শরীরের যাবতীয় রেচন প্রক্রিয়ার সামাল দেয় কিডনি। আর তাই শরীর সুস্থ রাখতে আগে ভাল রাখতে হবে কিডনিকে। অ্যামোনিয়া, প্রোটিন, সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাস বাইকার্বোনেট দ্বারা উৎপন্ন দূষিত যৌগ শরীর থেকে রেচন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাইরে আসে। এবার কিডনির সমস্যা হলে তখন শরীরে এই সব দূষিত যৌগ জমতে থাকে। শরীরের ডিটক্সিফিকেশন ভাল হয় না। এছাড়াও কিডনির সমস্যা হলে প্রস্রাব ঠিকমত হয় না। প্রস্রাব ঠিকমত না হলে শরীরে তখন একাধিক সমস্যা হয়। কিডনির সমস্যা হলে ডায়ালিসিস ছাড়া আর কোনও উপায় থাকে না। আর তখন আরও বেশি সতর্ক থাকতে হয়। এছাড়াও যাঁদের ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে তাঁদেরও কিন্তু কিডনির রোগ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। আর কিডনির সমস্যা হলে চিকুৎসকের পরামর্শ যেমন নেবেন তেমনই ডায়েট থেকে বাদ রাখতে হবে এই কয়েকটি খাবার। নুন কম পরিমাণে খাওয়া, ফসফরাস সমৃদ্ধ খাবার কম খাওয়া, প্রোটিন যুক্ত খাবার কম খেতে হবে। সেই সঙ্গে রোজের তালিকায় অবশ্যই রাখুন এই কয়েকটি খাবার।
পেঁয়াজ- কিডনির সমস্যার প্রথম লক্ষণ হল শরীরে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বেড়ে যাওয়া। আর তাই যদি রক্ত পরীক্ষায় এই মাত্রা বেশি থাকে তাহলে বেশি করে পেঁয়াজ খান। কাঁচা পেঁয়াজের মধ্যে থাকে প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন। যা রক্তের সান্দ্রতা হ্রাস করে উচ্চরক্তচাপের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখে। এতে কিডনি ভাল থাকে, ঠিকমত কাজেরও সুযোগ পায়। কিডনির রোগীরা তাই রোজ খান একটুকরো পেঁয়াজ।
ডিমের সাদা অংশ- কিডনির সমস্যা হলে প্রোটিন কম খেতে বলা হয়। সেক্ষেত্রে কুসুম বাদ দিয়ে বাকি অ্যালবুবিন খান। যাঁদের ডায়ালিসিস চলে তাঁদেরও এই সাদা অংশ সামান্য নুন আর গোলমরিচের গুঁড়ো দিয়ে খেতে বলা হয়। তবে ফসফরাস সীমার মধ্যে রাখুন।
গাজর- যাঁদের উচ্চরক্তচাপের সমস্যা রয়েছে তাঁদের মধ্যে কিডনির রোগের ঝুঁকি সবচাইতে বেশি। গাজর রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। রোজ নুন ছাড়া একবাটি গাজর সিদ্ধ কিডনির রোগীদের জন্য ভাল। এতে কমে ক্যানসারের ঝুঁকিও। এছাড়াও যাঁদের ডায়াবেটিসের সমস্যা রয়েছে তাঁরাও রোজ খান গাজর।
অলিভ অয়েল- কিডনির সমস্যা থাকলে সরষের তেল বা সাদা তেলের পরিবর্তে অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে পারলেই সবচেয়ে ভাল। এই তেলের মধ্যে নেই ফসফরাস। এছাড়াও ফ্যাট একেবারেই নেই। রান্না করতে খুব অল্প তেল হলেই কাজ চলে যায়। আর তাই রোজকার রান্নার কাজে ব্যবহার করুন অলিভ অয়েল। এতে ওজনও থাকবে নিয়ন্ত্রণে।
রসুন- যাঁদের কিডনির সমস্যা রয়েছে তাঁদের নুন আর সোডিয়াম একেবারেই বাদ দিতে বলা হয়। কাঁচা নুন একেবারেই নয়। এক্ষেত্রে ভাল দাওয়াই কিন্তু রসুন। বহু বছর ধরে রসুন ব্যবহার হয়ে আসছে আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে। একাধিক রোগ উপশমে একে কাজে লাগানো যায়। সেই সঙ্গে খাবারের স্বাদ বাড়ায় আর পুষ্টিও জোগায়।