
মাছে ভাতে বাঙালি — কথাটা অত্যন্ত জনপ্রিয়। সেই সঙ্গে আরও যে কথাটা জুড়তে হয়, তা হল ভাতের সঙ্গে মাছ থাকুক আর মাংস, বাঙালির পাতে ডাল থাকবেই। ডাল-ভাতের মতো খাবার খেয়ে তৃপ্ত হন না, এমন মানুষ কমই আছে। মুগ, মুসুর কিংবা বিউলি —- গরম ভাতের সঙ্গে ডাল খেতে বেশ ভালোই লাগে। এছাড়া এক বাটি ডালে বিরাট পুষ্টি মেলে। তা অন্য খাবারে পাওয়া যায় না। এ বার ধরুন হঠাৎ জানতে পারলেন আপনি যে ডাল খাচ্ছেন, তা থেকে পুষ্টি পাচ্ছেন না, তা হলে কেমন লাগবে? আসলে এমনটা হলে বুঝতে হবে ডাল রান্নার পদ্ধতিতে কিছু ভুল রয়েছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক সঠিক উপায়ে ডাল রান্নার কিছু নিয়ম।
অনেকেই প্রেশার কুকারে ডাল বানান। তবে প্রেশার কুকারে ডাল সেদ্ধ করে নিলেই কাজ শেষ হয় না। ডাল জলে ঠিক মতো ভিজিয়ে রাখতে হয়, সঠিক সময়মতো সেদ্ধ করতে হয়। রইল বিস্তারিত টিপস —
১. জলে ডাল ভিজিয়ে রান্না করতে হবে – ডাল জলে না ভিজিয়ে কখনও রান্না করা চলবে না। কারণ জলে না ভেজালে ডালের কোনও পুষ্টি মিলবে না। জলে না ভেজানো ডাল রান্না করলে হজমের গণ্ডগোল দেখা দিতে পারে। আসলে জলে ভেজানোর পর ডাল সহজপাচ্য হয়ে ওঠে। ডালে ফাইটিক অ্যাসিড ও ট্যানিনের মতো বিভিন্ন ধরনের উপাদান থাকে। যা দেহে পুষ্টি শোষণে বাধা দেয়। ডাল রান্নার ৮-১২ ঘণ্টা আগে জলে ভেজান। তাহলে ডালের পুষ্টি আরও বাড়বে এবং দ্রুত ডাল রান্নাও হয়ে যাবে।
২. কখনও ডাল বেশিক্ষণ ফোটানো যাবে না – ডাল তো সেদ্ধ করতেই হয়। কিন্তু বেশিক্ষণ ডাল ফোটানো চলবে না। প্রেশার কুকার হোক বা সসপ্যান, বেশি জল দিয়ে দীর্ঘক্ষণ ডাল ফোটালে এর মধ্যে থাকা প্রোটিন নষ্ট হয়ে যায়। ডাল বেশি সেদ্ধ করলে এর মধ্যে থাকা অ্যামিনো অ্যাসিড নষ্ট হয়ে যায়। শুধু তাই নয়, প্রেশার কুকারে বেশিক্ষণ সেদ্ধ করলে ফাইটিক অ্যাসিডের ঘনত্ব কমে যায়। পাশাপাশি ডালে থাকা ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন ও জিঙ্কের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়।
৩. ডালে জল দেওয়ার পরিমাণ গুরুত্বপূর্ণ – এক কাপ ডাল যদি নেন, তাহলে দু’কাপ জল নিতে হবে। ওই জল মজে যাওয়া অবধি ডাল ফোটাতে হবে। তারপর ফের পরিমাণ বুঝে জল যোগ করতে হবে। যদি এই করতে গিয়ে অল্প বাড়তি জল হয়ে যায়, তা হলে ফেলবেন না। কারণ, এতে ডাল থাকা ভিটামিন বি, সি বেরিয়ে যাবে। তবে ডাল ফোটার সময় তার উপর যে ফেনা তৈরি হয় সেটা ফেলে দেবেন।