শীতকাল মানেই বাড়িতে বাড়িতে তৈরি হয় নতুন গুড়ের পায়েস। নলেন গুড়ের পায়েসের স্বাদই আলাদা। এছাড়াও হিন্দু সংস্কৃতিতে পায়েস খুবই শুভ। আর তাই যে কোনও অনুষ্ঠানেই পায়েস হবেই। জন্মদিন, বিয়েবাড়ি, আইবুড়োভাত, অন্নপ্রাশন যে কোনও অনুষ্ঠানে পাতে পায়েস থাকবেই। এছাড়াও পুজোর প্রসাদ হিসেবেও থাকে পায়েস। শেষপাতে পায়েস খেতে বেশ লাগে। যদিও অনুষ্ঠান ছাড়া বাড়িতে শেষপাতে পায়েস খাবার খুব একটা সুযোগ থাকে না। অনেকেই ভাবেন পায়েস খেলে সুগার বাড়ে। যে কারণে লোভ হলেও পায়েস থেকে দৃষ্টি সরিয়ে রাখেন। শুধু চাল নয়, অনেক কিছু দিয়েই পায়েস বানানো যায়। চিঁড়ের পায়েস, সাবুদানার পায়েস, ওটসের পায়েস, ডালিয়ার পায়েস এসব তো হয়ই। তবে মুখের স্বাদ ফেরাতে আর রাতে খাওয়া সম্পূর্ণ করতে পাতে রাখুন কুইনোয়ার পায়েস। এই পায়েস যেমন খেকে ভাল তেমনই পুষ্টিগুণে ভরপুর।
যাঁরা ডায়েট করেন, ভাত খান না তাঁরা পরিবর্ত হিসেবে কুইনোয়া খান। বিশ্বের প্রাচীন শস্যগুলোর মধ্যে অন্যতম হল কুইনোয়া। জোয়ার, বাজরা, রাগি ইত্যাদির সংমিশ্রণে তৈরি হয় কুইনোয়া। কর্ণাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র আর তামিলনাড়ুতে জন্মায় এই মিলেট। এই শস্যের মধ্যে ফ্যাট একেবারেই নেই। এছাড়াও থাকে ক্যালশিয়াম, প্রোটিন, ম্যাগনেশিয়াম, ফাইবার, আয়রন, ফসফরাস, ক্যারোটিন, কার্বোহাইড্রেট, রাইবোফ্ল্যাভিন, থিয়ামিনের মত উপাদান। যা শরীরে রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। সম্প্রতি FSSAI- এই কুইনোয়ার ক্ষীরের বিশেষ একটি রেসিপি শেয়ার করেছে। দেখে নিন কীভাবে বানাবেন।
এই ক্ষীর বানাতে যা কিছু লাগছে
ঘি- ১ চামচ
এলাচ- হাফ চামচ
কুইনোয়া- হাফ কাপ
জল-২ কাপ
দুধ-১ লিটার
গুড়-১৫০ গ্রাম
কাজু, পেস্তা, আমন্ড- ৩ চামচ
যে ভাবে বানাবেন
একটা প্রেসার কুকারে ঘি দিয়ে ওর মধ্যে কুইনোয়া, এলাচ গুঁড়ো এসব দিয়ে ভাল করে নেড়ে নিন। বাদামী হয়ে আসলে ওর মধ্যে সামান্য জল দিয়ে সিদ্ধ করে নিন। অন্য একটা পাত্রে দুধ জ্বাল দিতে বসান। দুধে সামান্য জল মিশিয়ে দেবেন। এবার দুধ ভাল করে জ্বাল দিয়ে ঘন করে নিয়ে ওর মধ্যে কুইনোয়া মিশিয়ে দিন। এবার ৫ মিনিট হাই ফ্লেমে রান্না করে নিন। ঘন হয়ে এলে উপর থেকে ড্রাই ফ্রুটস ছড়িয়ে পরিবেশন করুন। এই ক্ষীরের মধ্যে থাকে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি কার্সিনোজেনিক বৈশিষ্ট্য। যা রক্তশর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ক্যানসার, ডায়াবেটিস, হাইব্লাড প্রেসার বা যে কোনও সংক্রমণজনিত সমস্যায় ভুগলে তা রুখে দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে কুইনোয়ার মধ্যে।
পায়েস ছাড়াও কুইনোয়া দিয়ে কেক, রুটি, লেমন রাইস এসব বানিয়ে নেওয়া যেতে পারে। এছাড়াও আরও অনেক মুখরোচক রেসিপিও বানিয়ে নিতে পারেন এই কুইনোয়া দিয়ে।