকাংশ রিলস, শ্যুটেও দেখা গিয়েছে এই সাদা-লালের শাড়ি। পুজোয় অষ্টমী আর দশমীতে লাল পাড়-সাদা শাড়ি ছাড়া ভাবতেই পারেন না অনেকে।
পুজোতে সকলেই চান তাঁকেই যেন দেখতে সবচাইতে বেশি সুন্দর লাগে। যাবতীয় নজর যেন থাকে তাঁর দিকেই। তাই সবাই নিজেরা সেরা পোশাক, সেরা মেকআপ- সব দিক থেকেই নিজেকে সেরা দেখাতে চান। তাই নিজেকে সেরা দেখাতে গেলে স্টিরিওটাইপ কিছু ধ্যান ধারণা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতেই হবে। এই প্রসঙ্গে ডিজাইনার রাজ বন্দ্যোপাধ্যায় যেমন বললেন, পুজো মানেই লাল আর সাদা। তবে আমি অন্য ভাবে প্রেজেন্টেশন করেছি। আমি সাদা, মেরুম, লাল, হলুদ, পেস্তা গ্রীন, লেমন ইয়লো নিয়েও কাজ করেছি। উৎসবের দিনে এই রংগুলোও দেখতে বেশ ভাল লাগে। সবার থেকে অন্যরকম কিছু করলে তবেই না লোকের চোখ টানবে।
ডিজাইনার দেবত্রী যেমন বললেন, আজ নয় বহু বছর ধরেই ফ্যাশানে রয়েছে এই লাল-সাদা। প্রতি বছরই এই কম্বিনেশনের শাড়ি প্রচুর মানুষ কেনেন। ফ্যাশানে এই লাল, সাদা সব রঙই বারবার ঘুরে ফিরে আসকে। লালের মধ্যে অদ্ভুত একটা আকর্ষণ করার ক্ষমতা রয়েছে।
তবে সাদা শাড়ি- লাল পাড়ের সঙ্গে সাদা ব্লাউজ সঙ্গে লালের কাজ পরলে দেখতে বেশি ক্লাসি লাগে-মত ডিজাইনার রাজ বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তেমনই ছেলেরা যদি সাদা পাঞ্জাবির সঙ্গে কালো সুতোর কাজ বা মেরুনের কাজ আর অফ হোয়াইট মেরুনের ধুতি দেখতে বেশি ভাল লাগে। এতে লাল-সাদার টাচও থাকে। এতে ব্যাপারটা খুব চকমকিও হয় না সঙ্গে চোখের আরাম থাকে। আমরা যে আবহাওয়াতে বাস করি সেখানে সারাবছরই গরম থাকে। কাজেই পোশাক নির্বাচনের সময় এই ব্যাপারটিতেও নজর দেওয়ার প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন তিনি।
এই পুজোতে শাড়িতে কী ভাবে করবেন স্টাইলিং? তার জন্য বিশেষ কিছু টিপস থাকল রাজের তরফে
*ধূসর রঙের শাড়ির সঙ্গে সরু লাল ইঞ্চিপাড় দেখতে বেশ ভাল লাগে। এই রকম শাড়ির সঙ্গে লাল স্লিভলেস ব্লাউজেই সবচেয়ে বেশি স্মার্ট লাগে।
*সঙ্গে স্টাইলিশ সিলভারের গয়না, হাতে সিলভারের সঙ্গে শাঁখার গয়না কম্বিনেশন করে পরলে দেখতে ভালো লাগে।
*চুলে মেসি বান, লাইট মেকআপ, চোখে নো-মেকআপ লুক, হালকা পিংক লিপস্টিকেই সবচেয়ে বেশি স্টাইলিশ লাগে।
*যত কম সাজা যায় দেখতে ততই ভাল লাগে ঠাকুর দেখতে গেলে মোটেই ভারী মেকআপ ভাল লাগে না।
*হালকা শাড়ি, গায়ে লেপ্টে থাকবে এমন শাড়িই পুজোতে ভাল। কেউ অন্যরকম সাজতে চাইলে গরদ, এক রঙের বিষ্ণুপুরী সিল্ক, বেছে নিতে পারবেন। তবে যত হালকা সাজে স্টাইলিশ লুক আনতে পারবেন তবেই নিজের জন্য ভাল।