২০১৯ সালে এক প্রতিবাদী মঞ্চ থেকেই প্রথম আলাপ যুবনেতা ফাহাদ আহমেদের সঙ্গে। অভিনয়ের পাশাপাশি নিজের রাজনৈতিক চেতনা নিয়ে বরাবরই সচেতন স্বরা ভাস্কর। মঞ্চ থেকে আলাপা, নম্বর আদান প্রদান এবং ভাললাগা। পরবর্তীতে বন্ধুত্ব গড়িয়েছে ঘন্টার পর ঘন্টা ভিডিয়ো কলে, জমাটি হয়েছে প্রেম। তবে কাকপক্ষীতেও টের পায়নি তাঁদের প্রেমকাব্যের। সযত্নে তা আড়াল করে রেখেছিলেন। ৬ ফেব্রুয়ারি স্পেশ্যাল ম্যারেজ অ্যাক্টে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন স্বরা-ফাহাদ। সই-সাবুদ হওয়ার পর নিজেরাই সোশ্যাল মিডিয়াতে জানান বিয়ের কথা। এরপর অবশ্য থেমে থাকেনি ধর্মের ধ্বজাধারী কট্টরপন্থীরা। স্বরা-ফাহাদের বিয়ের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন মুসলিম জামাতের প্রধান মৌলনা। বলেছিলেন স্বরা ধর্মান্তরিত হননি, তাই এই বিয়ে বৈধ নয়। তবে এসব বিতর্কে থোড়াই কেয়ার। দিল্লিতে স্বরা-ফাহাদ মেতেছেন নিজেদের প্রাক বিবাহের অনুষ্ঠানে। ১৬ মার্চ দিল্লিতে তাঁদের বিয়ে। তার আগে হলদি, সঙ্গীত, মেহেন্দির অনুষ্ঠানে জমজমাট মহল।
সঙ্গীত, মেহেন্দিতে যাবতীয় ভারতীয় ঐতিহ্য তুলে ধরার চেষ্টা করলেন স্বরা। মেহেন্দির অনুষ্ঠানে গেরুয়া রঙের আনারকলি পরেছিলেন স্বরা। ফাহাদের পরনে ছিল আকাশি কুর্তা, সাদা পায়জামা আর নেহেরু জ্যাকেট। সঙ্গীত অনুষ্ঠানের জন্য স্বরা বেছে নিয়েছিলেন সবুজ রঙের লেহঙ্গা। আর এই লেহঙ্গার সঙ্গে ম্যাচিং করে ফাহাদ পরেছিলেন সবুজ রঙের কুর্তা। সঙ্গীত নাইটে স্বরার প্রিয়জনেরা নাচগান তো করেনই সেই সঙ্গে ছিল বিশেষ কাওয়ালি গানের অনুষ্ঠানও। গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানও ছিল জমজমাট। স্বরা-ফাহাদের গায়ে হলুদ কোথাও গিয়ে যেন হোলি উৎসব হয়ে গিয়েছিল। হলুদের পাশাপাশি আবিরেও রাঙা হলেন তাঁরা।
মূল বিয়ের অনুষ্ঠানের আগে তেলুগু মতেও বিয়ে হল তাঁদের। আর সেদিনের অনুষ্ঠানে একেবারে ট্র্যাডিশন্যাল তেলুগু ব্রাইডদের মত সাজলেন তিনি। পেঁয়াজের খোসার রঙের বেনারসি সিল্কের উপর ব্রোকেডের কাজ করা। সেই সঙ্গে ভারী জরির কাজও রয়েছে। সঙ্গে টেম্পল জুয়েলারি, কানে দুল, নথ, মাথাপট্টিতে সেজেছিলেন তিনি। সেই সঙ্গে হাতে লাল চুড়ি। খোঁপায় তাঁর ফুলের মালাও ছিল। শাড়ির সঙ্গে ম্যাচ করে পরেছিলেন ব্রোকেডের ব্লাউজ। এই সাজে একেবারে অন্যরকম লাগছিল তাঁকে। স্বরা তাঁর এই শাড়িটি নিয়েছেন বিখ্যাত ব্র্যান্ড র ম্যাঙ্গো থেকে। একেবারে সাদামাটা লুকেও তাঁকে লাগছিল অসাধারণ। ফাহাদ আহমেদ পরেছিলেন বেইজ রঙের নেহেরু জ্যাকেট, সঙ্গে ক্রিম রঙের কুর্তা পায়জামা। সঙ্গে ছিল দক্ষিণী সঙ্গীতের আসর। ধর্ম কখনও বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি তাঁদের প্রেমে। বরাবর প্রাধান্য পেয়েছে বন্ধুত্ব। পরিবারের সম্মতি নিয়েই ৩১ বছরের যুবনেতার গলায় বরমাল্য দিলেন ৩৪ বছরের স্বরা।