
বিকালবেলায় শালপাতা হাতে ফুচকা খাওয়ার মজাই আলাদা। এই মজা প্রশান্তি এনে দেয় গ্রীষ্মের দিনগুলোয়। গরমের মধ্যে টক তেঁতুল জল দিয়ে ঝাল ফুচকা খেলে মনে হয় সমস্ত ক্লান্তি দূর হয়ে গেছে। যদিও ফুচকা এই জাদুটা করে না। আসলে রহস্য লুকিয়ে ফুচকার তেঁতুল জলে। একমাত্র ফুচকার সঙ্গেই মেলে তেঁতুল জল। এছাড়া বাঙালির হেঁশেলে দুটো কারণে তেঁতুল ব্যবহার করা হয়। এক, তেঁতুলের টক বানাতে এবং বাসন মাজতে। কিন্তু তেঁতুলের স্বাস্থ্য উপকারিতা জানলে রোজ শরবত বানিয়ে খাবেন।
তেঁতুলের উপকারিতা-
টক স্বাদের জন্য এড়িয়ে যাবেন না তেঁতুলকে। তেঁতুলের মধ্যে অ্যাসকরবিক অ্যাসিড রয়েছে, যা অন্যান্য খাবার থেকে আয়রন সংগ্রহ করে এবং দেহের বিভিন্ন কোষে পৌঁছে দেয়। এই উপাদানটি মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়াতেও সাহায্য করে। এছাড়া তেঁতুলের মধ্যে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান রয়েছে। এতে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ে। অর্থাৎ এই গরমে তেঁতুলের শরবত চুমুক দিলে, আপনি রোগের হাত সুরক্ষিত থাকবেন। আবার যাঁরা ডায়াবেটিসের সমস্যায় ভুগছেন, তাঁরাও চুমুক দিতে পারেন তেঁতুল জলে। তেঁতুলের মধ্যে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান রয়েছে, যা রক্তে শর্করার মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
বদহজমে যে ভাবে তেঁতুলের শরবত খাবেন-
গরমে অনেকেই বদহজমের সমস্যায় ভোগেন, সেক্ষেত্রেও দারুণ উপকারী তেঁতুল। তেঁতুলের শরবত খেলে আপনি গরমে আপনি পেট ফোলা, গ্যাস-অম্বলের সমস্যা থেকেও মুক্তি পেয়ে যাবেন। তেঁতুলের মধ্যে ডায়েটরি ফাইবার রয়েছে, যা আপনার হজম স্বাস্থ্যকে ভাল রাখতে সাহায্য করে। বদহজমের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে নুন ও গুড় মিশিয়ে তেঁতুলের জল পান করুন। তার আগে তেঁতুলটাকে ভাল করে জলে ভিজিয়ে রাখুন। তারপর সেটা রগড়ে তার নির্যাস বের করে নিন। এরপর পরিমাণমতো জল, নুন ও গুড় মিশিয়ে পান করুন।
ওজন কমাতে যে ভাবে তেঁতুলের শরবত খাবেন-
তেঁতুলের শরবত পান করলে আপনি ওজনও কমাতে পারবেন। তেঁতুলে হাইড্রক্সিসাইট্রিক অ্যাসিড রয়েছে। এই যৌগটি দেহে চর্বি জমতে দেয় না। অন্যদিকে, এই যৌগটি সেরোটোনিন নিউরোট্রান্সমিটারের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এতে চটজলদি খিদে পায় না। সুতরাং, তেঁতুলের গরম খেলে আপনার ওজন কমতে বাধ্য।
প্রথমে জলে পাকা ভিজিয়ে রাখুন। তারপর ক্বাথ বের করে নিন। এবার ওই দু’চামচ তেঁতুলের ক্বাথ নিন। এতে ভাজা জিরে গুঁড়ো, শুকনো লঙ্কার গুঁড়ো, বিটনুন ও গোলমরিচের গুঁড়ো ভাল করে মিশিয়ে নিন। গন্ধরাজ লেবুর রস মেশাতে পারেন। এবার এতে এক গ্লাস ঠান্ডা জল মিশিয়ে দিন। পুদিনা পাতার কুচি আর বরফ মিশিয়ে পান করুন তেঁতুলের শরবত।