ডালের মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণ পুষ্টি। আর ওজন কমাতে ডালের কিন্তু জুড়ি মেলা ভার। আমাদের দেশে সারা বছরই নানা রকম ডাল উৎপাদন হয়। আর তাই এখানকার মানুষের প্রধান খাদ্য হল এই ভাত আর ডাল। ডালের মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার। যে কারণে তা অনেকক্ষণ পর্যন্ত পেট ভরিয়ে রাখে। এছাড়াও কাশি, হাঁপানি এবং শরীরের অন্যান্য শারীরিক সমস্যা থেকে দূরে থাকতেব সাহায্য করে ডাল। মুগ ডাল, মুসুর ডাল, ছোলার ডাল, বিউলির ডাল, মটর, অড়হড় ডালের নাম সকলেই জানেন। আর এই সব ডাল প্রায়ই বানানো হয়ে থাকে রান্নাঘরে। কলাইয়ের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় হল তড়কার ডাল। তবে এই ডালের মধ্যে আরও একটি ডাল রয়েছে, যার নাম কুলত্থ। তবে অধিকাংশই এই ডালের নাম জানেন না। বলা যায় ডালের মধ্যে বেশ অবহেলিত এই ডাল।
গাঢ় খয়েরি কুলত্থ কলাই মূলত দক্ষিণ ভারতে উৎপাদিত হয়৷ দক্ষিণভারতীয় রসম বা সম্বরে প্রচুর ব্যবহৃত হয়৷ আয়ু্র্বেদিক মতে, কুলত্থ কলাইয়ের উপকারিতার শেষ নেই৷ এই ডাল প্রোটিনের খুব ভাল উৎস। সেই সঙ্গে এই ডাল আমাদের মেটাবলিজম ঠিক রাখে। ক্যালোরি একেবারেই নেই আর পেটও অনেকক্ষণ ভর্তি রাখে। ১০০ গ্রাম কুলত্থ ডাল থেকে ২২ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়।
এই কুলত্থ ডালের মধ্যে ক্যালোরি কম থাকার কারণে সকলেই এই ডাল খেতে পারেন। বিশেষত যাঁরা ওজন কমানোর কথা ভাবছেন তাদের জন্য খুবই ভাল হল এই ডাল। এই ডাল খেলে শরীরে পরিশ্রম করার ক্ষমতাও বাড়ে। আর পরিশ্রম করলে ওজন কমবেই।
এছাড়াও কুলত্থ ডাল বিপাকেও দারুণ সাহায্য করে। মেটাবলিজম ঠিক রেখে শরীরের অতিরিক্ত চর্বি পোড়াতে কাজে আসে এই ডাল। মেটাবলিজম যখন ভাল থাকে তখন ওজন ঝরানোও অনেক বেশি সহজ হয়ে যায়। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রমতে এই ডাল কিডনির রোগের অবর্থ্য দাওয়াই। রাতে এক গ্লাস জলে এই ডাল একচামচ ভিজিয়ে রেখে পরদিন তা ছেঁকে খেতে পারলে একাধিক সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এই ডাল ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। ফলে গোড়ালিতে ব্যথাও হয় না।
মরশুমি সর্দি-কাশির সমস্যা থেকেও রেহাই দেয় এই কুলত্থ ডাল। এই সময় যাঁরা সর্দি-কাশির সমস্যায় ভুগছেন তাঁরা রোজ এই কলাইয়ের ডাল খেতে পারলে ভাল। ওবেসিটির সমস্যায় একেবারে মহৌষধ হল এই ডাল।
কী ভাবে খাবেন এই ডাল
১ কাপ ডাল সারারাত ভিজিয়ে রাখুন। পরদিন এই ডাল ভেজানো জল ফেলে দিয়ে তিন কাপ জল দিয়ে প্রেসার কুকারে নুন আর হলুদের গুঁড়ো দিয়ে ৬-৭ টা শিস দিন। একটি প্যানে ঘি গরম করে তাতে জিরে দিয়ে ভেজে নিন। এবার এতে হিং দিয়ে আদা-রসুন বাটা, পেঁয়াজের স্লাইস, টমেটো, লাল লঙ্কার গুঁড়ো, নুন আর ধনে গুঁড়ো দিয়ে ভেজে নিতে হবে। এবার এই মশলা ২-৩ মিনিটের জন্য ঢেকে রাখতে হবে। এবার এর মধ্যে ডাল দিয়ে ৩-৪ মিনিট রান্না করলেই রেডি কুলত্থ ডাল। নামানোর আগে সামান্য ধনে গুঁড়ো ছড়িয়ে দিতে পারেন।